লগইন করুন
আফগানিস্তান, সোমালিয়া বা ইরাকের মত ভৌগলিক, সামরিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে বাংলাদেশের। কাজেই সাম্রাজ্যবাদী, সম্প্রসারণবাদী ও আন্তর্জাতিক বেনিয়া-চক্র যে কোনো মূল্যে এদেশের উপর তাদের আধিপত্য বিস্তার করতে চেষ্টা করবেন। কখনো তারা জঙ্গি তৈরি করবেন এবং কখনো জঙ্গিবাদের অযুহাতে ধার্মিক মানুষদের হয়রানি, অত্যাচার, ইসলাম প্রচারকদের কণ্ঠরোধ, ইসলামী শিক্ষা সংকোচন ইত্যাদির মাধ্যমে জঙ্গিবাদকে উস্কে দিয়ে দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করে সরকার ও প্রশাসনকে তাদের সহায়তা গ্রহণে বাধ্য করবেন।
এ ক্ষেত্রে আমাদের মত ক্ষুদ্র মানুষদের আল্লাহর কাছে ক্রন্দন করা ছাড়া তেমন কিছুই করার নেই। এ ‘‘ক্রন্দন’’-কে অবহেলা করবেন না। আমাদের সকলেরই দায়িত্ব নিজের ব্যক্তিগত কষ্টে-বিপদে যেভাবে হৃদয়ের পরিপূর্ণ আবেগ দিয়ে আল্লাহর কাছে কাঁদি, তেমনি পরিপূর্ণ আবেগ ও বেদনা নিয়ে দল-মত নির্বিশেষে উম্মাতের জন্য আল্লাহর কাছে স-ক্রন্দন দুআ করা। ঈমানের ন্যূনতম দাবী এ ক্রন্দন ও দুআ।
এখন প্রয়োজন এমন কিছু আল্লাহ-ওয়ালা আলিম ও ‘দায়ী’র যারা একদিকে সরকার, প্রশাসন ও দায়িত্বশীলদেরকে পরিপূর্ণ আন্তরিকতা ও ভালবাসার সাথে গঠনমূলক পরামর্শ দিবেন এবং তাদের জন্য দুআ করবেন। অপরদিকে দীনের দাওয়াতে আগ্রহী ও সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী ধার্মিক মানুষদেরকে হটকারিতা, উগ্রতা ও হতাশা পরিত্যাগ করে কুরআন-সুন্নাহর নির্দেশ অনুসারে ধৈর্য, প্রজ্ঞা, ‘সহিংসতার পরিবর্তে অহিংসতা’ ও ‘খারাপের মুকাবিলায় ভাল আচরণ’ দ্বারা দাওয়াতের কাজ অব্যাহত রাখার অনুপ্রেরণা দিবেন। তাঁরা হটকারিতার মাধ্যমে দাওয়াতকে সহিংসতায় লিপ্ত করার তাত্ত্বিক বিভ্রান্তিগুলি মুমিনদের জন্য প্রকাশ করবেন। তাঁদের ধার্মিকতা, ইখলাস, ইলম ও আমল মুমিনদেরকে তাদের পরামর্শ গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করবে।
এরূপ আল্লাহ-ওয়ালা আলিম ও দায়ীদের অভাব আমরা অনুভব করি। অন্তত সমাজের মূলধারার আলিম-উলামা, চিন্তাবিদ ও পীর-মাশাইখ কিছুটা ঐক্যবদ্ধ হলে তাঁরা সমবেতভাবে এরূপ দায়িত্ব পালনে অধিকতর সক্ষম হতেন। তাঁরা যদি সুন্নাতের আলোকে কিছু মতভেদ মেনে নিয়ে ‘‘জামা‘আত’’ বা ঐক্য ও পারস্পরিক ভালবাসা প্রতিষ্ঠা করতেন এবং উম্মাতে মুহাম্মাদীর প্রতি প্রগাঢ় ভালবাসা নিয়ে সকলে মিলে জঙ্গিবাদের মত বিষয়ে মতবিনিময় করতে পারতেন তাহলে দীনের নামে সকল বিভ্রান্তি ও উগ্রতা সহজেই দূরীভূত করা সম্ভব হতো। কিন্তু বাহ্যত তা সম্ভব নয়। যদিও কুরআন-হাদীসে বারংবার ঐক্য ও ভালবাসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তবুও এ নির্দেশ প্রতিষ্ঠার সুযোগ বর্তমানে আমাদের আছে বলে মনে হচ্ছে না। ইন্না লিল¬াহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন!