লগইন করুন
রাসূলে কারীম (ﷺ) যখন একটু স্বস্তি বোধ করলেন তখন বুদাইল বিন ওয়ারাক্বা (রাঃ) খুযায়ী আপন খুযা’আহ গোত্রের কয়েক জন লোক সহ তাঁর খেদমতে উপস্থিত হলেন। তুহামার অধিবাসীগণের মধ্যে এ গোত্রই (খুযা’আহ) রাসূলুল্লাহ (ﷺ)’র মঙ্গলকাঙ্ক্ষী ছিল। বুদাইল বলল, ‘আমি কা‘ব বিন লুওয়ায়কে দেখে আসছি যে, সে হুদায়বিয়াহর পর্যাপ্ত পানির আশ্রয়ের উপর শিবির স্থাপন করেছে। তাদের সঙ্গে শিশু এবং মহিলাগণও রয়েছে। আপনার সঙ্গে যুদ্ধ করা এবং আল্লাহর ঘর হতে আপনাদের নিবৃত্ত রাখার ব্যাপারে তারা বদ্ধ-পরিকর।’
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন,
(إِنَّا لَمْ نَجِئ لِقِتَالِ أَحَدٍ، وَلٰكِنَّا جِئْنَا مُعْتَمِرِيْنَ، وَإِنَّ قُرَيْشاً قَدْ نَهَكَتْهُمْ الْحَرْبُ وَأَضَرَّتْ بِهِمْ، فَإِنْ شَاءُوْا مَادَدْتُّهُمْ، وَيَخْلُوْا بَيْنِيْ وَبَيْنَ النَّاسِ، وَإِنْ شَاءُوْا أَنْ يَّدْخُلُوْا فِيْمَا دَخَلَ فِيْهِ النَّاسُ فَعَلُوْا، وِإِلَّا فَقَدْ جَمُّوْا ، وَإِنْ هُمْ أَبَوْا إِلَّا الْقِتَالَ فَوَالَّذِيْ نَفْسِيْ بِيَدِهِ لَأُقَاتِلَنَّهُمْ عَلٰى أَمْرِيْ هٰذَا حَتّٰى تَنْفَرِدُ سَالفتي، أَوْ لَيَنْفِذَنَّ اللهُ أَمْرَهُ)
‘কারো সঙ্গে যুদ্ধ করার উদ্দেশ্যে আমরা এখানে আগমন করি নি। অতীতের যুদ্ধসমূহ কুরাইশগণকে সম্পূর্ণরূপে পর্যুদস্ত ও তছ্নছ্ করে ফেলেছে। এতে তাদের ক্ষতিও হয়েছে অসামান্য। তাই যদি তারা চায় তাহলে আমি তাদের সঙ্গে একটি সময় নির্ধারণ করব যে সময় তারা আমার ও বিপক্ষীয় লোকজনের পথ থেকে সরে দাঁড়াবে। এতে বড় আকারের ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হবে। অন্যথায় যদি তারা যুদ্ধ চায় তাহলে তাদের ঔদ্ধত্য জনিত কৃতকার্যের শাস্তি অবশ্যই ভোগ করতে হবে।
আর যুদ্ধই যদি তাদের একমাত্র কাম্য হয়ে থাকে, তবে সেই সত্তার কসম! যাঁর হাতে রয়েছে আমার জীবন আমি আল্লাহর দ্বীনের ব্যাপারে তাদের সঙ্গে ঐ সময় পর্যন্ত যুদ্ধ করে যাব যতক্ষণ পর্যন্ত আমার শরীরে আত্মা থাকে, কিংবা যতক্ষণ আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় দ্বীনের ব্যাপারে একটা চূড়ান্ত ফয়সালা করে না দেন।
বুদাইল বলল, ‘আপনি যা বললেন আমি তা কুরাইশগণকে অবহিত করব।’
অতঃপর সে কুরাইশগণের নিকট গিয়ে বলল, ‘আমি মদীনার ঐ নাবী সাহেবের সঙ্গে সাক্ষাত করে এসেছি। আমি তাঁর নিকট একটা কথা শুনেছি, যদি তোমরা চাও তাহলে আমি তোমাদের নিকট তা উপস্থাপন করব।’
এ কথার প্রেক্ষিতে নির্বোধ এবং স্বল্পবুদ্ধিসম্পন্ন লোকেরা বলল, ‘আমাদের এমন কোন প্রয়োজন নেই যে, তুমি কোন কথা আমাদের নিকট বর্ণনা কর।’
কিন্তু যারা বুদ্ধিমান ও প্রজ্ঞাসম্পন্ন ছিল তারা বলল, ‘তুমি তাঁর কাছ থেকে কী শুনেছ তা আমাদের শুনতে দাও।’
বুদাইলের নিকট রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যে সকল কথা বলেছিলেন সে তাদের নিকট তা বর্ণনা করল। এ প্রেক্ষিতে কুরাইশরা মিকরায বিন হাফসকে তাঁর নিকট প্রেরণ করল। তাকে দেখে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, ‘এ ব্যক্তি অঙ্গীকার ভঙ্গকারী।’
কিন্তু যখন সে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নিকট অগ্রসর হয়ে আলাপ আলোচনা করল তখন তিনি তাকে সেই সব কথাই বললেন যা বুদাইল এবং তাঁর সঙ্গীসাথীদের নিকট বলেছিলেন। অতঃপর সে মক্কা ফিরে এসে কুরাইশগণকে তার আলাপ আলোচনার বিষয়াদি অবহিত করল।