লগইন করুন
(১) এখানে প্রথম যে বিষয়টি ফুটে উঠেছে, সেটি এই যে, আল্লাহর উপরে পূর্ণরূপে ভরসা করলে অনেক সময় যুক্তিগ্রাহ্য বস্ত্তর বাইরের বিষয় দ্বারা সত্য প্রকাশিত হয়। যেমন এখানে গরুর মাংসের টুকরা মেরে মৃতকে জীবিত করার মাধ্যমে হত্যাকারী শনাক্ত করানোর ব্যবস্থা করা হ’ল। অথচ বিষয়টি ছিল যুক্তি ও স্বাভাবিক জ্ঞানের বিরোধী।
(২) মধ্যম বয়সী গাভী কুরবানীর মধ্যে ইঙ্গিত রয়েছে যে, নৈতিকভাবে মৃত জাতিকে পুনর্জীবিত করতে হ’লে পূর্ণ নৈতিকতা সম্পন্ন ঈমানদার যুবশক্তির চূড়ান্ত ত্যাগ ও কুরবানী আবশ্যক।
(৩) নবী-রাসূলগণের আনুগত্য এবং তাঁদের প্রদত্ত শারঈ বিধান সহজভাবে মেনে নেওয়ার মধ্যেই জাতির মঙ্গল নিহিত। বিতর্কে লিপ্ত হ’লে বিধান কঠোর হয় এবং আল্লাহর গযব অবশ্যম্ভাবী হয়। যেমন বনু ইস্রাঈলগণ যদি প্রথম নির্দেশ অনুযায়ী যেকোন একটা গাভী যবেহ করত, তবে তাতেই যথেষ্ট হ’ত। কিন্তু তারা যত বেশী প্রশ্ন করেছে, তত বেশী বিধান কঠোর হয়েছে। এমনকি অবশেষে হত্যাকারী চিহ্নিত হ’লেও আল্লাহর ক্রোধে তাদের হৃদয়গুলো পাথরের মত শক্ত হয়ে গেছে।
(৪) এই গুরুত্বপূর্ণ ও শিক্ষণীয় ঘটনাকে চির জাগরুক করে রাখার জন্য আল্লাহ পাক গাভীর নামে সূরা বাক্বারাহ নামকরণ করেন। এটিই কুরআনের ২৮৬টি আয়াত সমৃদ্ধ সবচেয়ে বড় ও বরকতমন্ডিত সূরা। এই সূরার ফযীলত বিষয়ে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, তোমরা তোমাদের গৃহগুলিকে কবরে পরিণত করো না। নিশ্চয়ই শয়তান ঐ ঘর থেকে পালিয়ে যায়, যে ঘরে সূরা বাক্বারাহ পাঠ করা হয়’।[52] এ সূরার মধ্যে আয়াতুল কুরসী (২৫৫ নং আয়াত) রয়েছে, যাকে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ‘শ্রেষ্ঠতম’ (اعظم) আয়াত বলে বর্ণনা করেছেন।[53]
[53] . মুসলিম, মিশকাত হা/২১২২।