লগইন করুন
সর্ব প্রথমে অভিজ্ঞ ও সুকৌশলী ব্যক্তিবর্গের পরামর্শ অনুযায়ী একটি রিপোর্ট প্রস্ত্তত করা হয়। যে কারবার শুরু করা হবে তার কার্যক্ষমতা ও পরিধি কতদূর? এর জন্য বিভিন্ন উপকরণ ও পুঁজি কত পরিমাণ প্রয়োজন হতে পারে? এবং বাণিজ্যিক্ দিক থেকে কারবার কতটুকু উপকারী হবে--- এসব কিছু উক্ত রিপোর্টে স্থির করা হয়। একে সম্পাদন-যোগ্যতার প্রতিবেদন (FEASIBILITY REPORT) বলে।
অতঃপর কোম্পানীর একটা সংক্ষিপ্ত কাঠামো তৈরী করা হয়। যাতে কোম্পানীর নাম, কারবারের রকমত্ব, প্রয়োজনীয় পুঁজি, পরিচালকবৃন্দের নাম, আগামীতে তাদের পদচ্যুত ও পদস্থ করার নিয়ম-নীতি প্রভৃতি লিপিবদ্ধ হয়। একে বলা হয় স্মারকলিপি (MEMORANDUM)। অতঃপর কোম্পানী পরিচালনার নিয়মাবলী লিখা হয়; যাকে (ARTICLE OF ASSOCIATION) বলে। কোম্পানী অনুমোদনের জন্য মেমোরান্ডাম এবং আর্টিক্যাল অফ্ অ্যাসোশিয়েশন সহ সরকারের নিকট দরখাস্ত পেশ করা হয়। অতঃপর অর্থমম¿ণালয়ের পরিচালনাধীন বিভাগ (CORPORATE LOW AUTHORITY) এর তরফ থেকে অনুমোদন পাওয়া গেলে ‘কোম্পানী’ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এবারে আইন তাকে ‘বিকল্প ব্যক্তি’ রূপে স্বীকৃতি দেয়; যে ক্রয়-বিক্রয় করবে, মামলা-মোকাদ্দামায় বাদী-প্রতিবাদী হবে এবং লেনদেনের ক্ষেত্রে ঋণদাতা ও ঋণগ্রস্তও হতে পারবে। যাকে আইনসম্মত ব্যাক্তি (LEGAL PERSON) অথবা (JURIDICAL PERSON) বলা হয়।
কোম্পানী প্রতিষ্ঠা লাভ করলে লোকদেরকে তাতে অংশ গ্রহণ করতে আহ্বান জানানোর উদ্দেশ্যে এবারে তার সম্পূর্ণ নিয়ম-নীতি ও সাংগঠনিক কাঠামোর প্রচার করা আইনগতভাবে জরুরী হয়; যাতে জনসাধারণের নিকট এ কোম্পানী নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান রূপে পরিচিতি লাভ করে।
কোম্পানীর মৌলিক নিয়ম-নীতি এবং তার আনুসঙ্গিক জ্ঞাতব্য বিষয়াবলী সম্পর্কে জনসাধারণের অবগতির জন্য যে লিখিত বিবরণী প্রচার করা হয়, তাকে (PROSPECTUS) বলা হয়।
সরকার যখন কোম্পানীকে অনুমোদন প্রদান করে, তখন তার পুঁজি ও মূলধনের ব্যাপারটাও নির্দিষ্ট করে দেয়। এত টাকার পুঁজির অংশীদারী কার্যকর করা যেতে পারে বা এত টাকার পুঁজিতে শরীক হতে জন সাধারণকে আহ্বান করা যেতে পারে বলে টাকার অংশ সীমিত করে দেয়। একে বলা হয় ‘অনুমোদিত মূলধন’ AUTHORISED CAPITAL)। উদাহরণ স্বরূপ, ১০০ মিলিয়ন টাকা নিয়ে কারবার করতে কোম্পানী অনুমতি পেল। সুতরাং এ ১০০ মিলিয়ন টাকাই হল ‘অনুমোদিত মূলধন’। এর মধ্যে ২০ মিলিয়ন টাকা কোম্পানী প্রতিষ্ঠাতাদের দায়িত্বে থাকে; যাকে (SPONSORS CAPITAL) বলে। আর ৮০ মিলিয়ন টাকা জনসাধারণের নিকট থেকে সংগ্রহ করা হয়। যার মধ্য হতে ৬০ মিলিয়ন টাকার অংশীদারী আপাতত জারী করা হয় এবং বাকী টাকা আগামীতে কোন প্রয়োজনীয় খাতে ব্যয় করার উদ্দেশ্যে সংরক্ষিত রাখা হয়। উক্ত ৬০ মিলিয়ন টাকাকে প্রচলিত মূলধন (ISSUED CAPITAL) বলা হয়। আবার ৬০ মিলিয়ন টাকার মধ্য হতে লোকেরা যে ৫০ মিলিয়ন টাকার জন্য ফর্ম জমা করে, তাকে (SUBSCRIBED CAPITAL) বলে। যখন লোকেরা নিজেদের পুঁজি জমা করে কোম্পানীর এক-একটা অংশ গ্রহণ করে, তখন কোম্পানী প্রত্যেক অংশীদারকে একটি করে সার্টিফিকেট প্রদান করে। আর এই সার্টিফিকেট এ কথার দলীল যে, কোম্পানীতে তার এত অংশ আছে। একে বলা হয় শেয়ার (SHARE)। কারবার যত টাকার মূলধন দ্বারা আরম্ভ করা হয়, তাকে ঐকিক নিয়মে ভাগ করে একভাগকে শেয়ারের মূল্য স্থির করা হয়। যেমন, আজকাল সাধারণতঃ দশ দশ টাকার শেয়ার জারী করা হয়ে থাকে। এই মূল্য শেয়ারের উপর লিখিত হয়। আর এই মূল্যকে FACE VALUE বলা হয়। উক্ত শেয়ার কিনতে ও বেচতে পারা যায়। এর জন্য সংভার বিনিময়কেন্দ্র (STOCK EXCHANGE) প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।