লগইন করুন
১। আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করেছেন,
وَتَجْعَلُونَ رِزْقَكُمْ أَنَّكُمْ تُكَذِّبُونَ. (الواقعة : ৮২)
‘‘তোমরা [নক্ষত্রের মধ্যে তোমাদের] রিজিক নিহত আছে মনে করে আল্লাহর নেয়ামতকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছো।’’ (ওয়াকেয়া . ৮২)
২। আবু মালেক আশআ’রী (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন,
أربع في أمتي من أمر الجاهلية لا يتركونهن : الفخر با لأحساب، والطعن فى الأنساب، والإستسقاء بالنجوم، والنياحة وقال: النائحة إذا لم تتب قبل موتها تقام يوم القيامة وعليها سربال من قطران ودرع من حرب. (رواه مسلم)
‘জাহেলী যুগের চারটি কুস্বভাব আমার উম্মতের মধ্যে বিদ্যমান থাকবে, যা তারা পুরোপুরি পরিত্যাগ করতে পারবেনা। এক : আভিজাত্যের অহংকার করা। দুই : বংশের বদনাম গাওয়া। তিন : নক্ষত্রের মাধ্যমে বৃষ্টির পানি কামনা করা এবং চার : মৃত ব্যাক্তির জন্য বিলাপ করা।
তিনি আরো বলেন, ‘মৃত ব্যক্তির জন্য বিলাপ কারিনী তার মৃত্যুর পূর্বে যদি তাওবা না করে, তবে কেয়ামতের দিন তেল চিট-চিটে জামা আর মরিচা ধরা বর্ম পরিধান করে উঠবে।’ (মুসলিম)
৩। ইমাম বুখারি ও মুসলিম যায়েদ বিন খালেদ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন, ‘তিনি বলেছেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হুদাইবিয়াতে আমাদেরকে নিয়ে ফজরের নামাজ পড়লেন। সে রাতে আকাশটা মেঘাচ্ছন্ন ছিলো।’ নামাজান্তে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লোকদের দিকে ফিরে বললেন,
هل تدرون ماذا قال ربكم؟ قالو: الله ورسوله أعلم قال: أصبح من عبادي مؤمن بي وكافر فأما من قال : مطرنا بفضل الله ورحمته فذلك مؤمن بي كافر بالكوكب، وأما من قال : مطرنا بنوء كذا وكذا فذلك كافر بي مؤمن بالكوكب.
‘‘তোমরা কি জানো তোমাদের প্রভু কি বলেছেন? লোকেরা বললো, ‘আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভাল জানেন।’ তিনি বললেন, ‘আল্লাহ বলেছেন, আমার বান্দাদের মধ্যে কেউ আমার প্রতি ঈমানদার হিসেবে আবার কেউ কাফের হিসেবে সকাল অতিবাহিত করলো। যে ব্যক্তি বলেছে, ‘আল্লাহর ফজল ও রহমতে বৃষ্টি হয়েছে, সে আমার প্রতি ঈমান এনেছে আর নক্ষত্রকে অস্বীকার করেছে। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি বলেছে, ‘অমুক অমুক নক্ষত্রের ‘ওসীলায়’ বৃষ্টিপাত হয়েছে, সে আমাকে অস্বীকার করেছে আর নক্ষত্রের প্রতি ঈমান এনেছে।’’
ইমাম বুখারি ও মুসলিম আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস (রাঃ) হতে এ অর্থেই হাদীস বর্ণনা করেছেন। তাতে এ কথা আছে যে, কেউ কেউ বলেছেন, ‘অমুক অমুক নক্ষত্র সত্য প্রমাণিত হয়েছে।’ তখন আল্লাহ তাআলা আয়াত নাযিল করেন,
فَلَا أُقْسِمُ بِمَوَاقِعِ النُّجُومِ إلى قوله تعالى تُكَذِّبُونَ
‘‘আমি নক্ষত্র রাজির [অস্তমিত হওয়ার] স্থানসমূহের কসম করে বলছি, .... তোমরা মিথ্যাচারিতায় মগ্ন রয়েছো।’’ (ওয়াকিয়া : ৭৫-৮২)
এ অধ্যায় থেকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো জানা যায়ঃ
১। সূরা ওয়াকেয়ার উল্লেখিত আয়াতের তাফসীর।
২। জাহেলী যুগের চারটি স্বভাবের উল্লেখ।
৩। উল্লেখিত স্বভাবগুলোর কোন কোনটির কুফরী হওয়া উল্লেখ।
৪। এমন কিছু কুফরী আছে যা মুসলিম মিল্লাত থেকে একে বারে নিঃশ্চিহ্ন হবে না।
৫। ‘বান্দাদের মধ্যে কেউ আমার প্রতি বিশ্বাসী আবার কেউ অবিশ্বাসী হয়েছে’ এ বাণীর উপলক্ষ হচ্ছে আল্লাহ তাআলার নেয়ামত [বৃষ্টি] নাযিল হওয়া।
৬। এ ব্যাপারে ঈমানের জন্য মেধা ও বিচক্ষণতা প্রয়োজন।
৭। এ ক্ষেত্রে কুফরী থেকে বাঁচার জন্য বুদ্ধিমত্তা ও বিচক্ষণতার প্রয়োজন।
৮। لقد صدق نوء كذا وكذا [অমুক অমুক নক্ষত্রের প্রভাব সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে] এর মর্মার্থ বুঝতে হলে জ্ঞান-বুদ্ধি প্রয়োজন।
৯। তোমরা জানো কি ‘তোমাদের রব কি বলেছেন?’ এ কথা দ্বারা এটা প্রমাণিত হয় যে, কোন বিষয় শিক্ষাদানের জন্য শিক্ষক ছাত্রকে প্রশ্ন করতে পারেন।
১০। মৃত ব্যক্তির জন্য বিলাপকারিণীর জন্য কঠোর হুশিয়ারী উচ্চারণ।