লগইন করুন
ইসলাম যখন কোন বস্ত্তকে হারাম ঘোষণা করে, তখন সেই বস্ত্তর কাছে পৌছে দেয় এমন সকল প্রকার রাস্তা উপায়, উপকরণ, অসীলা ও ছিদ্রপথকেও এক সঙ্গে বন্ধ করে দেয়। বরং যে স্থান হতে সেই বস্ত্তর প্রতি যাওয়ার জন্য উদ্যোগ শুরু হয় সেই স্থানেই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে দেয়। যাতে মানুষ তার নিকটেও পৌঁছতে না পারে।
বলা বাহুল্য, ইসলাম প্রত্যেক সেই জিনিসকে হারাম ও নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে যা মুসলিমকে সূদ পর্যন্ত পৌঁছে দেয় এবং যা সূদের অসীলা ও ছিদ্রপথ। আমরা নিম্নে এমন কয়েকটি জিনিস নিয়ে আলোচনা করব যাকে সূদের উপায় ও পথ বন্ধ করার উদ্দেশ্যে ইসলাম নিষিদ্ধ বর্ণনা করেছেঃ-
- রিবাল ফায্লঃ
একই শ্রেণীভুক্ত দুটি জিনিসের হাতে-হাতে লেন-দেনের সময় অথবা দুই শ্রেণীভুক্ত দুটি জিনিসের ধারে লেন-দেনের সময় যে অতিরিক্ত ও বাড়তি অংশ নেওয়া-দেওয়া হয় তাকে ‘রিবাল ফায্ল’ বলা হয়।
সেই সকল প্রকার বস্ত্ত রিবাল ফাযলের পর্যায়ভুক্ত হতে পারে, যাতে সেই কারণ পাওয়া যায় যা নবী করীম (ﷺ) কর্তৃক বর্ণিত ছয়টি জিনিসে পাওয়া যায়। আর ছয়টি জিনিস হল, সোনা, চাঁদি, গম, যব, খেজুর এবং লবণ।
আল্লামা ইবনুল কাইয়েম বলেন, ‘ইসলাম সূদের পথ বন্ধ করার জন্যই রিবাল ফায্লকে হারাম চিহ্নিত করেছে। কারণ এতে ঋণ ভিত্তিক সূদ খাওয়ার আশঙ্কা বর্তমান। আর তা এই জন্য যে, যখন কোন ব্যক্তি এক দিরহামকে দুই দিরহামের বিনিময়ে বিক্রয় করবে, তখন ধীরে ধীরে নগদ কারবার অতিক্রম করে ধারেও এ রূপ কারবার শুরু করতে প্রয়াস পাবে; যাকে মহাজনী (ঋণী) কারবার বলা হয়। আর উক্ত কারবার সূদখোরীর একান্ত নিকটতম অসীলা। এই জন্যই যুক্তির নিক্তিতে সমীচীন এটাই ছিল যে, সুদের সকল দরজা সম্পূর্ণ বন্ধ করা হোক এবং এক দিরহামের বিনিময়ে হাতে-হাতে অথবা ধারে উভয় প্রকার বেচা-কেনা নিষিদ্ধ করা হোক। আর এ যুক্তি বিবেকের কষ্টিপাথরেও যথার্থ; যার ফলে ফাসাদ ও বিপত্তির সকল দুয়ার ও ছিদ্রপথ রুদ্ধ হয়ে যায়।
আর এক দিরহামকে দুই দিরহামের বিনিময়ে বেচা-কেনার প্রয়োজন তখন পড়ে, যখন উভয় দিরহামের মধ্যে গুণ বা বৈশিষ্ট্যগত কোন পার্থক্য বিদ্যমান থাকে; যেমন একটি উৎকৃষ্ট শ্রেণীর এবং অপরটি নিম্নশ্রেণীর অথবা একটি হালকা এবং অপরটি ভারী ইত্যাদি।[1]
উক্ত প্রকার কারবার হারাম করার মানসে উবাদাহ বিন সামেত রাযিয়াল্লাহু আনহু কর্তৃক এক হাদীসে বর্ণিত, নবী করীম (ﷺ) বলেন,
الذهب بالذهب والفضة بالفضة والبر بالبر والشعير بالشعير والتمر بالتمر والملح بالملح مثلا بمثل سواء بسواء يداً بيد، فإذا اختلفت هذه الأصناف فبيعوا كيف شئتم إذا كان يداً بيد.
অর্থাৎ, ‘‘সোনার বিনিময়ে সোনা, রূপার বিনিময়ে রূপা, গমের বিনিময়ে গম, যবের বিনিময়ে যব, খেজুরের বিনিময়ে খেজুর, লবণের বিনিময়ে লবণ ক্রয় বিক্রয়ের ক্ষেত্রে উভয় বস্ত্তকে যেমনকার তেমন, সমান সমান এবং হাতে হাতে হতে হবে। অবশ্য যখন উভয় বস্ত্তর শ্রেণী বা জাত বিভিন্ন হবে, তখন তোমরা তা যেভাবে (কমবেশী করে) ইচ্ছা বিক্রয় কর; তবে শর্ত হল, তা যেন হাতে হাতে নগদে হয়।’’ (মুসলিম, মিশকাত ২৮০৮ নং) সুতরাং বুঝা গেল যে, একই শ্রেণীভুক্ত দুটি জিনিসকে একটিকে অপরের বিনিময়ে হাতে হাতে অথবা ধারে কমবেশী করে বেচা-কেনা হারাম। অবশ্য উভয় জিনিসের শ্রেণী ও জাত ভিন্ন ভিন্ন হলে নগদ ক্রয় বিক্রয় বৈধ। নচেৎ ধারে হলে তাও অবৈধ।[2]
২- সুদখোরের নিকট চাকুরী করা অথবা সুদের কোন প্রকার সহায়তা করাঃ-
সুদের দরজা বন্ধ করার উদ্দেশ্যে ইসলাম যে সব উপায় ও পদ্ধতি ব্যবহার করেছে তার মধ্যে এক পদ্ধতি এই যে, সুদকে যেমন হারাম ও অবৈধ ঘোষণা করেছে তেমনি তার সর্বপ্রকার সাহায্য ও সহযোগিতাকেও হারাম ও নিষিদ্ধ জারী করেছে। সুতরাং সূদ নেওয়া যেমন হারাম তেমনি দেওয়াও হারাম। (অবশ্য নিরুপায় অবস্থার কথা ভিন্ন।) অনুরূপ প্রত্যেক মুসলমানের জন্য সেই কর্ম করাকেও হারাম বলা হয়েছে যে সব কর্মে বা কর্মক্ষেত্রে সূদী কারবার আছে। অতএব সুদী খাতা-পত্র লেখক, হিসাবরক্ষক, সুদীকারবারের সাক্ষ্যদাতা প্রভৃতিও এ সুদখোরের মত সমান গোনাহরই ভাগী।
এ কথা হাদীস শরীফে স্পষ্টভাবে এইরূপ এসেছেঃ
لَعَنَ رَسُولُ الله ﷺ آكِلَ الرِّبَا وَمُوكِلَهُ وَكَاتِبَهُ وَشَاهِدَيهِ وَقَالَ: هُمْ سَوَاء.
অর্থাৎ, ‘‘আল্লাহর রসূল (ﷺ) সুদখোর, সূদদাতা, সূদের লেখক এবং তার উভয় সাক্ষীকে অভিসম্পাত করেছেন এবং বলেছেন, ওরা (পাপে) সকলেই সমান।’’[3]
এই অভিশাপ ও পাপে তারাও শামিল হবে, যারা তাদের বিল্ডিং, বাড়ি বা দোকান সুদীকারবারে জড়িত কোন ব্যক্তি, কোম্পানী অথবা সুদী ব্যাংককে ভাড়া দিয়ে থাকে। আর তারাও এর আওতাভুক্ত যারা অনুরূপ সুদী ব্যাংকে নিজেদের টাকা-পয়সা জমা রাখে---যদিও তারা সুদ নেয় না বা খায় না। (নিরুপায় অবস্থায় চোর-ডাকাতের ভয়ে ব্যাংকে টাকা রাখতেই হলে তার নির্দেশ ..... পৃষ্ঠায় দেখুন। )
৩- ঋণ দেওয়ার ফলে কোন প্রকার উপকার গ্রহণ করাঃ- সুদের প্রবেশপথ বন্ধ করার লক্ষ্যে নবী করীম (ﷺ) মুসলমানদের উপর সেই সমস্ত মুনাফা ও উপকার গ্রহণকেও হারাম ঘোষণা করেছেন, যা ঋণ দেওয়ার ফলে ঋণগ্রহীতার নিকট পেশ করা হয়ে থাকে।
যেমন কোন উপহার-উপঢৌকন অথবা বিনা মজুরীতে ঋণদাতার কোন কাজ করে দেওয়া প্রভৃতি (যদিও ঋণগ্রহীতা এ সবের মাধ্যমে উপকারের বিনিময়ে প্রত্যুপকার করতে চায়, তবুও ঋণদাতার জন্য তা গ্রহণ করা বৈধ নয়।) হাদীস শরীফে প্রিয় নবী (ﷺ) বলেন,
إذا أقرض أحدكم قرضاً فأهدى إليه أو حمله على الدابة فلا يركبه ولا يقبلها إلا أن يكون جرى بينه وبينه قبل ذلك.
অর্থাৎ, ‘‘যখন তোমাদের মধ্যে কেউ (কাউকে) ঋণ দেয়। অতঃপর (ঋণগ্রহীতার তরফ থেকে) তাকে কোন উপঢৌকন দেওয়া হয় অথবা তাকে (ঋণগ্রহীতা নিজের গাড়ি বা) সওয়ারীতে চড়িয়ে কোথাও পৌঁছিয়ে দিতে চায়, তবে সে যেন তার সওয়ারীতে না চড়ে এবং তার উপঢৌকনও গ্রহণ না করে। তবে হ্যাঁ, যদি এরূপ সদ্ব্যবহার (উপঢৌকন আদান-প্রদান ঋণ দেওয়ার) পূর্ব থেকেই জারী থাকে তবে (তার পরে) অনুরূপ কিছু গ্রহণ করায় দোষ নেই।’’[4]
উক্ত হাদীসে নবী করীম (ﷺ) সেই মুনাফা ও উপকার গ্রহণ করতেও নিষেধ করেছেন যা ঋণ দেওয়ার কারণেই ঋণগ্রহীতা ঋণদাতার জন্য নিবেদন করতে চায়।
৪- চাষাবাদ ও ক্রয়-বিক্রয়ের কতক নিষিদ্ধ পদ্ধতিঃ-
সুদের মূলোৎপাটন সাধন এবং তার সকল প্রবেশদ্বার রুদ্ধ করার মানসে ইসলাম চাষাবাদ ও বেচা-কেনার কিছু পদ্ধতি ও রীতিকেও নিষিদ্ধ ও হারাম ঘোষণা করেছে। যেমন;
ক- মুখাবারাহ ; ভাগচাষীকে জমি ভাগে চাষ করতে দিয়ে ফসলের নির্দিষ্ট অংশ মালিকের জন্য নির্ধারিত করে নেওয়া, জমি বা খেতের বিশেষ বিশেষ গাছ ও তার ফসল অথবা জমির বিশেষ কোন একটা দিক নিজের জন্য নির্দিষ্ট করে নেওয়া।[5]
খ- মুযাবানাহঃ- গাছে ধরে থাকা খেজুরকে পাকা খেজুর দ্বারা বিক্রয় করা।
গ- মুহাক্বালাহঃ- খেতে ধরে থাকা কাঁচা শস্যকে পাকা ফসলের বিনিময়ে ক্রয় করা। (অনুরূপ ফল-ফসল পাকার পূর্বে বিক্রয় করাও নিষিদ্ধ।) আল্লামা ইবনে কাসীর রাহিমাহুল্লাহ বলেন, এই শ্রেণী এবং এই ধরণের অন্যান্য শ্রেণীর লেন-দেনকে এই জন্যই হারাম করা হয়েছে; যাতে সূদের কারবার সমূলে বিনাশ হয়ে যায়। কারণ, শুষ্ক হওয়ার পূর্বে বিনিমেয় উভয় ফল বা শস্যের পরিমাণ-সমতা বুঝা যায় না। এই জন্যই ফিক্হবিদগণ বলেছেন,
الجهل بالمماثلة كحقيقة المفاضلة.
অর্থাৎ, ‘‘বিনিমেয় (একই শ্রেণীভুক্ত) দুটি বস্ত্তর পরিমাণ-সমতা অজ্ঞাত হলেই তা প্রকৃত সূদের ন্যায় (কারবার।)[6]
৫- সূদ খাওয়ার জন্য ছল ও বাহানা খোঁজাঃ-
সূদের সকল প্রকার পথ ও দুয়ার বন্ধ করার উদ্দেশ্যে ইসলাম সূদ খাওয়ার জন্য কোন প্রকার ছল, ছুতা বা বাহানা করা অথবা তার জন্য কোন প্রকার ফন্দি ও কৌশল অবলম্বন করাও নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। শুধু তাই নয়, বরং কোন প্রকারের হারামকে হালাল করতে ছলবাজী করাকেও হারাম করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা ইয়াহুদীদের উপর গরু-ছাগলের চর্বিকে হারাম করেছিলেন। কিন্তু তারা বৈধ করে খাওয়ার জন্য এক কৌশল অবলম্বন করল; এ সকল চর্বিকে গলিয়ে তা বিক্রি করে তার মূল্য খেতে শুরু করেছিল।
জাবের রাযিয়াল্লাহু আনহু কর্তৃক বর্ণিত, নবী করীম (ﷺ) বলেছেন,
قاتل الله اليهود إن الله عز وجل لما حرم عليهم الشحوم جملوه ثم باعوه فأكلوا ثمنه.
অর্থাৎ, ‘‘আল্লাহ ইয়াহুদ জাতিকে ধ্বংস করুন। আল্লাহ যখন তাদের উপর চর্বি হারাম করেছিলেন তখন ওরা তা গলিয়ে বিক্রি করে তার মূল্য ভক্ষণ করেছিল।’’[7]
আল্লামা ইবনে কুদামাহ রাহিমাহুল্লাহ বলেন, ‘দ্বীনের কোন ব্যাপারেই কোন প্রকার ছল-বাহানা বৈধ নয়।’[8]
অতঃপর তিনি বাহানার এই সংজ্ঞা করেন, ‘বাহানা হল, বাহ্যতঃ বৈধ চুক্তি বা লেন-দেন করা অথচ উদ্দেশ্য থাকে এর পশ্চাতে চাতুরী ও প্রতারণার সাথে অবৈধ চুক্তি বা লেনদেন করা, অথবা হারামকে হালাল করা, অথবা ওয়াজেব চ্যুত করা, অথবা কোন হক রদ্ করা।’
[2] অতএব দৃষ্টান্তস্বরূপ ৫ কেজি বীজ ধানের বিনিময়ে ৭ কেজি সাধারণ ধান, বেশী ওজনের পুরাতন সোনা বা রূপার অলঙ্কারের বিনিময়ে কম ওজনের নতুন অলঙ্কার দেওয়া-নেওয়া এ সূদের পর্যায়ভুক্ত। সুতরাং এসব ক্ষেত্রে পুরাতন বিক্রয় করে তার দাম হাতে নিয়ে তারপর এ টাকা দিয়ে নতুন অলঙ্কার কেনা জরুরী।
তদনুরূপ ২ কিলো গম দিয়ে ২ অথবা ১ কিলো চাল হাতে হাতে নগদ বেচা-কেনা বৈধ; ধারে নয়। সুতরাং ভাদ্রমাসে ১ কিলো গম দিয়ে পৌষমাসে ১ বা দেড় কিলো চাল নেওয়া উক্ত সূদ খাওয়ার পর্যায়ভুক্ত।---অনুবাদক
[3] (মুসলিম, মিশকাত ২৮০৭ নং)
[4] (ইবনে মাজাহ, হাদীস নং ২৪৩২, মিশকাত ২৮৩১ নং) আলোচ্য হাদীসটি শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়্যাহ প্রভৃতির নিকট হাসান। কিন্তু আল্লামা আলবানীর নিকট যয়ীফ। অবশ্য ইবনে তাইমিয়্যাহ তাঁর ফতোয়ায় এ হাদীসের সমর্থনে একাধিক আসার (সাহাবার উক্তি) পেশ করেছেন। পরিশেষে তিনি বলেছেন, ‘সুতরাং নবী (সাঃ) এবং তাঁর সাহাবাবর্গ ঋণদাতাকে ঋণপরিশোধের পূর্বে ঋণগ্রহীতার হাদিয়া বা উপঢৌকন গ্রহণ করতে নিষেধ করেছেন। কেননা এ হাদিয়া পেশ করার মতলব হল ঋণ পরিশোধের মেয়াদ পিছিয়ে দিতে বলা যদিও সে এর শর্ত আরোপ করে না এবং মুখে প্রকাশ করে সে কথা বলে না। সুতরাং এরূপ করা সেই ব্যক্তির অনুরূপ হবে, যে এক হাজার নিয়ে তার বিনিময়ে নগদ হাদিয়া ও বিলম্বিত এক হাজার ফেরৎ দেয়। আর এমন কাজ অবশ্যই সুদ। পক্ষান্তরে ঋণ পরিশোধের সময়ে নেওয়া অর্থ থেকে উপহার হিসাবে কিছু বেশী দেওয়া এবং পরিশোধের পর ঋণদাতাকে কোন হাদিয়া বা উপঢৌকন দিয়ে (উপকারের বিনিময়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা) ঋণগ্রহীতার জন্য বৈধ।
যেহেতু এতে সুদের অর্থ বর্তমান থাকে না।’ আল্লামা আলবানী উক্ত উক্তির টিপ্পনীতে বলেন, ‘অবশ্যই এটা ফকীহর কথা। তবে আলোচ্য ও বিবেচ্য বিষয় হল উক্ত হাদীসের সনদ ও অর্থ।’ (আর তা যয়ীফ। দেখুন, সিলসিলাতুল আহাদীসিয যয়ীফাহ ৩/৩০৩-৩০৭, হাদীস নং১১৬২, যয়ীফ ইবনে মাজাহ ৫২৯নং, ইরওয়াউল গালীল ১৪০০ নং) এ মর্মে আবু বুরাইদা বিন আবু মূসা কর্তৃক বর্ণিত তিনি বলেন, আমি (ইরাক হতে) মদীনায় এলাম এবং আব্দুল্লাহ বিন সালাম রাযিয়াল্লাহু আনহুর সহিত সাক্ষাৎ করলাম। অতঃপর (কথা প্রসঙ্গে) তিনি বললেন, ‘তুমি এমন এক দেশে আছ যেখানে সুদ ব্যাপক আকারে প্রচলিত। সুতরাং তুমি কোন ব্যক্তিকে কোন কিছু ঋণ দিয়ে থাকলে সে যদি তোমাকে উপঢৌকনস্বরূপ এক বোঝা গমের কাঁচকি, অথবা এক বোঝা যব অথবা এক বোঝা (গবাদি পশুর খাদ্য লূস্যার্ন) পাতা দিতে আসে তাহলে তা গ্রহণ করো না। কারণ তা সূদ!’ (বুখারী ১৮১৪ নং, মিশকাত ২৮৩৩ নং)
ঋণ নেওয়ার পরে ঋণদাতার অনুগ্রহের প্রতিদান প্রকাশার্থে ঋণদাতাকে কোন জিনিস সঠিক দামের চেয়ে কমদামে বিক্রয় করা অথবা ভাড়া দেওয়া এবং ঋণদাতার তা নেওয়া সূদের পর্যায়ভুক্ত। (ফতোয়া ইবনে তাইমিয়্যাহ ২৯/৪৪১) -অনুবাদক
[5] এ বিষয়ে বৈধ পথ হল সমস্ত ফসলকে শতকরা হারে ভাগাভাগি করা। যেমন, আধাআধি, তিন বা চারভাগের ভাগ ইত্যাদি। অনুরূপ নির্দিষ্ট টাকার বিনিময়ে জমি ঠিকে বা ভাড়া দেওয়া বৈধ। অনুরূপ গাড়ি বা রিক্সার মালিক ড্রাইভারকে চালাতে দিয়ে দৈনিকহারে নির্দিষ্ট টাকা প্রত্যহ আদায় করা বৈধ নয়। কারণ, এতে উভয় পক্ষেরই ধোঁকার আশংকা থাকে। সুতরাং বৈধ পথ হল, প্রত্যেক দিনের ভাড়ার নির্দিষ্ট পার্সেন্টটেজ ভাগাভাগি করা। আসল টাকা ড্রাইভার গোপন করলে সে পাপ তার। -অনুবাদক
[6] (তাফসীর ইবনে কাসীর ১/৫৮১)
[7] (বুখারী, হাদীস নং ২২৩৬, মুসলিম ১৫৮১নং, নাসাঈ ৪৬৮৩, মুসনাদে আহমদ ১/২৫ প্রমুখ)
[8] (মুগনী ৪/৬৩)