লগইন করুন
সত্যিকার সুখী হতে হলে জীবনের সৌন্দর্য ও জাঁকজমককে উপভোগ করা উচিত। এই আমোদ-প্রমোদ কেবলমাত্র ইসলাম প্রদত্ত (ইসলামের) সীমানা দ্বারাই সীমাবদ্ধ। আল্লাহ আমাদের জন্য সুন্দর সুন্দর জান্নাত এজন্য সৃষ্টি করেছেন যে, তিনি নিজেই সুন্দর ও সুন্দরকে ভালবাসেন আর তার নিদর্শনাবলি নিয়ে যাতে আমরা গবেষণা করি এজন্য তার চমৎকার সৃষ্টির মাঝে তার (চমৎকার) নিদর্শনাবলি রয়েছে।
“পৃথিবীতে যা কিছু আছে তার সব কিছু তিনিই তোমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন।” (২-সূরা বাকারাঃ আয়াত-২৯)
সুঘ্ৰাণ, সুস্বাদু খাবার ও বিস্ময়কর বীথি-এসব কিছুই অন্তরে চপলতা, হাসি খুশিভাব ও সুখ বয়ে আনে।
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
حبب إلي من دنياكم النساء والطيب، وجعلت قرَّة عيني في الصلاة
ভাবাৰ্থঃ “তোমাদের দুনিয়া থেকে আমার নিকট সুগন্ধি ও নারীদেরকে প্রিয় করে দেয়া হয়েছে আর সালাতের মাঝে আমার চোখের শান্তি সৃষ্টি করা হয়েছে।”
চরম ও কঠোর আত্ম-সংযম কারো কারো জীবনের চমৎকারিত্বকে মেঘাচ্ছন্ন ও বিকৃত করে দিয়েছে। তারা কুমারের জীবন যাপন করে, তারা ইচ্ছা করেই চরম দরিদ্র জীবন-যাপন করে এবং তারা তাদেরকে খাদ্য থেকে বঞ্চিত করে।
আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
لكنى اصوم وافطر واقوم وافتر، واتزوج النساء واكل اللحم فمن رغب عن سنتى فليس منى
ভাবাৰ্থঃ “কিন্তু আমি কখনও রোযা রাখি আবার কখনও রোযা ভেঙে ফেলি, কখনও আমি রাত জেগে সালাত আদায় করি আবার কখনও বিশ্রাম করি, আমি নারীদেরকে বিবাহ করি এবং মাংসও খাই; অতএব, যে ব্যক্তি আমার রীতি নীতিকে অপছন্দ করবে (বা আমার তরীকা থেকে সরে যাবে) সে আমার দলভুক্ত নয়।”
কিছু কিছু সম্প্রদায়ের অনুসারীদেরকে এমন কিছু কাজ বশ করে রেখেছে যা দেখতে অদ্ভুত ও বিব্রতকর; কেউ কিছু নির্দিষ্ট খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকবে; অন্যেরা হাসি ছেড়ে দিয়েছে এবং অন্যান্য এমনও লোকজন রয়েছে, যারা নিজেদেরকে ঠাণ্ডা পানি পান করা থেকেও বিরত রেখেছে। যেন তারা বুঝে না যে এসব কাজ নিজেদেরকে অত্যাচার করার ও নিজের আত্মার উজ্জ্বলতাকে নিভিয়ে ফেলার শামিল ।
“(হে মুহাম্মদ!) আপনি বলে দিন, আল্লাহ তার বান্দাদের জন্য যে সৌন্দর্য সৃষ্টি করেছেন, তাকে এবং হালাল ও পবিত্র খাদ্যকে কে হারাম করেছে?” (৭-সূরা আল আ’রাফঃ আয়াত-৩২)
আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মধু খেতেন অথচ তিনি সর্বাপেক্ষা ধাৰ্মিক মানুষ ছিলেন। কারণ আল্লাহ মধুকে খাওয়ার জন্যই সৃষ্টি করেছেন।
“তাদের (মৌমাছিদের) পেট থেকে নানা রংয়ের (মধুর) পানীয় বের হয়, তাতে মানব জাতির জন্য আরোগ্য রয়েছে।” (১৬-সূরা আন নিসাঃ আয়াত-৬৯)
আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজন কুমারীকেও বিয়ে করেছিলেন এবং তিনি এমন নারীদেরকেও বিয়ে করেছিলেন, যারা হয়ত বিধবা নয়তো তালাকপ্রাপ্তা ছিল।
“অতএব তোমরা তোমাদের পছন্দসই নারীদের থেকে দুটি, তিনটি অথবা চারটি (করে) বিয়ে কর।” (৪-সূরা আন নিসাঃ আয়াত-৩)
তিনি ধর্মীয় আনন্দের দিনসমূহে এবং অন্যান্য বিশেষ সময়েও উত্তম পোশাকাদি পরিধান করতেন।
خُذُوا زِينَتَكُمْ عِندَ كُلِّ مَسْجِدٍ
“প্রত্যেক সালাতের সময় তোমরা তোমাদের সুন্দর সুন্দর পোশাক পরিধান করো।” (৭-সূরা আল আ'রাফঃ আয়াত-৩১)
যে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে অনুসরণ করা আমাদের অবশ্য কর্তব্য, যিনি সত্য ধর্মসহ প্রেরিত হয়েছেন, তিনি দেহ-মন উভয়েরই হক আদায় করেছেন।