লগইন করুন
সূরা কাহাফে আল্লাহ মূসার (আঃ) সাথে আল্লাহর একজন বান্দার কিছু ঘটনা উল্লেখ করেছেন। কুরআনে এ বান্দার নাম উল্লেখ করা হয় নি। তবে সহীহ হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে যে, এ বান্দার নাম ‘খাযির’ (প্রচলিত বাংলায়: খিযির)। এ একটি ঘটনা ছাড়া অন্য কোনো ঘটনায় খিযির (আঃ)-এর বিষয়ে কোনো সহীহ বর্ণনা জানা যায় না। তাঁর জন্ম, বাল্যকাল, কর্ম, নবুয়ত, কর্মক্ষেত্র, এ ঘটনার পরবর্তী কালে তার জীবন ও তাঁর মৃত্যু সম্পর্কে কোনো প্রকারের কোনো বর্ণনা কোনো সহীহ হাদীসে জানতে পারা যায় না। তিনি আবে হায়াতের পানি পান করেছিলেন ইত্যাদি কথা সবই ইহূদী-খৃস্টানদের মধ্যে প্রচলিত কথা মুসলিম সমাজে প্রবেশ করেছে।
আল্লামা মাউসিলী বলেন, খিযির (আঃ) ও ইলিয়াস (আঃ) দীর্ঘ জীবন পেয়েছেন, তাঁরা রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে দেখেছেন বা কথা বলেছেন, তাঁর পরে বেঁচে আছেন, ইত্যাদি অর্থে বর্ণিত সকল হাদীসই মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তিনি বলেন, ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বালকে খিযির (আঃ) ও ইলিয়াস (আঃ) এর দীর্ঘ জীবন ও জীবিত থাকার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়। তিনি বলেন... শয়তানই এ বিষয়টি মানুষদের মধ্যে প্রচারিত করেছে। ইমাম বুখারীকে প্রশ্ন করা হয়, খিযির (আঃ) ও ইলিয়াস (আঃ) কি এখনো জীবিত আছেন? ইমাম বুখারী বলেন, তা অসম্ভব; কারণ রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: ‘তোমরা আজকের রাত্রিটির কথা মনে রাখবে। আজ রাত্রিতে পৃথিবীর বুকে যারা আছে আজ থেকে একশত বৎসরের মাথায় তাদের কেউই পৃথিবীতে অবশিষ্ট থাকবে না।’[1] ইবনুল জাওযী খিযির (আঃ) ও ইলিয়াস (আঃ) এর দীর্ঘজীবনের বিষয়ে বলেন, এই কথাটি কুরআনের আয়াতের পরিপন্থী। আল্লাহ বলেছেন[2]: ‘আপনার পূর্বে কোনো মানুষকেই আমি অনন্ত জীবন দান করি নি; সুতরাং আপনার মৃত্যু হলে তারা কি চিরজীবী হয়ে থাকবে?’।
উল্লেখ্য যে, কোনো কোনো আলিম খিযিরের জীবিত থাকার সম্ভাবনা স্বীকার করেছেন। তাঁরা বিভিন্ন বুযুর্গের কথার উপর নির্ভর করেছেন। তবে এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ ﷺ থেকে কোনো গ্রহণযোগ্য হাদীস বর্ণিত হয় নি।
[2] সূরা (২১) আম্বিয়া: আয়াত ৩৪।