লগইন করুন
প্রথমেই তাঁর দাওয়াত কবুল করেন মহিলাদের মধ্যে তাঁর পুণ্যশীলা স্ত্রী খাদীজা বিনতে খুওয়াইলিদ (রাঃ)। অতঃপর গোলামদের মধ্যে তাঁর মুক্তদাস যায়েদ বিন হারেছাহ, শিশু-কিশোরদের মধ্যে আলী ইবনু আবী তালিব এবং বয়স্কদের মধ্যে নিকটতম বন্ধু আবুবকর ইবনু আবী কুহাফাহ (রাযিয়াল্লাহু ‘আনহুম)।
অতঃপর আবুবকর (রাঃ)-এর দাওয়াতে ইসলাম কবুল করেন একে একে ওছমান, যুবায়ের, আব্দুর রহমান বিন ‘আওফ, সা‘দ বিন আবু ওয়াক্কাছ ও তালহা বিন ওবায়দুল্লাহ (রাযিয়াল্লাহু ‘আনহুম)। এছাড়া আবুবকরের স্ত্রী উম্মে রূমান ও মা বার্রাহ এবং দুই মেয়ে আসমা ও আয়েশা। এছাড়া আবুবকর (রাঃ) কর্তৃক ৭ জন মুক্তদাস-দাসী হ’লেন, ‘আমের বিন ফুহাইরা, উম্মে উবাইস, যিন্নীরাহ, নাহদিয়াহ ও তার মেয়ে এবং বনু মুআম্মাল-এর জনৈকা দাসী এবং বেলাল বিন রাবাহ।[1]
অতঃপর একে একে ইসলাম কবুল করেন আবু ওবায়দাহ ইবনুল জার্রাহ, আবু সালামাহ, আরক্বাম, ওছমান বিন মায‘ঊন ও তাঁর দুই ভাই কুদামাহ ও আব্দুল্লাহ, ওবায়দুল্লাহ বিন হারেছ, সাঈদ বিন যায়েদ ও তাঁর স্ত্রী ফাতেমা বিন খাত্ত্বাব (ওমরের বোন), খাববাব ইবনুল আরাত, ওমায়ের বিন আবু ওয়াক্কাছ, আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ, মাসঊদ বিন রাবী‘আহ আল-ক্বারী, সালীত্ব বিন আমর ও তাঁর ভাই হাতেব বিন আমর, ‘আইয়াশ বিন আবু রাবী‘আহ ও তাঁর স্ত্রী আসমা বিনতে সালামাহ, খুনাইস বিন হুযাফাহ, ‘আমের বিন রবী‘আহ, আব্দুল্লাহ বিন জাহশ, জা‘ফর বিন আবু তালিব ও তাঁর স্ত্রী আসমা বিনতে উমায়েস, নু‘আইম বিন আব্দুল্লাহ, খালেদ বিন সাঈদ ইবনুল ‘আছ ও তাঁর স্ত্রী উমাইনাহ বিনতে খালাফ, হাতেব বিন আমর, আবু হুযায়ফা বিন উৎবা, ওয়াক্বিদ বিন আব্দুল্লাহ, খালেদ বিন বুকায়ের ও তার ভাইগণ ‘আমের, ‘আক্বিল ও ইয়াস, ‘আম্মার, পিতা ইয়াসির ও মাতা সুমাইয়া, ছুহায়েব রূমী, আমর বিন আবাসাহ, মিক্বদাদ ইবনুল আসওয়াদ, ‘আফীফ বিন ক্বায়েস।
খাদীজা (রাঃ)-এর পরে রাসূল (ছাঃ)-এর চাচা আববাস-এর স্ত্রী উম্মুল ফযল ও তাঁর গোলাম আবু রাফে‘ ইসলাম কবুল করেন। ইবনু ইসহাকের বর্ণনা মতে প্রথম তিন বছরে উপরোক্ত ব্যক্তিগণ ইসলাম গ্রহণের পর মক্কায় ইসলাম প্রকাশ্য হয়ে পড়ে ও তা নিয়ে লোকদের মধ্যে আলোচনা হ’তে থাকে’।[2]
উপরে যাদের নামের তালিকা দেওয়া হ’ল, তারা কুরায়েশ বংশের প্রায় সকল শাখা-প্রশাখার সাথে সরাসরি কিংবা আত্মীয়তাসূত্রে যুক্ত ছিলেন। কুরায়েশ নেতাদের কাছে এঁদের খবর পৌঁছে গিয়েছিল। কিন্তু তারা এটাকে স্রেফ ব্যক্তিগত ধর্মাচার মনে করেছিলেন।[3] ফলে তাদের অনেকেই কুরায়েশ নেতাদের হাতে চরমভাবে নির্যাতিত হন।
[2]. ইবনু হিশাম ১/২৪৫-৬২; আল-বিদায়াহ ৩/২৪-৩২; আর-রাহীক্ব ৭৬ পৃঃ।
প্রসিদ্ধ আছে যে, আলীকে রাসূল (ছাঃ) নিজে লালন-পালন করার কারণেই তিনি প্রথম ইসলাম কবুল করেন। কারণ আবু ত্বালিব ছিলেন বহু পোষ্য বিশিষ্ট একটি বড় পরিবারের অধিকারী। এটা দেখে রাসূল (ছাঃ) তাঁর চাচা আববাসকে বললেন, যিনি ছিলেন বনু হাশিমের মধ্যে অধিকতর সচ্ছল ব্যক্তি। হে আববাস! আপনার ভাই আবু ত্বালিব বড় পরিবারের অধিকারী। তার উপরে কি বিপদ নাযিল হয়েছে তা তো আপনি দেখছেন। অতএব চলুন! আমরা গিয়ে তাঁর পরিবারের বোঝা কিছুটা হালকা করি। অতঃপর তারা গেলেন এবং রাসূল (ছাঃ) আলীকে ও আববাস জা‘ফরকে স্ব স্ব দায়িত্বে গ্রহণ করলেন’ (ইবনু হিশাম ১/২৪৬)। ঘটনাটি বিশুদ্ধভাবে প্রমাণিত নয় (মা শা-‘আ ২১ পৃঃ)। ইবনু আববাস বলেন, খাদীজার পরে আল্লাহর উপর প্রথম ঈমান আনেন আলী’ (আল-ইস্তী‘আব, আলী বিন আবী ত্বালিব ক্রমিক ১৮৫৫; মা শা-‘আ ২২ পৃঃ)।
[3]. ইবনু হিশাম ১/২৪৭, আর-রাহীক্ব ৭৭ পৃঃ।