লগইন করুন
সাক্ষাতের সময় পরস্পরকে (গালে) চুম্বন দেওয়া বিধেয় নয়। বরং তা নিষিদ্ধ; যেমন পূর্বের এক হাদীসে তা উল্লেখ করা হয়েছে।
পক্ষান্তরে স্ত্রী ও শিশু-সন্তানকে চুম্বন দেওয়ার কথা স্বতন্ত্র। কারণ তাদেরকে প্রেম ও স্নেহভরে যে কোন সময় দেওয়া বৈধ।
দুই চোখের মাঝে কপাল চুম্বন দেওয়া বৈধ। জাফর হাবশা থেকে ফিরে এলে মহানবী (ﷺ) তাঁর সাথে মুআনাকা করে তাঁর দুই চোখের মাঝে (কপালে) চুম্বন দিয়েছিলেন।[1]
যেমন কিছু শর্তের সাথে আলেম (পিতা-মাতা বা গুরুজন)দের হাতে বুসা (চুম্বন) দেওয়া বৈধ।
(ক) শ্রদ্ধাস্পদ যেন গর্বভরে হাত প্রসারিত না করে।
(খ) শ্রদ্ধাকারীর মনে যেন তাবার্রূক বা বরকত নেওয়ার খেয়াল না থাকে।
(গ) বুসা দেওয়া বা নেওয়াটা যেন কোন প্রথা বা অভ্যাসে পরিণত না হয়।
(ঘ) ওর স্থলে যেন মুসাফাহা পরিত্যক্ত না হয়।[2]
(ঙ) বুসার সময় হাতকে নিয়ে কপালে যেন স্পর্শ না করা হয়।
সতর্কতার বিষয় যে, এ কথা পূর্বোক্ত হাদীসে উল্লেখিত হয়েছে যে, সালামের সময় কোন প্রকার ঝুঁকা বা প্রণত হওয়া বৈধ নয়, বৈধ নয় কারো জন্য কোন প্রকার সিজদাহ।
আব্দুল্লাহ বিন আবী আউফা (রাঃ) বলেন, ‘‘মুআয যখন শাম (দেশ) থেকে ফিরে এলেন তখন রসূল (ﷺ)-কে সিজদা করলেন। আল্লাহর রাসুল (ﷺ) বললেন, ‘‘একি মুআয?’’ মুআয বললেন, ‘আমি শাম গিয়ে দেখলাম, সে দেশের লোকেরা তাদের যাজক ও পাদ্রীগণকে সিজদা করছে। তাই আমি মনে মনে চাইলাম যে, আমরাও আপনার জন্য সিজদা করব।’ তা শুনে তিনি (ﷺ) বললেন ‘‘খবরদার! তা করো না। কারণ, আমি যদি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো জন্য সিজদা করতে কাউকে আদেশ করতাম, তাহলে মহিলাকে আদেশ করতাম, সে যেন তার স্বামীকে সিজদা করে। সেই সত্তার শপথ; যাঁর হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ আছে! মহিলা তার প্রতিপালক (আল্লাহর) হক ততক্ষণ আদায় করতে পারে না; যতক্ষণ পর্যন্ত না সে তার স্বামীর হক (অধিকার) আদায় করেছে। (স্বামীর অধিকার আদায় করলে তবেই আল্লাহর অধিকার আদায় হবে, নচেৎ না।) এমন কি সে যদি (সফরের জন্য) কোন বাহনে আরোহিণী থাকে, আর সেই অবস্থায় স্বামী তার দেহ-মিলন চায় তাহলে স্ত্রীর ‘না’ বলার অধিকার নেই।’’[3]
তদনুরূপ বৈধ নয় অমুসলিমদের প্রণাম; নত হয়ে ঝুঁকে বড়দের পা স্পর্শ করে বুকে-কপালে ঠেকানোর সালাম।
জ্ঞাতব্য যে, সাক্ষাতের পর পৃথক হওয়ার পূর্বে সূরা আস্র পড়া অতঃপর সালাম দিয়ে বিদায় হওয়া উত্তম।[4]
[2]. সিলসিলাহ সহীহাহ ১/৩০২
[3]. ইবনে মাজাহ আল-মাকতাবাতুশ-শামেলা. হা/১৮৫৩, আহমাদ ৪/৩৮১, ইবনে হিববান ৪১৭১, হাকেম ৪/১৭২, বাযযার ১৪৬১, সিলসিলাহ সহীহাহ আল-মাকতাবাতুশ-শামেলা. হা/১২০৩
[4]. ত্বাবারানীর আউসাত্ব, সিলসিলাহ সহীহাহ আল-মাকতাবাতুশ-শামেলা. হা/২৬৪৮