লগইন করুন
সিজদায় যাওয়ার জন্য প্রথমে হাঁটু রাখবে তারপর হাত রাখবে। কেননা নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন প্রথমে হাত রেখে সিজদায় যেতে। তিনি এরশাদ করেনঃ
إِذَا سَجَدَ أَحَدُكُمْ فَلَا يَبْرُكْ كَمَا يَبْرُكُ الْبَعِيرُ وَلْيَضَعْ يَدَيْهِ قَبْلَ رُكْبَتَيْهِ
“তোমাদের কোন ব্যক্তি যখন সিজদা করবে, সে যেন উটের মত করে না বসে। সে যেন হাঁটু রাখার পূর্বে হাত রাখে।” হাদীছের বাক্য এরূপ।
কিন্তু হাদীছটি সম্পর্কে আমরা আলোচনা করব। হাদীছের প্রথম বাক্যঃ ‘উট যেভাবে বসে সেভাবে যেন না বসে।’ নিষেধাজ্ঞা হচ্ছে সিজদার পদ্ধতিতে। কেননা (الكاف) তাশবীহ্ বা তুলনা বুঝানোর জন্য নেয়া হয়েছে। যে অঙ্গের উপর সিজদা করতে হবে তার নিষেধাজ্ঞা উদ্দেশ্য করা হয়নি। এখানে যদি অঙ্গ উদ্দেশ্য হতো তবে এরূপ বলতে হতো, (উট যে অঙ্গের উপর বসে সেরূপ যেন না বসে।) তখন আমরা বলতে পারি, হাঁটুর উপর ভর দিয়ে বসবে না। কেননা উট হাঁটুর উপর ভর দিয়ে বসে থাকে। কিন্তু নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একথা বলেননিঃ (উট যে অঙ্গের উপর বসে সেরূপ যেন না বসে।) কিন্তু তিনি বলেছেনঃ ‘উট যেভাবে বসে সেভাবে যেন না বসে।’ অতএব এখানে বসার পদ্ধতির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, অঙ্গের উপর নয়।
একারণে ইমাম ইবনুল ক্বাইয়েম দৃঢ়তার সাথে বলেছেন যে, হাদীছের শেষাংশ বর্ণনাকারীর নিকট উল্টা হয়ে গেছে। শেষাংশটা এরূপ বলা হয়েছেঃ وَلْيَضَعْ يَدَيْهِ قَبْلَ رُكْبَتَيْهِ ‘হাঁটু রাখার পূর্বে হাত রাখবে।’ কিন্তু সঠিক বাক্য এরূপ হবেঃ
وَلْيَضَعْ رُكْبَتَيْهِ قَبْلَ يَدَيْهِ
‘হাত রাখার আগে হাঁটু রাখবে।’ কেননা হাঁটুর আগে হাত রাখলেই উটের মত বসা হল। উট বসার সময় প্রথমে তার হাত দু’টো রাখে। উটের বসা প্রত্যক্ষ করলে এটাই প্রমাণিত হবে।
অতএব হাদীছের প্রথমাংশের সাথে শেষাংশের সামঞ্জস্য করতে চাইলে বলতে হবেঃ ‘হাত রাখার আগে হাঁটু রাখবে।’
জনৈক বিদ্বান এব্যাপারে প্রবন্ধ রচনা করেছেন। নাম দিয়েছেনঃ
(فتح المعبود في وضع الركبتين قبل اليدين في السجود)
এতে তিনি খুব সুন্দরভাবে উপকারী কথা লিখেছেন।
সুতরাং সিজদায় যাওয়ার সময় রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নির্দেশিত সুন্নাত হচ্ছেঃ দু’হাত রাখার আগে হাঁটু রাখবে।