লগইন করুন
উত্তর: আল্লাহ তা‘আলা যেদিন কলম সৃষ্টি করেছেন, সেদিন থেকে কিয়ামত পর্যন্ত যত মাখলুকাত সৃষ্টি হবে, সবই লাওহে মাহফূজে লিপিবদ্ধ আছে। আল্লাহ তা‘আলা কলম সৃষ্টি করে বললেন, লিখ। কলম বলল, হে আমার প্রতিপালক! আমি কি লিখব? আল্লাহ তা‘আলা বললেন, কিয়ামত পর্যন্ত যা কিছু হবে সব লিখে ফেল। সে সময় কিয়ামত পর্যন্ত যা কিছু পৃথিবীর বুকে সংঘটিত হবে, কলম সব কিছুই লিখে ফেলল।[1]
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে সহীহ সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, ভ্রুন মাতৃগর্ভে চার মাস অতিবাহিত হওয়ার পর আল্লাহ তা‘আলা একজন ফিরিশতা প্রেরণ করেন। ফিরিশতা তার মধ্যে রূহ ফুঁকে দেন এবং লিখে দেন তার রিযিক, বয়স এবং তার কাজ অর্থাৎ সৌভাগ্যবান হবে না দুর্ভাগা হবে। রিযিক লিখা আছে এবং কীভাবে অর্জন করবে, তাও লিখা আছে। রিযিক অন্বেষণের সাথ সাথে রিযিক অন্বেষণের উপকরণও লিপিবদ্ধ আছে। আল্লাহ বলেন,
﴿هُوَ ٱلَّذِي جَعَلَ لَكُمُ ٱلۡأَرۡضَ ذَلُولٗا فَٱمۡشُواْ فِي مَنَاكِبِهَا وَكُلُواْ مِن رِّزۡقِهِ وَإِلَيۡهِ ٱلنُّشُورُ﴾ [الملك: ١٥]
“তিনি তোমাদের জন্যে পৃথিবীকে সুগম করেছেন, অতএব, তোমরা তাতে বিচরণ কর এবং তার দেওয়া রিযিক আহার কর। তাঁরই কাছে পুনরুজ্জীবন হবে।” [সূরা আল-মুলক, আয়াত: ১৫]
রিযিক পাওয়ার এবং তা বৃদ্ধি হওয়ার অন্যতম মাধ্যম হলো, পিতা-মাতার সাথে সৎ ব্যবহার করা এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«مَنْ سَرَّهُ أَنْ يُبْسَطَ لَهُ فِي رِزْقِهِ أَوْ يُنْسَأَ لَهُ فِي أَثَرِهِ فَلْيَصِلْ رَحِمَه»
“যে ব্যক্তি চায় যে, তার রিযিক বাড়িয়ে দেওয়া হোক এবং বয়স বাড়িয়ে দেওয়া হোক, সে যেন আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখে।”[2]
রিযিক বৃদ্ধির আরো মাধ্যম হলো তাকওয়া বা আল্লাহর ভয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَمَن يَتَّقِ ٱللَّهَ يَجۡعَل لَّهُۥ مَخۡرَجٗا ٢ وَيَرۡزُقۡهُ مِنۡ حَيۡثُ لَا يَحۡتَسِبُۚ﴾ [الطلاق: ٢، ٣]
“আর যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্যে নিস্কৃতির পথ বের করে দিবেন এবং তাকে তার ধারণাতীত জায়গা থেকে রিযিক দান করবেন।” [সূরা আত-ত্বালাক, আয়াত: ২-৩]
এমন বলা যাবে না যে, রিযিক যেহেতু নির্ধারিত আছে সুতরাং আমি এর উপকরণ অনুসন্ধান করব না। এটা বোকামীর পরিচয়। বুদ্ধিমানের পরিচয় হলো রিযিক এর জন্য এবং দীন-দুনিয়ার কল্যাণ অর্জনের জন্য প্রচেষ্টা চালানো। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«الْكَيِّسُ مَنْ دَانَ نَفْسَهُ وَعَمِلَ لِمَا بَعْدَ الْمَوْتِ وَالْعَاجِزُ مَنْ أَتْبَعَ نَفْسَهُ هَوَاهَا وَتَمَنَّى عَلَى اللَّهِ»
“বুদ্ধিমান সেই ব্যক্তি, যে নিজের হিসাব নিল এবং পরকালের জন্য আমল করল। অক্ষম ও নির্বোধ সেই ব্যক্তি, যে নিজের কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করল এবং আল্লাহর ওপর ভরসা করে বসে থাকল।”[3]রিযিক যেভাবে লিপিবদ্ধ আছে, বিবাহ করাও নির্ধারিত রয়েছে। এ পৃথিবীতে কে কার স্বামী বা স্ত্রী হবে, তাও নির্দিষ্ট রয়েছে। আসমান-জমিনের কোনো কিছুই আল্লাহর কাছে গোপন নয়।
[2] সহীহ মুসলিম, অধ্যায়: আল বির ওয়াস সিলাহ।
[3] তিরমিযী, অধ্যায়: কিতাবু সিফাতিল কিয়ামাহ।