লগইন করুন
ক্বিরাআত চলা অবস্থায় ইমাম বা মুক্তাদীর আবেগে কান্না চলে আসা নামাযের জন্য ক্ষতিকর নয়। তবে কারো জন্য উচ্চস্বরে কাঁদা উচিৎ নয়। কারণ, এতে অন্যান্য নামাযীদের নামাযে ক্ষতি হয় এবং তাতে তাদের - আর বিশেষ করে মুক্তাদী কাঁদলে ইমামের - ডিষ্টার্ব হয়। অতএব মুমিনের চেষ্টা করা উচিৎ, যাতে তার কান্নার শব্দ অন্য কেউ শুনতে না পায় এবং ‘রিয়া’ (লোক-দেখানি কাজ) না হয়ে বসে। কারণ, শয়তান এই ছিদ্রপথে তাকে ‘রিয়া’র দিকে টেনে নিয়ে যেতে পারে।
অবশ্য কান্না যার এখতিয়ারে নয়; বরং যে চাপা কান্না রুখতে সমর্থ নয় এবং অনিচ্ছা সত্ত্বেও সশব্দে কান্না এসে পড়ে তার সে কাজ ধর্তব্য নয়; বরং তা ক্ষমার্হ। প্রমাণিত যে, মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) যখন ক্বিরাআত পড়তেন তখন তাঁর বক্ষস্থলে হাঁড়িতে পানি ফোটার মত (অথবা যাঁতা ঘোরার মত) কান্নার শব্দ পাওয়া যেত।[1]
আবূ বাক্র (রাঃ)-এর ব্যাপারে বর্ণিত যে, তিনি ক্বিরাআত করলে কান্নার ফলে লোকদেরকে তা শুনাতে পারতেন না।[2]
উমার (রাঃ)-এর ব্যাপারে বর্ণিত যে কাতারসমূহের পিছন থেকে তাঁর কান্নার শব্দ শুনতে পাওয়া যেত।[3]
কিন্তু তার মানে এই নয় যে, ইচ্ছা করেই উচ্চস্বরে কান্না করা যাবে। বরং মহান আল্লাহর ভয়ে যে চাপা কান্না সংবরণ করতে পারা যায় না তা দূষণীয় নয়। বলা বাহুল্য অনিচ্ছা সত্ত্বেও যে কান্না রুখতে পারা যায় না সে কান্নায় নামাযের কোন ক্ষতি হয় না।[4]
পক্ষান্তরে কান্নার ভান করতে গিয়ে কষ্ট-চেষ্টা করা উচিৎ নয়। বরং কান্না এসে পড়লে এই চেষ্টা হওয়া উচিৎ, যাতে লোকেদের ডিষ্টার্ব না হয়। আর সে কান্না হবে সাধ্য ও সম্ভব অনুসারে হাল্কা; যাতে কারো নামাযে কোন প্রকার ব্যাঘাত না ঘটে।[5] উল্লেখ্য যে, ‘‘তোমাদের কান্না না এলে কান্নার ভান কর’’ -এ হাদীস দুর্বল।[6]
[2] (বুখারী ৬৭৯নং দ্রঃ)
[3] (বুখারী ১৪৪পৃঃ তা’লীক)
[4] (সালাতুল-লাইলি অত্-তারাবীহ, ইবনে বায ১৯-২০পৃঃ)
[5] (সালাতুল-লাইলি অত্-তারাবীহ, ইবনে বায ২৪পৃঃ)
[6] (দ্রঃ যয়ীফ ইবনে মাজাহ, আলবানী ২৮১, যয়ীফুল জামেইস সাগীর, আলবানী ২০২৫নং)