লগইন করুন
বিজয়ের দ্বিতীয় দিবসে ভাষণ দেয়ার জন্য আল্লাহর নাবী (ﷺ) জনতার সম্মুখে দন্ডায়মান হলেন। ভাষণের প্রারম্ভে আল্লাহর প্রশংসা ও স্তব-স্তুতি বর্ণনার পর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন,
(أَيُّهَا النَّاسُ، إِنَّ اللهَ حَرَّمَ مَكَّةَ يَوْمَ خَلَقَ السَّمٰوَاتِ وَالْأَرْضِ، فَهِيَ حَرَامٌ بِحُرْمَةِ اللهِ إِلٰى يَوْمِ الْقِيَامَةِ، فَلَا يَحِلُّ لِاِمْرِئٍ يُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيِوْمِ الْآخِرِ أَنْ يَّسْفِكَ فَيْهَا دَماً، أَوْ يَعْضُدُ بِهَا شَجَرَةً، فَإِنْ أَحَدٌ تَرَخَّصَ لِقِتَالِ رَسُوْلِ اللهِ ﷺ فَقُوْلُوْا: إِنَّ اللهَ أَذِنَ لِرَسُوْلِهِ وَلَمْ يَأْذَنْ لَكُمْ، وَإِنَّمَا حَلَّتْ لِيْ سَاعَةً مِّنْ نَهَارٍ، وَقَدْ عَادَتْ حُرْمَتُهَا الْيَوْمَ كَحُرْمَتِهَا بِالْأَمْسِ، فَلْيُبَلِّغُ الشَّاهِدُ الْغَائِبَ)
‘ওহে লোক সকল! আল্লাহ যেদিন আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন সে দিন মক্কাকে হারাম (নিষিদ্ধ শহর) করে দিয়েছেন। এ কারণে কেয়ামত পর্যন্ত তা হারাম বা পবিত্র থাকবে। যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং পরকালে বিশ্বাসী হবে তার এটা বৈধ হবে না যে, সে এখানে রক্তপাত ঘটাবে অথবা এখানকার কোন বৃক্ষ কর্তন করবে। কেউ যদি এ কারণে জায়েয মনে করে যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এখানে যুদ্ধ করেছেন তবে তাকে বলে দাও যে, আল্লাহ স্বয়ং তাঁর রাসূল (ﷺ)-কে অনুমতি প্রদান করেছিলেন। কিন্তু তোমাদেরকে অনুমতি দেন নি এবং আমার জন্যও শুধুমাত্র দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য তা বৈধ করেছিলেন। অতঃপর আজ তার পবিত্রতা অনুরূপ ফিরে এসেছে গতকাল তার পবিত্রতা অত:পর যারা উপস্থিত আছে তারা অনুপস্থিতদের নিকট এ বাণী পৌঁছে দিবে।
অন্য এক বর্ণনায় এতটুকু অতিরিক্ত রয়েছে যে, لَا يَعْضِدُ شَوْكَهُ، وَلَا يَنْفِرُ صَيْدَهُ وَلَا تَلْتَقِطُ سَاقِطَتَهُ إِلَّا مَنْ عَرَّفَهَا، وَلَا يَخْتَلِىُ خَلَاهُ এখানে কোন কাঁটা কাটা বৈধ নয়, শিকার তাড়ান ঠিক নয় এবং পড়ে থাকা কোন জিনিস উঠানোও ঠিক নয় তবে সে ব্যক্তি নিতে পারবে যে, সে সম্পর্কে প্রচার করবে। তাছাড়া, কোন প্রকার ঘাস ও উপড়ানো যাবে না।
আব্বাস (রাঃ) বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! কিন্তু ইযখির ঘাসের অনুমতি দিন (আরবের প্রসিদ্ধ ঘাস যা উর্মির ন্যায় হয় এবং চা ও ঔষুধ হিসেবে ব্যবহার হয়। কারণ, এটা কর্মকার এবং বাড়ির নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস) নাবী কারীম (ﷺ) বললেন, (إِلَّا الْإِذْخِر) ‘বেশ, ইযখিরের অনুমতি রইল।’
ওই দিন বনু খুযা’আহ বনু লাইসের এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছিল। কারণ, জাহেলিয়াত আমলে বনু লাইসের হাতে তাদের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছিল। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সে সম্পর্কে বললেন,
(يَا مَعْشَرَ خُزَاعَةَ، اِرْفَعُوْ أَيْدِيَكُمْ عَنْ الْقَتْلِ، فَلَقَدْ كَثُرَ الْقَتِلُ إِنْ نَفَعَ، وَلَقَدْ قَتَلَتُمْ قِتْيَالًا لَأَدِّيَنَّهُ، فَمَنْ قَتَلَ بَعْدَ مَقَامِيْ هٰذَا فَأَهْلُهُ بِخَيْرِ النّٰظِرِيْنَ، إِنْ شَاءُوْا فَدَمٌ قَاتَلَهُ، وَإِنْ شَاءُوْا فَعَقَلَهُ)
‘ওহে খুযা’আহ সম্প্রদায়ের লোকজনেরা তোমরা নিজের হাতকে হত্যা ও খুন হতে নিবৃত্ত রাখ। কারণ, হত্যায় যদি কোন উপকার পাওয়া যেত তাহলে এ যাবত যত হত্যা সংঘটিত হয়েছে তা থেকে কোন উপকার লাভ সম্ভব হত, কিন্তু কোথায় সে লাভ? তোমরা এমন এক জনকে হত্যা করেছ যার শোনিত পাতের খেসারত অবশ্যই আমাকে দিতে হবে। অতঃপর এ স্থানে যদি কেউ কাউকে হত্যা করে তবে নিহত ব্যক্তির উত্তরাধিকারীদের দুটি বিষয়ের অধিকার থাকবে। হয় তারা নিহত ব্যক্তির বিনিময় হত্যাকারীকে হত্যা করবে, কিংবা শোণিত পাতের খেসারত গ্রহণ করবে।
অন্য এক বর্ণনায় আছে যে, এর পর ইয়ামানের আবূ শাহ নামক এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে আরয করল, ‘হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! আমার জন্য তা লিখে দিন।’ নাবী কারীম (ﷺ) বললেন, ‘আবূ শাহর জন্য লিখে দাও।’