লগইন করুন
উত্তর: কুরাইশ বংশের কোনো ব্যক্তিকে ‘আহলুল হাল্ ওয়াল আক্বদ’ নির্বাচন করলে অথবা তিনি নিজে খলীফা হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করলে তার হাতে বায়‘আত করা ওয়াজিব। কুরাইশ বংশের বাইরে যদি কেউ খলীফা হয়ে জনগণের কাছ থেকে বায়‘আত তলব করে, তাহলে তার হাতেও বায়‘আত করতে হবে।
তবে যেসব দল ও সংগঠন মুসলিমদেরকে বিভক্ত করেছে, তাদের ঐক্য ও শক্তি বিনষ্ট করেছে, তাদের বায়‘আত গ্রহণতো দূরের কথা, বরং তাদের এই দলাদলির বিরোধিতা করতে হবে। আমরা আগেই বলেছি, মুসলিমদেরকে দলে দলে বিভক্ত করে ফেলা বর্তমান সময়ের একটি নিকৃষ্ট বিদ‘আত। সেকারণে তাদের বায়‘আতও বিদ‘আত।
যদি কেউ প্রশ্ন করে, নিম্নোক্ত আয়াতে মহান আল্লাহ বায়‘আতের প্রশংসা করেছেন:
﴿ إِنَّ ٱلَّذِينَ يُبَايِعُونَكَ إِنَّمَا يُبَايِعُونَ ٱللَّهَ يَدُ ٱللَّهِ فَوۡقَ أَيۡدِيهِمۡۚ ﴾ [الفتح: ١٠]
‘যারা আপনার কাছে বায়‘আত করে, তারা তো আল্লাহর কাছেই বায়‘আত করে। আল্লাহর হাত তাদের হাতের উপর’ (আল-ফাত্হ ১০); তাহলে আপনারা কিভাবে বায়‘আতকে বিদ‘আত বলছেন? জবাবে বলব, উক্ত আয়াতে উল্লেখিত বায়‘আত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং কুরাইশ বংশের খলীফার জন্য নির্দিষ্ট। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি তার কাঁধে বায়‘আত না থাকা অবস্থায় মারা যাবে, তার মৃত্যু হবে জাহেলী মৃত্যু’। উক্ত হাদীছে উল্লেখিত বায়‘আতও কুরাইশ বংশের খলীফা বা ক্ষমতায় চলে আসা অন্য যে কোনো খলীফার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কারণ অন্য বংশের কেউ ক্ষমতায় চলে আসলে যদি তার বায়‘আত গ্রহণ না করা হয়, তাহলে মুসলিমদের রক্তের হেফাযত সম্ভব হবে না। অতএব, যে ব্যক্তি মানুষকে এসব বায়‘আতের দা‘ওয়াত দেয়, তার বিরোধিতা করতে হবে; যে বায়‘আত থেকে নিজেকে মুক্ত রাখে, তার বিরোধিতা নয়।
যদি কেউ বলে, নিম্নোক্ত হাদীছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বায়‘আতের কথা বলেছেন, ‘যখন তিন জন সফরে বের হবে, তখন তারা তাদের একজনকে আমীর বানাবে’। জবাব হচ্ছে, এই বায়‘আত সফর অবস্থার সাথে নির্দিষ্ট। ...সেকারণে বিভিন্ন জামা‘আতের আমীরদের বায়‘আত বর্তমান যুগের একটি অন্যতম বিদ‘আত। প্রখ্যাত তাবেঈ সাঈদ ইবনুল মুসাইয়িবকে যখন প্রহার করা হয়েছিল, বিখ্যাত ছাহাবী আনাস ইবনে মালেককে যখন হাজ্জাজ অপমান করতে চেয়েছিল, ইমাম মালেককে যখন প্রহার করা হয়েছিল, ইমাম শাফেঈকে যখন লোহার বেড়ী পরিয়ে হাযির করা হয়েছিল, ইমাম বুখারীকে যখন নিশাপুর থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল, তখন বায়‘আত কোথায় ছিল? এভাবে আমাদের মুসলিম উম্মাহ্র স্বনামধন্য বহু আলেমে দ্বীনকে প্রহার করা হয়েছিল, তাদেরকে জেল-যুলম ভোগ করতে হয়েছিল এবং তাদেরকে নানাভাবে শাস্তি দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু এতদ্সত্ত্বেও তারা মানুষকে বায়‘আতের দা‘ওয়াত দেননি। অতএব, এসব বায়‘আত বর্তমান যুগের বিদ‘আত ছাড়া আর কিছুই নয়।([1])