আর-রাহীকুল মাখতূম গাযওয়ায়ে বদরে কুবরা- ইসলামের প্রথম ফায়সালাকারী যুদ্ধ (غَزْوَةُ بَدْرِ الْكُبْرٰى َاوَّلُ مَعْرِكَةٍ مِنْ مُعَارِكِ الْإِسْلَامِ الْفَاصِلَةِ) আল্লামা সফিউর রহমান মোবারকপুরী (রহঃ)
মক্কায় প্রত্যাবর্তনের ব্যাপারে মক্কা বাহিনীর মধ্যে মতভেদ (هَمُّ الْجَيْشِ الْمَكِّيْ بِالرُّجُوْعِ، وَوُقُوْعُ الْاِنْشِقَاقِ فِيْهِ ):

আবূ সুফইয়ানের পয়গাম প্রাপ্ত হয়ে মক্কা বাহিনীর প্রায় সকল সদস্যই মক্কায় ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করল। কিন্তু কুরাইশ নেতা ও মক্কা বাহিনীর সর্বাধিনায়ক আবূ জাহল অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে বলল, ‘আল্লাহর কসম! আমরা এখান থেকে ফিরে যাব না। বরং আমরা বদর যাব, সেখানে তিন দিন অবস্থান করব এবং এ তিন দিন যাবৎ উট জবেহ করব, পানভোজন ও আমোদ আহ্লাদ করব। এর ফলে সমগ্র আরব জাতি আমাদের শক্তি সামর্থ্যের কথা অবগত হবে, আর এভাবে চিরদিনের জন্য তাদের উপর আমাদের প্রভাব প্রতিফলিত হবে।

আবূ জাহলের এ কথার পরেও আখনাস ইবনু শুরায়েক ফিরে যাবারই পরামর্শ দিল। কিন্তু অধিক সংখ্যক লোকই তার কথায় কান দিল না। তাই, সে বনু যুহরার লোকজনদের সঙ্গে নিয়ে মক্কায় ফিরে গেল। কেননা, সে ছিল বনু যুহরা গোত্রের মিত্র এবং বাহিনীতে সে ছিল তাদের নেতা। তাদের কোন লোকই বদর যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে নি। পরবর্তীতে বনু যুহরা গোত্রের লোকেরা আখনাস ইবনু শুরায়েকের এ সিদ্ধান্তের কারণে খুব আনন্দ প্রকাশ করেছিল এবং তাদের অন্তরে তার প্রতি শ্রদ্ধা চিরদিনের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তাদের সংখ্যা ছিল তিন শত।

বনু যুহরার মতো বনু হাশিমও মক্কায় ফিরে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু আবূ জাহল অত্যন্ত কঠোরতা অবলম্বন করায় তাদের পক্ষে মক্কায় ফিরে যাওয়া সম্ভব হল না। সে কঠোর কণ্ঠে বলল, আমরা ফিরে না যাওয়া পর্যন্ত এ দলটি আমাদের থেকে পৃথক হতে পারবে না। মোট কথা, ঐ বাহিনী তাদের সফরসূচী বহাল রাখল। বনু যুহরা গোত্রের লোকজনদের মক্কা প্রত্যাবর্তনের ফলে তাদের সৈন্য সংখ্যা দাঁড়ায় এক হাজারে এবং তারা ছিল বদর অভিমুখী। বদরের নিকটবর্তী হয়ে তারা একটি টিলার পিছনে শিবির স্থাপন করে। এ টিলাটি বদর উপত্যকার সীমান্তের উপর দক্ষিণমুখে অবস্থিত।