লগইন করুন
মানছূরপুরী বলেন, কুরআনে বর্ণিতالْيَوْمَ বা ‘আজ’ শব্দ দ্বারা কেবল রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নবুঅতকালকেই বুঝানো হয়নি বরং তা কয়েক হাযার বছর পূর্বেকার মূসা ও ঈসার নবুঅতকালকেও শামিল করে’।[1] কেননা মূসা ও ঈসা প্রত্যেকের নিকটে নাযিলকৃত কিতাবে শেষনবী হিসাবে মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর আগমনের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে। অতএব শেষনবীর আবির্ভাব কুরআনের অবতরণ ও ইসলামের পূর্ণাঙ্গতা লাভ ও তাকে মানবজাতির জন্য সর্বশেষ দ্বীন হিসাবে মনোনীত করা সবই ছিল হাযার বছরের প্রতীক্ষার অবসান এবং সৃষ্টিজগতের জন্য সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর পক্ষ হ’তে সবচাইতে দুর্লভ সুসংবাদের মহান প্রাপ্তি।
এ কারণেই রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) অন্যত্র বলেন, وَالَّذِى نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لاَ يَسْمَعُ بِى أَحَدٌ مِنْ هَذِهِ الأُمَّةِ يَهُودِىٌّ وَلاَ نَصْرَانِىٌّ ثُمَّ يَمُوْتُ وَلَمْ يُؤْمِنْ بِالَّذِى أُرْسِلْتُ بِهِ إِلاَّ كَانَ مِن أَصْحَابِ النَّارِ ‘যাঁর হাতে মুহাম্মাদের জীবন তাঁর কসম করে বলছি, ইহূদী হৌক বা নাছারা হৌক এই উম্মতের যে কেউ আমার আগমনের খবর শুনেছে, অতঃপর মৃত্যুবরণ করেছে, অথচ আমি যা নিয়ে প্রেরিত হয়েছি, তার উপরে ঈমান আনেনি, সে ব্যক্তি অবশ্যই জাহান্নামী হবে’।[2]
উপরোক্ত হাদীছে ‘এই উম্মত’(هَذِهِ الأُمَّةِ) বলতে উম্মতে মুহাম্মাদীকে বুঝানো হয়েছে। ‘উম্মত’ দুই প্রকার : উম্মতে ইজাবাহ ও উম্মতে দা‘ওয়াহ। যারা শেষনবী মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর দাওয়াত কবুল করে ‘মুসলিম’ হয়েছে, তাদেরকে উম্মতে ইজাবাহ(أُمَّةُ الإِجَابَةِ) বলে। আর যারা তাঁর দাওয়াত কবুল করেনি, তাদেরকে বলা হয় ‘উম্মতে দা‘ওয়াহ’(أُمَّةُ الدَّعْوَةِ)। দু’টির মধ্যে ‘আম ও খাছ সম্পর্ক। হাদীছে ‘এই উম্মত’ বলতে উম্মতে দা‘ওয়াহ বুঝানো হয়েছে। যার দ্বারা রাসূল (ছাঃ)-এর যামানা থেকে ক্বিয়ামত পর্যন্ত মুসলিম-অমুসলিম সকল জিন ও ইনসানকে বুঝানো হয়েছে। সৃষ্টি জগতের সবাই এখন উম্মতে মুহাম্মাদী। কারণ মুহাম্মাদ (ছাঃ) হলেন শেষনবী। তাঁর পরে আর কোন নবী নেই ।[3] অতএব তিনিই এখন সকলের নবী এবং সকলে তাঁর উম্মত।
[2]. মুসলিম হা/১৫৩; মিশকাত হা/১০ আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে।
[3]. আবুদাঊদ হা/৪২৫২; মিশকাত হা/৫৪০৬; বুখারী হা/৩৪৫৫, ৩৫৩৪; মুসলিম হা/১৮৪২, ২২৮৬; মিশকাত হা/৩৬৭৫, ৫৭৪৫।