লগইন করুন
উত্তর: উক্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পূর্বে আল্লাহর সৃষ্টির সাধারণ নিয়ম এবং আল্লাহর শরী‘আত সম্পর্কে আলোচনা করতে চাই। আল্লাহর সৃষ্টির নিয়মটি বিধৃত হয়েছে আল্লাহর নিম্মোক্ত বাণীসমূহে
﴿وَهُوَ ٱلۡعَلِيمُ ٱلۡحَكِيمُ﴾ [التحريم: ٢]
“তিনি সর্বজ্ঞ ও প্রজ্ঞাময়।” [সূরা আত-তাহরীম, আয়াত: ২]
আল্লাহর বাণী,
﴿إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَلِيمًا حَكِيمٗا﴾ [النساء: ٢٤]
“নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ এবং প্রজ্ঞাময়।” [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ২৪]
এছাড়া আরো অসংখ্য দলীল-প্রমাণ রয়েছে। এগুলো প্রমাণ করে যে, আল্লাহ যা সৃষ্টি করেন এবং যার আদেশ প্রদান করেন তাতে তিনি মহা কৌশলী। তিনি যাই সৃষ্টি করেন না কেন, তার পিছনে রয়েছে এক বিরাট উদ্দেশ্য। তিনি আমাদের জন্য যে শরী‘আত দিয়েছেন, তার ভিতরেও রয়েছে এক বিরাট হিকমত। চাই কোনো বস্তু ওয়াজিব করার ভিতরে হোক কিংবা হারাম করার ভিতরে হোক। অথবা বৈধ করার মাঝেই হোক না কেন। এ হিকমত আমরা কখনো জানতে পারি আবার কখনো জানতে পারিনা। আল্লাহ প্রদত্ব জ্ঞানের মাধ্যমে কখনো কিছু লোকে জানে আবার অনেকে জানেই না। তাই আমরা বলব যে, আল্লাহ তা‘আলা জিন্ন এবং মানুষকে এক বিরাট উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছেন। তা হলো একমাত্র আল্লাহর ইবাদাত করা। আল্লাহ বলেন,
﴿وَمَا خَلَقۡتُ ٱلۡجِنَّ وَٱلۡإِنسَ إِلَّا لِيَعۡبُدُونِ ٥٦﴾ [الذاريات: ٥٦]
“আমি জিন্ন এবং মানুষকে আমার ইবাদাতের জন্য সৃষ্টি করেছি।” [সূরা আয-যারিয়াত, আয়াত: ৫৬]
আল্লাহ আরো বলেন,
﴿أَفَحَسِبۡتُمۡ أَنَّمَا خَلَقۡنَٰكُمۡ عَبَثٗا وَأَنَّكُمۡ إِلَيۡنَا لَا تُرۡجَعُونَ ١١٥﴾ [المؤمنون: ١١٥]
“তোমরা কি ধারণা করেছ যে, আমি তোমাদেরকে এমনিই সৃষ্টি করেছি? আর তোমরা আমার দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে না?” [সূরা আল-মুমিনূন, আয়াত: ১১৫] আল্লাহ আরো বলেন,
﴿أَيَحۡسَبُ ٱلۡإِنسَٰنُ أَن يُتۡرَكَ سُدًى ٣٦﴾ [القيامة: ٣٦]
“মানুষ কি ধারণা করে যে, তাদেরকে এমনিতেই ছেড়ে দেওয়া হবে?” [সূরা আল-কিয়ামাহ, আয়াত ৩৬]
এছাড়া আরো অনেক আয়াত প্রমাণ করে যে, জিন্ন-ইনসানের সৃষ্টিতে আল্লাহ তা‘আলার এক মহান উদ্দেশ্য রয়েছে। তা হলো আল্লাহর ইবাদাত করা। ভালোবাসা ও সম্মানের সাথে আল্লাহর আদেশসমূহ বাস্তবায়ন করা এবং নিষেধসমূহ থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে আল্লাহর জন্য নিবেদিত হওয়ার নাম ইবাদাত। তা‘আলা বলেন,
﴿وَمَآ أُمِرُوٓاْ إِلَّا لِيَعۡبُدُواْ ٱللَّهَ مُخۡلِصِينَ لَهُ ٱلدِّينَ حُنَفَآءَ﴾ [البينة: ٥]
“তাদেরকে এছাড়া কোনো নির্দেশ দেওয়া হয় নি যে, তারা খাঁটি মনে আল্লাহর ইবাদাত করবে।” [সূরা আল-বাইয়্যিনাহ, আয়াত: ৫]
এ হলো মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য। সুতরাং যে ব্যক্তি আল্লাহর ইবাদাত করতে অহংকার করবে, সে ব্যক্তি এ হিকমত প্রত্যাখ্যানকারী হিসাবে গণ্য হবে। যার জন্য আল্লাহ তা‘আলা মানুষ সৃষ্টি করেছেন। সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা না করলে কি হবে তাদের কর্মসমূহ প্রমাণ বহন করে যে, আল্লাহ যেন তাদেরকে অযথা সৃষ্টি করেছেন।