ইসলামী জীবন-ধারা কুরআনের প্রতি আদব আবদুল হামীদ ফাইযী
একাকী থাকলে বা লোক দেখানির ভয় না থাকলে কুরআন সশব্দে পড়ুন

কুরআনের সাথে আপনার কণ্ঠের সুন্দর আওয়াজ লাগিয়ে নিজের মনকে মোহিত করুন। আর মুগ্ধ হন তার অর্থ জেনে। আবেগ এসে এসে আপ্লুত করুক আপনার হৃদয়-মনকে।

অবশ্য পাশে কোন ঘুমন্ত ব্যক্তি থাকলে অথবা লোক প্রদর্শনের আশঙ্কা হলে অথবা আপনার শব্দ-মাধুর্যে কারো ফিতনায় পড়ার ভয় থাকলে কুরআন আস্তে পড়ুন। রাসুল (ﷺ) বলেন, ‘‘সশব্দে কুরআন তিলাওয়াতকারী প্রকাশ্যে দানকারীর মত এবং নিঃশব্দে তিলাওয়াতকারী গোপনে দানকারীর মত।’’

যেমন মসজিদে কুরআন তিলাওয়াত করলে এমন উচ্চস্বরে করবেন না, যাতে নামাযী অথবা অন্য তিলাওয়াতকারীদের ডিষ্টার্ব হয়। যেহেতু মহানবী (ﷺ) এ ব্যাপারে নিষেধ করে বলেন, ‘‘অবশ্যই নামাযী তাঁর প্রভুর কাছে মুনাজাত করে। অতএব তার লক্ষ্য করা উচিত, সে কি দিয়ে তাঁর কাছে মুনাজাত করছে। আর তোমাদের কেউ যেন অপরের কাছে উচ্চস্বরে কুরআন না পড়ে।’’[1]

পক্ষান্তরে কুরআন আস্তে পড়া বলতে মনে মনে পড়া নয়। বরং সওয়াব লাভের শর্ত হল, কুরআনের শব্দ মুখে উচ্চারণ করতে হবে। অতএব নিম্ন ও গুনগুন স্বরে কুরআন তিলাওয়াত করুন। যাতে উভয় দিক বজায় রাখতে পারেন। যেহেতু কুরআন দেখে মনে মনে পড়লে তিলাওয়াতের সওয়াব লাভ হবে না।[2]

কিন্তু মহিলা হলে নিজের স্বামী ও মাহরাম আত্মীয়র সামনে বা তাকে শুনিয়ে সশব্দে ও মিষ্টি সুরে কুরআন তিলাওয়াত করতে পারে। নচেৎ গায়র মাহরাম (যার সাথে কোন কালেও বিবাহ বৈধ এমন) আত্মীয় বা অন্য কারোর সামনে বা তাকে শুনিয়ে এমন তিলাওয়াত করতে পারে না। মহিলার কণ্ঠস্বর ফিতনার জিনিস। আর ফিতনার ছিদ্রপথ বন্ধ করা অবশ্যই জরুরী।[3]

[1]. আহমাদ, ত্বাবারানী, সহীহ আবূ দাঊদ হা/১২০৩, সহীহুল জা’মে হা/১৯৫১

[2]. মাজাল্লাতুল বুহূসিল ইসলামিয়্যাহ ৫১/১৪০

[3]. ফাতাওয়াল লাজনাতিদ দায়েমাহ ৪/১২৭