লগইন করুন
২০. কিছু কিছু গুনাহ্’র উপর আল্লাহ্ তা‘আলা ও তদীয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং ফিরিশ্তাদের লা’নত রয়েছে। সুতরাং এ জাতীয় গুনাহ্গারের উপর উক্ত লা’নত পতিত হবে অবশ্যই। আর যে গুনাহ্গুলো এগুলোর চেয়েও বড় উহার উপর তো তাঁদের লা’নত আছেই।
আব্দুল্লাহ্ বিন্ মাস্ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
لَعَنَ اللهُ الْوَاشِمَاتِ وَالْـمُوْتَشِمَاتِ وَالْـمُتَنَمِّصَاتِ وَالْـمُتَفَلِّجَاتِ لِلْحُسْـنِ، الْـمُغَيِّرَاتِ خَلْقَ اللهِ.
‘‘আল্লাহ্ তা‘আলা লা’নত করেন সে মহিলাকে যে অপরের চেহারা দাগে এবং যে অপরকে দিয়ে নিজ চেহারা দাগ করায়, যার চেহারার কেশ উঠানো হয় এবং যে মহিলা সৌন্দর্যের জন্য নিজ দাঁতের মাঝে ফাঁক সৃষ্টি করে; আল্লাহ্ প্রদত্ত গঠন পরিবর্তন করে’’।
(বুখারী ৪৮৮৬, ৫৯৩১, ৫৯৪৩, ৫৯৪৮;; মুসলিম ২১২৫)
আবূ হুরাইরাহ্, আয়েশা, আস্মা’ ও ‘আব্দুল্লাহ্ বিন্ ’উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
لَعَنَ اللهُ الْوَاصِلَةَ وَالْـمُسْتَوْصِلَةَ.
‘‘আল্লাহ্ তা‘আলা লা’নত করেন নিজের চুলের সাথে অন্য চুল সংযুক্তকারিণী মহিলাকে এবং যার জন্য তা করা হয়েছে তাকেও’’।
(বুখারী ৫৯৩৩, ৫৯৩৪, ৫৯৩৭, ৫৯৪২; মুসলিম ২১২২, ২১২৩, ২১২৪)
জাবির ও ‘আব্দুল্লাহ্ বিন্ মাস্ঊদ্ (রাযিয়াল্লাহু আন্হুমা) থেকে বর্ণিত তাঁরা বলেন:
لَعَنَ رَسُوْلُ اللهِ آكِلَ الرِّبَا وَمُؤْكِلَهُ وَكَاتِبَهُ وَشَاهِدَيْهِ، وَقَالَ: هُمْ سَوَاءٌ.
‘‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লা’নত তথা অভিসম্পাত করেছেন সুদের সাথে সংশ্লিষ্ট চার ব্যক্তিকে। তারা হচ্ছে: সুদখোর, সুদদাতা, সুদের লেখক ও সুদের সাক্ষীদ্বয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন: তারা সবাই সমপর্যায়েরই দোষী’’।
(মুসলিম ১৫৯৭, ১৫৯৮; তিরমিযী ১২০৬; আবূ দাউদ ৩৩৩৩; ইব্নু মাজাহ্ ২৩০৭; ইব্নু হিববান ৫০২৫; আহমাদ ৬৩৫, ৬৬০, ৮৪৪, ১১২০, ১২৮৮, ১৩৬৪, ৩৭২৫, ৩৭৩৭, ৩৮০৯, ৪৩২৭, ১৪৩০২)
‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
لَعَنَ اللهُ الْـمُحَلِّلَ وَالْـمُحَلَّلَ لَهُ.
‘‘আল্লাহ্ তা‘আলা লা’নত করেন (কোন মহিলাকে তিন তালাকের পর নামে মাত্র বিবাহ্ করে তালাকের মাধ্যমে অন্যের জন্য) হালালকারীকে এবং যার জন্য তাকে হালাল করা হয়েছে’’। (আবূ দাউদ ২০৭৬)
জাবির, ‘আলী ও ‘আব্দুল্লাহ্ বিন্ মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তাঁরা বলেন:
لَعَنَ رَسُوْلُ اللهِ الْـمُحَلِّلَ وَالْـمُحَلَّلَ لَهُ.
‘‘আল্লাহ্’র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লা’নত করেন (কোন মহিলাকে তিন তালাকের পর নামে মাত্র বিবাহ্ করে তালাকের মাধ্যমে অন্যের জন্য) হালালকারীকে এবং যার জন্য তাকে হালাল করা হয়েছে’’।
(ইব্নু মাজাহ্ ১৯৬১, ১৯৬২; তিরমিযী ১১১৯, ১১২০)
’উক্ববাহ্ বিন্ ‘আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
أَلَا أُخْبِرُكُمْ بِالتَّيْسِ الْـمُسْتَعَارِ؟ قَالُوْا: بَلَى يَا رَسُوْلَ اللهِ! قَالَ: هُوَ الْـمُحَلِّلُ، لَعَنَ اللهُ الْـمُحَلِّلَ وَالْـمُحَلَّلَ لَهُ.
‘‘আমি কি তোমাদেরকে ধার করা পাঁঠার সংবাদ দেবো না? সাহাবারা বললেন: হ্যাঁ বলুন, হে আল্লাহ্’র রাসূল। তখন তিনি বললেন: সে হচ্ছে হালালকারি। আল্লাহ্ তা‘আলা লা’নত করেন (কোন মহিলাকে তিন তালাকের পর নামে মাত্র বিবাহ্ করে তালাকের মাধ্যমে অন্যের জন্য) হালালকারিকে এবং যার জন্য তা হালাল করা হয়েছে’’।
(ইব্নু মাজাহ্ ১৯৬৩)
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
لَعَنَ اللهُ السَّارِقَ، يَسْرِقُ الْبَيْضَةَ فَتُقْطَعُ يَدُهُ، وَيَسْرِقُ الْـحَبْلَ فَتُقْطَعُ يَدُهُ.
‘‘আল্লাহ্ তা‘আলা লা’নত করেন এমন চোরকে যার হাত খানা কাটা গেলো একটি লোহার টুপি অথবা এক খানা রশি চুরির জন্য’’।
(বুখারী ৬৭৮৩; মুসলিম ১৬৮৭)
আনাস্ বিন্ মালিক ও আব্দুল্লাহ্ বিন্ ’উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত তাঁরা বলেন:
لَعَنَ رَسُوْلُ اللهِ فِيْ الْـخَمْرِ عَشْرَةً: عَاصِرَهَا، وَمُعْتَصِرَهَا، وَشَارِبَهَا، وَحَامِلَهَا، وَالْـمَحْمُوْلَةَ إِلَيْهِ، وَسَاقِيَهَا، وَبَائِعَهَا، وَآكِلَ ثَمَنِهَا، وَالْـمُشْتَرِيَ لَهَا، وَالْـمُشْتَرَاةَ لَهُ، وَفِيْ رِوَايَةٍ: لُعِنَتِ الْـخَمْرُ بِعَيْنِهَا.
‘‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদের ব্যাপারে দশ জন ব্যক্তিকে লা’নত তথা অভিসম্পাত করেন: যে মদ বানায়, প্রস্ত্তত কারক, যে পান করে, বহনকারী, যার নিকট বহন করে নেয়া হয়, যে অন্যকে পান করায়, বিক্রেতা, যে লাভ খায়, খরিদদার এবং যার জন্য খরিদ করা হয়। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, সরাসরি মদকেই অভিসম্পাত করা হয়’’।
(তিরমিযী ১২৯৫; আবূ দাউদ ৩৬৭৪; ইব্নু মাজাহ্ ৩৪৪৩, ৩৪৪৪)
‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
لَعَنَ اللهُ مَنْ لَعَنَ وَالِدَهُ، وَلَعَنَ اللهُ مَنْ ذَبَحَ لِغَيْرِ اللهِ، وَلَعَنَ اللهُ مَنْ آوَى مُحْدِثًا، وَلَعَنَ اللهُ مَنْ غَيَّرَ مَنَارَ الْأَرْضِ.
‘‘আল্লাহ্ তা‘আলা লা’নত করেন সে ব্যক্তিকে যে নিজ পিতাকে লা’নত করে, যে আল্লাহ্ তা‘আলা ছাড়া অন্য কারোর জন্য কোন পশু যবেহ্ করে, যে কোন বিদ্‘আতীকে আশ্রয় দেয় এবং যে জমিনের সীমানা পরিবর্তন করে’’। (মুসলিম ১৯৭৮)
আব্দুল্লাহ্ বিন্ ’উমর (রাযিয়াল্লাহু আন্হুমা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:
لَعَنَ رَسُوْلُ اللهِ مَنِ اتَّخَذَ شَيْئًا فِيْهِ الرُّوْحُ غَرَضًا.
‘‘আল্লাহ্’র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লা’নত করেন এমন ব্যক্তিকে যে কোন জীবন্ত প্রাণীকে (তীরের) লক্ষ্যবস্ত্ত বানায়’’। (মুসলিম ১৯৫৮)
‘আব্দুল্লাহ্ বিন্ ‘আববাস্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:
لَعَنَ رَسُوْلُ اللهِ الْـمُتَشَبِّهِيْنَ مِنَ الرِّجَالِ بِالنِّسَاءِ، وَالْـمُتَشَبِّهَاتِ مِنَ النِّسَاءِ بِالرِّجَالِ.
‘‘আল্লাহ্’র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লা’নত করেন এমন পুরুষকে যারা মহিলাদের সাথে যে কোন ভাবে (পোশাকে, চলনে ইত্যাদি) সামঞ্জস্য বজায় রাখতে উৎসাহী এবং সে মহিলাদেরকে যারা পুরুষদের সাথে যে কোন ভাবে (পোশাকে, চলনে ইত্যাদি) সামঞ্জস্য বজায় রাখতে উৎসাহী’’।
(বুখারী ৫৮৮৫, ৫৮৮৬)
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:
لَعَنَ رَسُوْلُ اللهِ الرَّجُلَ يَلْبَسُ لِبْسَةَ الْـمَرْأَةِ، وَالْـمَرْأَةَ تَلْبَسُ لِبْسَةَ الرَّجُلِ.
‘‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমন পুরুষকে লা’নত করেন যে পুরুষ মহিলার ঢংয়ে পোশাক পরে এবং এমন মহিলাকে লা’নত করেন যে মহিলা পুরুষের ঢংয়ে পোশাক পরে’’।
(আবূ দাউদ ৪০৯৮; ইব্নু হিববান ৫৭৫১, ৫৭৫২; হা’কিম ৪/১৯৪; আহমাদ ২/৩২৫)
আবূ জু’হাইফাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:
لَعَنَ النِّبِيُّ الْـمُصَوِّرَ.
‘‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লা’নত করেন (যে কোনভাবে কোন প্রণীর) ছবি ধারণকারীকে’’। (বুখারী ২০৮৬, ২২৩৮, ৫৩৪৭)
‘আব্দুল্লাহ্ বিন্ ‘আববাস্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
لَعَنَ اللهُ مَنْ عَمِلَ عَمَلَ قَوْمِ لُوْطٍ، لَعَنَ اللهُ مَنْ عَمِلَ عَمَلَ قَوْمِ لُوْطٍ، لَعَنَ اللهُ مَنْ عَمِلَ عَمَلَ قَوْمِ لُوْطٍ.
‘‘আল্লাহ্ তা‘আলা সমকামীকে লা’নত করেন। আল্লাহ্ তা‘আলা সমকামীকে লা’নত করেন। আল্লাহ্ তা‘আলা সমকামীকে লা’নত করেন’’।
(আহমাদ ২৯১৫; ইব্নু হিববান ৪৪১৭; বায়হাক্বী ৭৩৩৭, ১৬৭৯৪; ত্বাবারানী/কাবীর ১১৫৪৬; আবূ ইয়া’লা ২৫৩৯; ‘আব্দুব্নু ’হুমাইদ্ ৫৮৯; হা’কিম ৪/৩৫৬)
‘আব্দুল্লাহ্ বিন্ ‘আববাস্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
لَعَنَ اللهُ مَنْ كَمَهَ أَعْمَى عَنِ الطَّرِيْقِ، وَلَعَنَ اللهُ مَنْ وَقَعَ عَلَى بَهِيْمَةٍ.
‘‘আল্লাহ্ তা‘আলা লা’নত করেন এমন ব্যক্তিকে যে কোন অন্ধকে পথভ্রষ্ট করে এবং সে ব্যক্তিকেও যে চতুষ্পদ জন্তুর সাথে সঙ্গমে লিপ্ত হয়’’।
(ত্বাবারানী/কবীর ১১৫৪৬; বায়হাক্বী ১৬৭৯৪; আহমাদ ১৮৭৫, ২৯১৫; ইব্নু ’হুমাইদ্ ৫৮৯; ইব্নু হিববান ৪৪১৭; আবূ ইয়া’লা’ ২৫৩৯; হা’কিম ৮/২৩১)
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:
مَرَّ عَلَى النَّبِيِّ حِمَارٌ قَدْ وُسِمَ فِيْ وَجْهِهِ، فَقَالَ: لَعَنَ اللهُ الَّذِيْ وَسَمَهُ.
‘‘একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি গাধার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন যার চেহারায় পুড়িয়ে দাগ দেয়া হয়েছিলো। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: আল্লাহ্ তা‘আলা লা’নত করুক সে ব্যক্তিকে যে গাধাটির চেহারায় পুড়িয়ে দাগ দিলো’’। (মুসলিম ২১১৭)
’হাস্সান বিন্ সাবিত, আবূ হুরাইরাহ্ ও ‘আব্দুল্লাহ্ বিন্ ‘আববাস্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তাঁরা বলেন:
لَعَنَ رَسُوْلُ اللهِ زَوَّارَاتِ الْقُبُوْرِ.
‘‘আল্লাহ্’র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেশি বেশি কবর যিয়ারতকারিণীদেরকে লা’নত করেন’’। (ইব্নু মাজাহ্ ১৫৯৬, ১৫৯৭)
আবূ হুরাইরাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
مَلْعُوْنٌ مَنْ أَتَى اِمْرَأَتَهُ فِيْ دُبُرِهَا.
‘‘অভিশপ্ত সে ব্যক্তি যে নিজ স্ত্রীর মলদ্বার ব্যবহার করে’’।
(আবূ দাউদ ২১৬২; আহমাদ ২/৪৪৪, ৪৭৯)
আবূ হুরাইরাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
إِذَا دَعَا الرَّجُلُ اِمْرَأَتَهُ إِلَى فِرَاشِهِ، فَأَبَتْ أَنْ تَجِيْءَ لَعَنَتْهَا الْـمَلَائِكَةُ حَتَّى تُصْبِحَ.
‘‘যখন কোন পুরুষ নিজ স্ত্রীকে (সহবাসের জন্য) নিজ বিছানায় ডাকে অথচ সে সেখানে আসতে অস্বীকার করে তখন ফিরিশ্তারা তাকে সকাল পর্যন্ত লা’নত করতে থাকে’’। (বুখারী ৩২৩৭, ৫১৯৩; মুসলিম ১৪৩৬)
‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
مَنِ ادَّعَى إِلَى غَيْرِ أَبِيْهِ، أَوِ انْتَمَى إِلَى غَيْرِ مَوَالِيْهِ، فَعَلَيْهِ لَعْنَةُ اللهِ وَالْـمَلَائِكَةُ وَالنَّاسِ أَجْمَعِيْنَ، لَا يَقْبَلُ اللهُ مِنْهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ صَرْفًا وَلَا عَـدْلًا، وَمَنْ أَخْفَرَ مُسْلِمًا، فَعَلَيْهِ لَـعْنَةُ اللهِ وَالْـمَلَائِكَةِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِيْنَ، لَا يُقْبَلُ مِنْهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ صَرْفٌ وَلَا عَدْلٌ.
‘‘যে ব্যক্তি নিজ জন্মদাতা ছাড়া অন্য কাউকে পিতা বলে দাবি করলো অথবা নিজ মনিব ছাড়া অন্য কাউকে মনিব বলে পরিচয় দিলো তার উপর আল্লাহ্ তা‘আলা, ফিরিশ্তা ও সকল মানুষের লা’নত এবং কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তা‘আলা তার পক্ষ থেকে কোন ফরয ও নফল আমল কবুল করবেন না। তেমনিভাবে যে ব্যক্তি কোন মুসলিমের সাথে চুক্তি ভঙ্গ করলো তার উপরও আল্লাহ্ তা‘আলা, ফিরিশ্তা ও সকল মানুষের লা’নত এবং কিয়ামতের দিন তার পক্ষ থেকেও কোন ফরয ও নফল আমল কবুল করা হবে না’’। (মুসলিম ১৩৭০)
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
مَنْ أَشَارَ إِلَى أَخِيْهِ بِحَدِيْدَةٍ، فَإِنَّ الْـمَلَائِكَةَ تَلْعَنُهُ حَتَّى يَدَعَهُ، وَإِنْ كَانَ أَخَاهُ لِأَبِيْهِ وَأُمِّهِ.
‘‘যে ব্যক্তি নিজ ভাইয়ের প্রতি ধারালো কোন লোহা (ছুরি, চাকু, দা তথা যে কোন অস্ত্র) দ্বারা ইশারা করলো ফিরিশ্তারা তার উপর লা’নত করতে থাকবে যতক্ষণ না সে তা পরিত্যাগ করে যদিও সে তার সহোদর ভাই হোক না কেন’’। (মুসলিম ২৬১৬)
‘আব্দুল্লাহ্ বিন্ ‘আববাস্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
مَنْ سَبَّ أَصْحَابِيْ فَعَلَيْهِ لَعْنَةُ اللهِ وَالْـمَلَائِكَةِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِيْنَ.
‘‘যে ব্যক্তি আমার সাহাবাদেরকে গালি দেয় তার উপর আল্লাহ্ তা‘আলা, ফিরিশ্তা ও সকল মানুষের লা’নত’’। (ত্বাবারানী/কবীর ১২৭০৯)
আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:
«وَالَّذِيْنَ يَنْقُضُوْنَ عَهْدَ اللهِ مِنْ بَعْدِ مِيْثَاقِهِ، وَيَقْطَعُوْنَ مَآ أَمَرَ اللهُ بِهِ أَنْ يُّوْصَلَ وَيُفْسِدُوْنَ فِيْ الْأَرْضِ، أُوْلَآئِكَ لَـهُمُ اللَّعْنَةُ وَلَـهُمْ سُوْءُ الدَّارِ».
‘‘যারা আল্লাহ্ তা‘আলাকে দেয়া দৃঢ় অঙ্গীকার ভঙ্গ করে এবং যে সম্পর্ক অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য আল্লাহ্ তা‘আলা আদেশ করেছেন (আত্মীয়তার বন্ধন) তা ছিন্ন করে। পৃথিবীতে অশান্তি ছড়িয়ে বেড়ায় তাদের জন্যই রয়েছে অভিসম্পাত এবং তাদের জন্যই রয়েছে নিকৃষ্ট আবাসস্থল’’।
(রা’দ্ : ২৫)
তিনি আরো বলেন:
«إِنَّ الَّذِيْنَ يُؤْذُوْنَ اللهَ وَرَسُوْلَهُ لَعَنَهُمُ اللهُ فِيْ الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ، وَأَعَدَّ لَهُمْ عَذَابًا مُّهِيْنًا»
‘‘যারা আল্লাহ্ তা‘আলা ও তদীয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কষ্ট দেয় আল্লাহ্ তা‘আলা দুনিয়া ও আখিরাতে তাদেরকে লা’নত করেন এবং (আখিরাতে) তাদের জন্য প্রস্ত্তত রেখেছেন লাঞ্ছনাকর শাস্তি’’। (আহ্যাব : ৫৭)
আল্লাহ্ তা‘আলা আরো বলেন:
«إِنَّ الَّذِيْنَ يَكْتُمُوْنَ مَآ أَنْزَلْنَا مِنَ الْبَيِّنَاتِ وَالْـهُدَى مِنْ بَعْدِ مَا بَيَّنَّاهُ لِلنَّاسِ فِيْ الْكِتَابِ، أُوْلَآئِكَ يَلْعَنُهُمُ اللهُ وَيَلْعَنُهُمُ اللَّاعِنُوْنَ»
‘‘নিশ্চয়ই যারা আমার অবতীর্ণ উজ্জ্বল নিদর্শন ও পথ নির্দেশ কিতাবের মাধ্যমে মানুষকে সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়ার পরও তা লুকিয়ে রেখেছে। আল্লাহ্ তা‘আলা তাদেরকে অভিসম্পাত করেন এবং সকল অভিসম্পাতকারীরাও তাদেরকে অভিসম্পাত করে’’। (বাক্বারাহ্ : ১৫৯)
তিনি আরো বলেন:
«إِنَّ الَّذِيْنَ يَرْمُوْنَ الْـمُحْصَنَاتِ الْغَافِلَاتِ الْـمُؤْمِنَاتِ لُعِنُوْا فِيْ الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ، وَلَـهُمْ عَذَابٌ عَظِيْمٌ»
‘‘নিশ্চয়ই যারা সতী-সাধ্বী, সরলমনা মু’মিন মহিলাকে ব্যভিচারের অপবাদ দেয় তারা দুনিয়া ও আখিরাতে অভিশপ্ত এবং তাদের জন্যই রয়েছে মহা শাস্তি’’। (নূর : ২৩)
আল্লাহ্ তা‘আলা আরো বলেন:
«أَلَمْ تَرَ إِلَى الَّذِيْنَ أُوْتُوْا نَصِيْبًا مِّنَ الْكِتَابِ يُؤْمِنُوْنَ بِالْـجِبْتِ وَالطَّاغُوْتِ وَيَقُوْلُوْنَ لِلَّذِيْنَ كَفَرُوْا هَؤُلَآءِ أَهْدَى مِنَ الَّذِيْنَ آمَنُوْا سَبِيْلًا، أُوْلَآئِكَ الَّذِيْنَ لَعَنَهُمُ اللهُ، وَمَنْ يَّلْعَنِ اللهُ فَلَنْ تَجِدَ لَهُ نَصِيْرًا»
‘‘তুমি কি ওদের প্রতি লক্ষ্য করেছো যাদেরকে কিতাবের কিছু অংশ দেয়া হয়েছে। তারা (আল্লাহ্ তা‘আলাকে ছেড়ে) যাদুকর, গণক, প্রতিমা ও শয়তানের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং কাফিরদের সম্পর্কে বলে, তারাই মু’মিনদের চাইতে অধিক সুপথগামী। এদেরই প্রতি আল্লাহ্ তা‘আলা লা’নত করেছেন এবং আল্লাহ্ তা‘আলা যাকে অভিসম্পাত করেন তার জন্য তুমি কোন সাহায্যকারীই পাবে না’’। (নিসা’ : ৫১-৫২)
সাওবান, আবূ হুরাইরাহ্ ও ‘আব্দুল্লাহ্ বিন্ ‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত তাঁরা বলেন:
لَعَنَ رَسُوْلُ اللهِ الرَّاشِيَ وَالْـمُرْتَشِيَ، وَفِيْ رِوَايَةٍ: لَعَنَ اللهُ الرَّاشِيَ وَالْـمُرْتَشِيَ وَالرَّائِشَ الَّذِيْ يَمْشِيْ بَيْنَهُمَا.
‘‘আল্লাহ্’র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লা’নত করেন ঘুষখোর ও ঘুষদাতাকে। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, আল্লাহ্ তা‘আলা লা’নত করেন ঘুষখোর, ঘুষদাতা এবং তাদের মাধ্যমকেও’’।
(তিরমিযী ১৩৩৬, ১৩৩৭; ইব্নু হিববান ৫০৭৬, ৫০৭৭; হা’কিম ৪/১০৩)
এ ছাড়াও আরো অনেক গুনাহ্ রয়েছে যে গুনাহ্গারের উপর আল্লাহ্ তা‘আলা, তদীয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, ফিরিশ্তা ও সকল মানুষের লা’নত রয়েছে। এ জাতীয় গুনাহ্গাররা যদি গুনাহ্ করার সময় এতটুকুই ভাবে যে তাদের উপর অনেকেরই লা’নত পড়ছে তা হলে তাদের জন্য উক্ত গুনাহ্ ছাড়া একেবারেই সহজ হয়ে যাবে।