লগইন করুন
হজ ও উমরা করতে ইচ্ছুক ব্যক্তির ইহরাম বাঁধার জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে স্থানসমূহ নির্ধারণ করে দিয়েছেন সেগুলোকে মীকাতে মাকানী বা স্থানবিষয়ক মীকাত বলা হয়। মীকাতে মাকানী পাঁচটি। যথা :
১. যুল-হুলাইফা। মসজিদে নববীর দক্ষিণে ৭ কি. মি. এবং মক্কা থেকে উত্তরে ৪২০ কি.মি. দূরত্বে অবস্থিত, যা আবইয়ারে আলী নামে পরিচিত। এটি মদীনাবাসী এবং এ পথে যারা আসেন তাদের মীকাত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই মীকাত থেকে হজের ইহরাম বেঁধেছেন। বাংলাদেশী হাজীগণও যারা আগে মদীনা শরীফ যাবেন, তারা মদীনার কাজ সমাপ্ত করে মক্কা যাবার পথে এ মীকাত থেকে ইহরাম বাঁধবেন।
২. জুহফা। রাবেগ নামক স্থানের নিকটবর্তী একটি নিশ্চিহ্ন জনপদ, যা মক্কা থেকে ১৮৭ কি.মি. দূরত্বে অবস্থিত। এটি সিরিয়া, মিসর ও মরক্কো অধিবাসীদের মীকাত। জুহফার নিদর্শনাবলি বিলীন হয়ে যাবার কারণে বর্তমানে লোকেরা মক্কা থেকে ২০৪ কি.মি. দূরত্বে অবস্থিত রাবেগ নামক স্থান থেকে ইহরামের নিয়ত করে।
৩. ইয়ালামলাম। যা সা‘দিয়া নামেও পরিচিত। মক্কা থেকে ১২০ কি.মি. দূরত্বে অবস্থিত। এটি ইয়ামানবাসী ও পাক-ভারত-বাংলাদেশসহ প্রাচ্য ও দূর প্রাচ্য থেকে আগমনকারীদের মীকাত।
৪. কারনুল মানাযিল। যা আস-সাইলুল কাবীর নামেও পরিচিত। মক্কা থেকে ৭৫ কি.মি. দূরত্বে অবস্থিত। এটি নজদ ও তায়েফবাসী এবং এ পথে যারা আসেন তাদের মীকাত।
৫. যাতু ইর্ক। বর্তমানে একে দারিবাহ নামেও অভিহিত করা হয়। মক্কা থেকে পূর্ব দিকে ১০০ কি.মি. দূরত্বে অবস্থিত। এটি প্রাচ্যবাসী তথা ইরাক, ইরান এবং এর পরবর্তী দেশগুলোর অধিবাসীদের মীকাত। বর্তমানে এ মীকাতটি পরিত্যক্ত। কারণ ঐ পথে বর্তমানে কোন রাস্তা নেই। স্থল পথে আসা পূর্বাঞ্চলীয় হাজীগণ বর্তমানে সাইলুল কাবীর অথবা যুল-হুলাইফা থেকে ইহরাম বাঁধেন।
ইবন আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত হাদীসে এই মীকাতসমূহের বর্ণনা পাওয়া যায়। তিনি বলেন,
أَنَّ رسول الله صلى الله عليه وسلم وَقَّتَ لأَهْلِ الْمَدِينَةِ ذَا الْحُلَيْفَةِ وَلأَهْلِ الشَّامِ الْجُحْفَةَ وَلأَهْلِ الْيَمَنِ يَلَمْلَمَ وَلأَهْلِ نَجْدٍ قَرْنًا.
‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনাবাসীদের জন্য যুল-হুলাইফা, শামবাসীদের জন্য জুহফা, ইয়ামানবাসীদের জন্য ইয়ালামলাম এবং নজদবাসীদের জন্য কার্নকে মীকাত নির্ধারণ করেছেন।’[1]
অনুরূপভাবে আয়েশা সিদ্দীকা রা. থেকে বর্ণিত,
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَقَّتَ لأَهْلِ الْعِرَاقِ ذَاتَ عِرْقٍ.
‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরাকবাসীদের জন্য যাতু ইর্ককে মীকাত নির্ধারণ করেছেন।’[2]
[2]. আবু দাউদ : ১৭৩৯।