লগইন করুন
আমরা মহান আল্লাহর বিশেষণ সম্পর্কে ইমাম আবূ হানীফা (রাহ) ও প্রসঙ্গত ইমাম মালিক (রাহ) ও ইমাম আহমদ (রাহ)-এর মত জানলাম। বস্ত্তত চার ইমামসহ ‘সালাফ সালিহীন’ বা ইসলামের প্রথম চার প্রজন্মের সকল বুজুর্গ একই আকীদা অনুসরণ করতেন। তাঁরা সকলেই কুরআন ও সহীহ হাদীসে বর্ণিত বিশেষণগুলোকে সরল অর্থে বিশ্বাস করতে এবং ব্যাখ্যা ও তুলনা বর্জন করতে নির্দেশ দিতেন। এ প্রসঙ্গে ইমাম বুখারী প্রথম হিজরী শতকের দুজন প্রসিদ্ধ তাবিয়ীর মত উদ্ধৃত করেছেন। তিনি বলেন:
قال أبو العالية (استوى إلى السماء) ارتفع.. وقال مجاهد (استوى) علا (على العرش)
‘‘(প্রসিদ্ধ তাবিয়ী মুহাদ্দিস ও ফকীহ রুফাই ইবন মিহরান) আবুল আলিয়া (৯০ হি) বলেন: ‘আসমানের প্রতি ইসতিওয়া করেছেন অর্থ: আসমানের উপরে থেকেছেন।’ (অন্য প্রসিদ্ধ তাবিয়ী মুফাস্সির ও ফকীহ ইমাম) মুজাহিদ (১০৪ হি) বলেন: ‘আরশের উপর ‘ইসতিওয়া’ করেছেন অর্থ আরশের ঊর্ধ্বে থেকেছেন।’’[1]
সায়িদ নাইসাপূরী ইমাম আবূ হানীফার আকীদা বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেন:
سئل محمد بن إسحاق بن خزيْمة عن الكلام في الأسماء والصفات، فقال: بدعة ابتدعوها، ولم يكن أئمةُ المسلمين من الصحابة والتابعين وأئمة الدين وأرباب المذاهب، مثلُ مالكِ بن أنس، وسفيان الثوري، والأوزاعي، وأبو حنيفة، وأبو يوسف، ومحمد بن الحسن، والشافعي، وأحمد بن حنبل، وإسحاق الحنظلي، ويحيى بن يحيى، وعبد الله بن المبارك، ومحمد بن يحيىরাঃ أي لم يكن يتكلمون في ذلك، وينهون عن الخوض فيه، والنظرِ فى كتبهم بحال واللهَ أسأل أن يعيذَنا من مضلات الفتن ما ظهر منها وما بطن.
‘‘ইমাম মুহাম্মাদ ইবন ইসহাক ইবন খুযাইমা (২২৩-৩১১ হি)-কে মহান আল্লাহর নাম ও বিশেষণ বিষয়ক কথাবার্তা বা ইলমুল কালাম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়। তিনি বলেন: এটি একটি বিদআত যা তারা উদ্ভাবন করেছে। মুসলিমদের ইমামগণ, অর্থাৎ সাহাবীগণ, তাবিয়ীগণ, প্রসিদ্ধ মাযহাবগুলোর ইমামগণ, যেমন মালিক ইবন আনাস, সুফিয়ান সাওরী, আওযায়ী, আবূ হানীফা, আবূ ইউসূফ, মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান, শাফিয়ী, আহমদ ইবন হাম্বাল, ইসহাক ইবন রাহওয়াইহি হানযালী, ইয়াহইয়া ইবন ইয়াহইয়া, আব্দুল্লাহ্ ইবনুল মুবারাক, মুহাম্মাদ ইবন ইয়াহইয়া যুহলী- রাদিআল্লাহু আনহুম- কেউই এ বিষয়ে কথা বলতেন না। তাঁরা সকলেই এ বিষয়ে আলোচনা করতে নিষেধ করতেন এবং যারা এ সকল বিষয়ে কথা বলেন তাদের বইপত্র পড়তে নিষেধ করতেন। আমি মহান আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই, তিনি যেন আমাদেরকে প্রকাশ্য ও গোপন বিভ্রান্তিকর ফিতনা থেকে রক্ষা করেন।’’[2]
[2] সায়িদ নাইসাপূরী, আল-ই’তিকাদ, পৃ. ১৭৬-১৭৭।