লগইন করুন
মাতা-পিতার অবাধ্য হওয়া একটি গুরুতর অপরাধ।
আব্দুল্লাহ্ বিন্ ‘আমর বিন্ ‘আস্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
الْكَبَائِرُ: الإِشْرَاكُ بِاللهِ، وَالْيَمِيْنُ الْغُمُوْسُ، وَعُقُوْقُ الْوَالِدَيْنِ، وَقَتْلُ النَّفْسِ.
‘‘কবীরা গুনাহ্গুলো হচ্ছে, আল্লাহ্ তা‘আলার সাথে কাউকে শরীক করা, ইচ্ছাকৃত মিথ্যে কসম খাওয়া, মাতা-পিতার অবাধ্য হওয়া এবং অবৈধভাবে কাউকে হত্যা করা’’। (বুখারী ৬৮৭০)
মুগীরা বিন্ শু’বাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
إِنَّ اللهَ حَرَّمَ عَلَيْكُمْ عُقُوْقَ الْأُمَّهَاتِ، وَوَأْدَ الْبَنَاتِ، وَمَنْعًا وَهَاتِ، وَكَرِهَ لَكُمْ قِيْلَ وَقَالَ، وَكَثْرَةَ السُّؤَالِ، وَإِضَاعَةَ الْمَالِ.
‘‘নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তা‘আলা তোমাদের উপর হারাম করে দিয়েছেন মায়ের অবাধ্যতা, জীবিত মেয়েকে দাফন করা, কারোর প্রাপ্য না দেয়া ও নিজের পাওনা নয় এমন বস্ত্ত কারোর নিকট চাওয়া। তেমনিভাবে আল্লাহ্ তা‘আলা তোমাদের জন্য অপছন্দ করেন যে কোন শুনা কথা বলা, বেশি বেশি চাওয়া ও সম্পদ বিনষ্ট করা’’। (বুখারী ২৪০৮, ৫৯৭৫)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন:
لَا يَدْخُلُ الْـجَنَّةَ مَنَّانٌ وَلَا عَاقٌّ وَلَا مُدْمِنُ خَمَرٍ.
‘‘তিন ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবেনা: যে ব্যক্তি কাউকে অনুগ্রহ করে পুনরায় খোঁটা দেয়, মাতা-পিতার অবাধ্য এবং মদপানে অভ্যস্ত ব্যক্তি’’।(জা’মিউস্ সাগীর : ৬/২২৮)
তিনি আরো বলেন:
ثَلَاثَةٌ قَدْ حَرَّمَ اللهُ عَلَيْهِمُ الْـجَنَّةَ: الْعَاقُّ لِوَالِدَيْهِ..
‘‘তিন ব্যক্তির উপর আল্লাহ্ তা‘আলা জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন। তম্মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মাতা-পিতার অবাধ্য ব্যক্তি’’। (জা’মিউস্ সাগীর : ৩/৬৯)
তিনি আরো বলেন:
لَا يَدْخُلُ حَائِطَ الْقُدْسِ سِكِّيْرٌ وَلَا عَاقٌّ وَلَا مَنَّانٌ.
‘‘তিন ব্যক্তি বাইতুল্ মাক্বদিসে প্রবেশ করতে পারবেনা: অভ্যস্ত মদ্যপায়ী, মাতা-পিতার অবাধ্য এবং যে ব্যক্তি কাউকে অনুগ্রহ করে পুনরায় খোঁটা দেয়’’। (সিল্সিলাতুল্ আহা’দীসিস্ সাহীহাহ্ : ২/২৮৯)
মাতা-পিতার অবাধ্যতার সরূপ:
মাতা-পিতার অবাধ্যতা দু’ ধরনের: হারাম ও মাকরূহ্।
ক. হারাম অবাধ্যতার দৃষ্টান্ত। যেমন:
মাতা-পিতা সন্তানের উপর কোন ব্যাপারে কসম খেয়েছেন। অথচ সে তাদের উক্ত কসমটি রক্ষা করেনি।
মাতা-পিতা সন্তানের নিকট প্রয়োজনীয় কিছু চেয়েছেন। অথচ সে তাদের উক্ত চাহিদা পূরণ করেনি।
মাতা-পিতা সন্তানের নিকট কোন কিছু আশা করেছেন। অথচ সে তাদের উক্ত আশা ভঙ্গ করেছে।
মাতা-পিতা সন্তানকে কোন কাজের আদেশ করেছেন। অথচ সে তাদের উক্ত আদেশটি মান্য করেনি।
মাতা-পিতাকে মেরে, গালি দিয়ে বা কারোর নিকট তাদের গীবত বা দোষ চর্চা করে তাদেরকে কষ্ট দেয়া সর্বোচ্চ নাফরমানি। তবে গুনাহ্’র কাজে তাদের কোন আনুগত্য করা যাবে না।
আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:
«وَإِنْ جَاهَدَاكَ عَلَى أَنْ تُشْرِكَ بِيْ مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ فَلَا تُطِعْهُمَا، وَصَاحِبْهُمَا فِيْ الدُّنْيَا مَعْرُوْفًا، وَاتَّبِعْ سَبِيْلَ مَنْ أَنَابَ إِلَيَّ، ثُمَّ إِلَيَّ مَرْجِعُكُمْ فَأُنَبِّئُكُمْ بِمَا كُنْتُمْ تَعْمَلُوْنَ»
‘‘তোমার মাতা-পিতা যদি তোমাকে আমার সাথে এমন বস্ত্ত বা ব্যক্তিকে শরীক করতে পীড়াপীড়ি করে যে ব্যাপারে তোমার কোন জ্ঞান নেই তথা কুর‘আন ও হাদীসের কোন সাপোর্ট নেই তাহলে তুমি এ ব্যাপারে তাদের কোন আনুগত্য করবেনা। তবে তুমি এতদ্সত্ত্বেও দুনিয়াতে তাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করবে এবং সর্বদা তুমি আমি (আল্লাহ্) অভিমুখী মানুষের পথ অনুসরণ করবে। কারণ, পরিশেষে তোমাদের সকলকে আমার নিকটই প্রত্যাবর্তন করতে হবে। তখন আমি তোমাদের কর্ম সম্পর্কে তোমাদেরকে অবশ্যই অবগত করবো’’। (লুক্বমান : ১৫)
খ. মাকরূহ্ অবাধ্যতার দৃষ্টান্ত। যেমন:
আপনার পিতা খাবার শেষ করেছেন। এখন তিনি হাত ধুতে চাচ্ছেন এবং তিনি স্বয়ং উঠে গিয়ে হাতও ধুয়েছেন। আপনি শুধু তা দেখেই আছেন। কিছুই করেননি। এতে আপনি পিতার অবাধ্য হননি।
তবে কাজটি আরো ভালো হতো যদি আপনি আপনার কাজের ছেলেকে হাত ধোয়ার পানিটুকু আপনার পিতাকে এগিয়ে দিতে বলতেন।
কাজটি আরো ভালো হতো যদি আপনি স্বয়ং উঠে গিয়ে হাত ধোয়ার পানিটুকু আপনার পিতাকে এগিয়ে দিতেন।
তবে আপনার পিতা যদি দাঁড়াতে না পারেন অথবা দাঁড়াতে কষ্ট হয় অথবা আপনার পিতা স্বয়ং আপনাকেই পানি উপস্থিত করতে আদেশ করলেন এবং আপনি আদেশটি পালন করলেন না তখন কিন্তু আপনি আপনার পিতার অবাধ্য বলে বিবেচিত হবেন।
অবাধ্যতার আরো কিছু দৃষ্টান্ত:
১. মাতা-পিতার নিকট আপনি কখনো বসছেন না। তাদের ঘনিষ্ঠ হচ্ছেন না। পারিবারিক সমস্যা নিয়ে তাদের সঙ্গে কোন আলোচনাই করছেন না এবং তাদের প্রয়োজন সম্পর্কে কিছু জানতেও চাচ্ছেন না।
২. তারা আপনার যে যে ব্যাপারে পরামর্শ দিতে পারেন সে ব্যাপারে আপনি তাদের নিকট কোন পরামর্শও চাচ্ছেন না। কারণ, কিছু কিছু ব্যাপার তো এমনো থাকতে পারে যে তারা সে ব্যাপারে আপনাকে কোন পরামর্শ দেয়ারই যোগ্যতা রাখেন না। তখনো কিন্তু আপনি সে ব্যাপারে বিজ্ঞ লোকের পরামর্শ তাদের সম্মুখে উপস্থাপন করে তাদের মতামত চাইতে পারেন। তখন অবশ্যই তারা এ পরামর্শ সমর্থন করবেন এবং আপনার উপর সন্তুষ্ট হবেন।
৩. কোথাও যাওয়ার সময় আপনি তাদের অনুমতি চাচ্ছেন না অথবা ঘর থেকে বেরনোর সময় আপনি তাদেরকে জানিয়ে বেরুচ্ছেন না।
৪. সহজভাবে তাদের যে কোন খিদ্মত আঞ্জাম দেয়ার আপনার কোন সদিচ্ছাই নেই। অথচ এ ব্যাপারে তাদের নিকট অপারগতা প্রকাশ করতে আপনি খুবই তৎপর। আপনি কখনো এ কথা জানতে চাচ্ছেন না যে, তারা আমার এ অপারগতার কথা বিশ্বাস করছেন কি? নাকি আপনার অপারগতার কথা তারা প্রত্যাখ্যানই করছেন। নাকি তারা শুধু আপনার কথা শুনেই চুপ থাকলেন। আপনার উপর অসন্তুষ্টির কারণে পরিষ্কার কিছু বলছেননা। কারণ, আপনি মনে করছেন, তারা আমার অপারগতার কথা শুনেই আমার উপর সন্তুষ্ট হয়ে যাবেন। অথচ ব্যাপারটি অন্য রকমও হতে পারে।
৫. আপনার প্রয়োজনকেই আপনার মাতা-পিতার প্রয়োজনের উপর অগ্রাধিকার দিলেন। যেমন: আপনাকে তারা কোন কাজের আদেশ করলেন। উত্তরে আপনি বললেন: এখন আমার একটুও সময় নেই। সময় পেলেই তা করে ফেলবো।
৬. নিজকে আপনার মাতা-পিতার চাইতেও বড় মনে করলেন। তা সাধারণত হয়ে থাকে যখন আপনি সামাজিক কোন সম্মানের অধিকারী হয়ে থাকেন অথবা মাতা-পিতা অপেক্ষা আপনি বেশি নেককার। যেমন: আপনি নামায পড়ছেন অথচ আপনার মাতা-পিতা নামায পড়ছেন না। তখনই আপনার পক্ষ থেকে তাদের প্রতি অবাধ্যতা পাওয়া যাওয়া খুবই সহজ।
৭. মাতা-পিতার মধ্যে কোন অপরাধ অবলোকন করে আপনি তাদের অবাধ্য হলেন। যেমন: আপনার মাতা-পিতা খুব কঠিন মেজাজের, অত্যন্ত কৃপণ, গোঁয়ার বা একগুঁয়ে। কিন্তু আপনাকে মনে রাখতে হবে যে, শির্ক চাইতে আর বড় অপরাধ দুনিয়াতে নেই। যখন আপনার মাতা-পিতা আল্লাহ্ তা‘আলার সাথে আপনাকে কোন বস্ত্ত বা ব্যক্তিকে শরীক করতে বললেও আল্লাহ্ তা‘আলা আপনার মাতা-পিতার সাথে দুনিয়াতে ভালো ব্যবহার করতে আদেশ করেছেন তখন এ ছাড়া অন্য কোন অপরাধের কারণে তাদের অবাধ্য হওয়া মারাত্মক অপরাধই বটে।
৮. দলীল-প্রমাণ উপস্থাপন করে আপনি তাদের সঙ্গে কোন ব্যাপারে তর্ক ধরলেন। যেমনিভাবে আপনি তর্ক ধরে থাকেন আপনার সাথী-সঙ্গীদের সাথে। কারণ, আপনি তাদের সঙ্গে কোন দলীল-প্রমাণ উপস্থাপন করতে আদিষ্ট নন। বরং আপনি সর্বদা তাদের সঙ্গে নম্রতা দেখাতে একান্তভাবে বাধ্য।
আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:
«وَقَضَى رَبُّكَ أَلاَّ تَعْبُدُوْا إِلاَّ إِيَّاهُ، وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا، إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِنْدَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُلْ لَـهُمَا أُفٍّ، وَلَا تَنْهَرْهُمَا، وَقُلْ لَـهُمَا قَوْلًا كَرِيْمًا، وَاخْفِضْ لَـهُمَا جَنَاحَ الذُّلِّ مِنَ الرَّحْمَةِ، وَقُلْ رَّبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِيْ صَغِيْرًا»
‘‘আপনার প্রভু এ বলে নির্দেশ দিচ্ছেন যে, তোমরা তিনি ছাড়া অন্য কারোর ইবাদাত করবেনা এবং মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করবে। তাদের একজন বা উভয়জন তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হলে তুমি তাদেরকে বিরক্তি সূচক কোন শব্দ বলবেনা এবং তাদেরকে ভৎর্সনাও করবেনা। বরং তাদের সাথে সম্মান সূচক নম্র কথা বলবে। দয়াপরবশ হয়ে তাদের প্রতি সর্বদা বিনয়ী থাকবে এবং সর্বদা তাদের জন্য এ দো‘আ করবে যে, হে আমার প্রভু! আপনি তাদের প্রতি দয়া করুন যেমনিভাবে শৈশবে তারা আমার প্রতি অশেষ দয়া করে আমাকে লালন-পালন করেছেন’’। (ইস্রা/বানী ইসরাঈল্ : ২৩-২৪)
তবে তারা আপনাকে কোন গুনাহ্’র আদেশ করলে আপনি তাদেরকে কুর‘আন ও হাদীসের বাণী শুনিয়ে সে আদেশ থেকে বিরত রাখবেন।
৯. মাতা-পিতার পারস্পরিক ঝগড়া দেখে আপনি তাদের যে কারোর পক্ষ নিয়ে অন্যজনকে কোন অপবাদ, কটু কথা বা বিরক্তি সূচক শব্দ বললেন। এমনকি তার অবাধ্য হলেন। যেমন: আপনি আপনার মাতা-পিতার মধ্যে কোন ঝগড়া হতে দেখলেন এবং আপনি বুঝতেও পারলেন যে, আপনার পিতা এ ব্যাপারে সত্যিকারই দোষী। সুতরাং আপনি এ পরিবেশে আপনার পিতাকে কোন গাল-মন্দ করতে পারেননা এবং তার সাথে কোন কঠোরতাও দেখাতে পারেননা। যাতে আপনি তার অবাধ্য বলে বিবেচিত হবেন। বরং আপনার কাজ হবে, সূক্ষ্মভাবে তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দেয়া। তবে খেয়াল রাখবেন, মীমাংসা করতে গিয়ে আপনার পিতাকে আপনি কোন বিশ্রী শব্দ বলবেন না। যাতে তিনি আপনাকে আপনার মায়ের পক্ষপাতী বলে মনে না করেন। বরং আপনি আপনার পিতার প্রতি ভালোবাসা দেখাবেন এবং তাদের মধ্যে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করবেন। এরপরও আপনার পিতা হঠকারিতা দেখালে আপনি তাকে কটু বাক্য শুনাতে পারেন না এবং তার প্রতি কঠোরও হতে পারেন না।
১০. আপনি বিবাহ করার পর আপনার মাতা-পিতা থেকে ভিন্ন হয়ে গেলেন। আপনি মনে করছেন, আপনার মাতা-পিতার সঙ্গে আপনার মানসিকতার কোন মিল নেই। সুতরাং দূরে থাকাই ভালো অথবা আপনার স্ত্রী আপনাকে ভিন্ন হতে বাধ্য করেছে অথবা আপনি আপনার পরিবারের উপর একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করতে চান অথবা আপনি মনে করছেন, ঘরে এমন লোক রয়েছে যারা তাদের খিদমতের জন্য যথেষ্ট অথবা আপনি একাকী ভালো খেতে ও ভালো পরতে চান। কারণ, আপনার এমন সঙ্গতি নেই যে, আপনি আপনার মাতা-পিতাকে নিয়ে ভালো খাবেন ও ভালো পরবেন।
আপনার ধারণাগুলো সঠিক কিনা সে বিষয়ে আলোচনা না করে আমি উক্ত ব্যাপারে আপনাকে একটি মৌলিক ধারণা দিতে চাই। তা হচ্ছে এই যে, এ ব্যাপারে আপনাকে নিম্নোক্ত কয়েকটি বিষয়ের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে:
ক. তাদের থেকে ভিন্ন হওয়ার জন্য সর্বপ্রথম আপনাকে তাদের অনুমতি চাইতে হবে। তারা আপনাকে ভিন্ন হওয়ার মৌখিক অনুমতি দিলেও আপনাকে এ ব্যাপারে অবশ্যই নিশ্চিত হতে হবে যে, তারা অনুমতিটুকু সুস্পষ্ট ভাষায় ও সন্তুষ্ট চিত্তে দিচ্ছেন কিনা? নাকি এমনিতেই দিচ্ছেন।
খ. তাদের খিদমতের জন্য পছন্দসই যথেষ্ট লোক থাকতে হবে। সুতরাং ঘরের মধ্যে যদি তাদের খিদমতের জন্য কোন লোক না থাকে অথবা তারা আপনার ও আপনার স্ত্রীর খিদমতের মুখাপেক্ষী হন তাহলে এমতাবস্থায় আপনার জন্য ভিন্ন হওয়া জায়িয হবে না। যদিও তারা আপনাকে এ ব্যাপারে মৌখিক অনুমতি দিয়ে থাকে। কারণ, সে অনুমতি কখনো সন্তুষ্ট চিত্তে হবে না।
গ. তাদেরকে সর্বদা প্রয়োজনীয় খরচাদি দিতে হবে। আপনি যেখানেই থাকুননা কেন।
১১. তারা আপনাকে কোন সংবাদ জিজ্ঞাসা করছেন। অথচ আপনি এ ব্যাপারে তাদেরকে কোন উত্তরই দিচ্ছেন না। যেমন: আপনি কোন ব্যাপারে খুশি হয়েছেন অথবা নাখোশ। তখন এ ব্যাপারে আপনার মাতা-পিতা জানতে চাইলেন। অথচ আপনি কিছুই বলছেননা।
১২. আপনি কারোর মাতা-পিতাকে গালি দিলেন। অতঃপর সেও আপনার মাতা-পিতাকে গালি দিয়েছে।
আব্দুল্লাহ্ বিন্ ‘আমর (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
إِنَّ مِنْ أَكْبَرِ الْكَبَائِرِ أَنْ يَلْعَنَ الرَّجُلُ وَالِدَيْهِ، قِيْلَ: يَا رَسُوْلَ اللهِ! وَكَيْفَ يَلْعَنُ الرَّجُلُ وَالِدَيْهِ؟ قَالَ: يَسُبُّ الرَّجُلُ أَبَا الرَّجُلِ فَيَسُبُّ أَبَاهُ، وَيَسُبُّ أُمَّهُ فَيَسُبُّ أُمَّهُ.
‘‘সর্ববৃহৎ অপরাধ হচ্ছে নিজ মাতা-পিতাকে লা’নত করা। জিজ্ঞাসা করা হলো, হে আল্লাহ্’র রাসূল! মানুষ কিভাবে নিজ মাতা-পিতাকে লা’নত করতে পারে? তিনি বললেন: তা এভাবেই সম্ভব যে, সে কারোর মাতা-পিতাকে গালি দিলো। অতঃপর সে ব্যক্তি এর মাতা-পিতাকে গালি দিলো’’। (বুখারী ৫৯৭৩; মুসলিম ৯০)