লগইন করুন
ঈমানের অন্যতম রুকন আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত গ্রন্থসমূহে বিশ্বাস করা। মুমিন সুদৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে বিশ্বাস করেন যে, আল্লাহ যুগে যুগে নবী-রাসূলদের নিকট ওহীর মাধ্যমে ‘কিতাব’ প্রেরণ করেছেন, যেগুলো আল্লাহর বাণী, আল্লাহর পক্ষ থেকে সত্য হেদায়াত এবং মানবজাতির পথনির্দেশক নূর। তবে সেগুলো বিকৃত বা বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। তাই আল্লাহ সর্বশেষ কিতাব ‘আল-কুরআন’ নাযিল করেছেন পূর্ববর্তী সকল গ্রন্থের সত্যতা ঘোষণা করতে, সেগুলোর স্থান পূরণ করতে এবং পূর্ববতী সকল কিতাবের নিয়ন্ত্রক হিসেবে। এ সর্বশেষ কিতাব কুরআনের মধ্যেই সকল কিতাবের নির্যাস ও মানব জাতির মুক্তির পথ রয়েছে।
বিশেষত ইহূদী ও খৃস্টানদেরকে প্রদত্ত তিনটি গ্রন্থের বিকৃতির কথা কুরআন মাজীদে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। মহান আল্লাহ মূসা (আঃ)-কে তাওরাত, দাঊদ (আঃ)-কে যাবূর ও ঈসা (আঃ)-কে ইঞ্জিল গ্রন্থ প্রদান করেন। তাঁদের পরে তাঁদের অনুসারীরা এ গ্রন্থগুলো বিভিন্নভাবে বিকৃত করেন। কুরআনে তিন প্রকারের বিকৃতির কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে: (১) ওহীর মাধ্যমে পাওয়া কিছু গ্রন্থ বা বাণী একেবারে ভুলে যাওয়া বা হারিয়ে ফেলা, (২) পরিবর্তন, সংযোজন বা বিয়োজন জাতীয় বিকৃতি এবং (৩) জাল পুস্তক, আয়াত বা সূরা লিখে তা ওহীর নামে চালানো।[1]
দেড় হাজার বৎসর পূর্বে কুরআন এ সকল বিকৃতির কথা ঘোষণা করলেও বিগত প্রায় এক হাজার বৎসর যাবৎ ইহূদী-খৃস্টানগণ দাবি করতেন যে, তাদের নিকট বিদ্যমান তাওরাত, যাবূর, ইনজীল ইত্যাদি গ্রন্থ সবই আক্ষরিকভাবে বিশুদ্ধ। কিন্তু গত কয়েকশত বৎসরের গবেষণার মাধ্যমে পাশ্চাত্যের ইহূদী-খৃস্টান গবেষকগণই প্রমাণ করেছেন যে, বাইবেলের অনেক পুস্তিকা হারিয়ে গিয়েছে, হাজার হাজার স্থানে পরিবর্তন, সংযোজন বা বিয়োজনের মাধ্যমে বিকৃতি করা হয়েছে এবং অনেক জাল পুস্তক এর মধ্যে সংযোজিত হয়েছে। তাদের এ আবিষ্কার কুরআনের অলৌকিক সত্যতার আরেকটি প্রমাণ।[2]
[2] বিস্তারিত দেখুন: ইসলামী আকীদা, পৃ. ২৬৩-২৭০। আরো দেখুন আল্লামা রাহমাতুল্লাহ কিরানবী, ইযহারুল হক্ক, ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর, কিতাবুল মোকাদ্দস, ইঞ্জিল শরীফ ও ঈসায়ী ধর্ম; তাওরাত, যাবূর, ইঞ্জিল ও কুরআনের আলোকে কুরবানি ও জাবীহুল্লাহ।