মুখতাসার যাদুল মা‘আদ অনুচ্ছেদ সমুহের সূচী ও বিবরন ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রহঃ)
সুগন্ধি ব্যবহারের ক্ষেত্রে নাবী (সাঃ) এর পবিত্র আদর্শ

নাবী (ﷺ) সুগন্ধি পছন্দ করতেন এবং কেউ তাঁকে সুগন্ধি উপহার দিলে তিনি তা ফেরত দিতেন না। তিনি বলেছেন-


مَنْ عُرِضَ عَلَيْهِ رَيْحَان فَلَا يَرُدّهُ فَإِنَّهُ خَفِيف الْمَحْمَل طَيِّب الرِّيح


‘‘যার কাছে রায়হান (সুগন্ধি) পেশ করা হবে, সে যেন তা প্রত্যাখ্যান না করে, এর ঘ্রাণ খুব ভাল, তা বহন করা খুবই সহজ’’।[1] আবু দাউদ ও নাসায়ী শরীফে ريحان-এর স্থলে طيب শব্দটি এসেছে। উভয় ক্ষেত্রে অর্থ একই।

মুসনাদে বায্যারে নাবী (ﷺ) হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন- নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পবিত্র, তিনি পবিত্রকে ভালবাসেন, তিনি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, পরিষ্কাার-পরিচ্ছন্নতাকে ভালবাসেন, তিনি ক্ষমাশীল-দয়ালু, ক্ষমা করাকে ভালবাসেন, তিনি দানশীল, দান করাকে ভালবাসেন। সুতরাং তোমরা তোমাদের ঘর ও ঘরের আঙ্গিনাকে পরিস্কার রাখো। তোমরা ইহুদীদের মত নিজেদের ঘরে ময়লা-আবর্জনা রাখবেনা।

সুগন্ধির মধ্যে এমন কিছু বৈশিষ্ট রয়েছে, যা ফিরিস্তাগণ পছন্দ করেন। শয়তান তা থেকে পলায়ন করে। সুতরাং পবিত্র আত্মা পবিত্র ও সুঘ্রাণকে পছন্দ করে। আর অপবিত্র আত্মাই অপবিত্র বস্ত্তকে ভালবাসে। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন-


الْخَبِيثَاتُ لِلْخَبِيثِينَ وَالْخَبِيثُونَ لِلْخَبِيثَاتِ وَالطَّيِّبَاتُ لِلطَّيِّبِينَ وَالطَّيِّبُونَ لِلطَّيِّبَاتِ أُولَئِكَ مُبَرَّءُونَ مِمَّا يَقُولُونَ لَهُمْ مَغْفِرَةٌ وَرِزْقٌ كَرِيمٌ


‘‘দুঃশ্চরিত্র (অপবিত্র) নারীরা দুশ্চরিত্র (অপবিত্র) পুরুষদের জন্যে এবং দুশ্চরিত্র (অপবিত্র) পুরুষরা দুশ্চরিত্র (অপবিত্র) নারীদের জন্যে। সচ্চরিত্র (পবিত্র) নারীগণ সচ্চরিত্র (পবিত্র) পুরুষদের জন্যে এবং সচ্চরিত্র পুরুষগণ সচ্চরিত্রা নারীদের জন্যে। তাদের সম্পর্কে লোকে যা বলে, তার সাথে তারা সম্পর্কহীন। তাদের জন্যে রয়েছে ক্ষমা ও সম্মানজনক জীবিকা’’।[2] এই আয়াতটি যদিও পবিত্র এবং অপবিত্র নারী পুরুষদের ক্ষেত্রে নাযিল হয়েছে, তথাপিও এর দ্বারা পবিত্র-অপবিত্র কথা, কাজ, খাদ্য, পানীয়, পোশাকাদি, সুঘ্রাণ ইত্যাদি সবকিছুকেই অন্তর্ভুক্ত করে। طيب (পবিত্র) এবং خبيث (অপবিত্র) শব্দ দু’টি আম অর্থাৎ ব্যাপক অর্থবোধক। তাই এর দ্বারা সকল পবিত্র বস্ত্ত এবং সকল অপবিত্র বস্ত্তই উদ্দেশ্য। আর যদি ধরে নেওয়া হয় যে, শব্দ দু’টি দ্বারা কেবল পবিত্র নারী-পুরুষই বুঝানো হয়েছে, তারপরও বলা যায়, অর্থের মধ্যে যে ব্যাপকতা রয়েছে, তা সকল বস্ত্তকেই অন্তর্ভুক্ত করে।

[1]. সহীহ মুসলিম, অধ্যায়ঃ সুগন্ধি ব্যবহার প্রসঙ্গে।

[2]. সূরা নূর-২৪:২৬