লগইন করুন
নাবী (ﷺ) থেকে সহীহ সূত্রে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন-
لاَ تَبْدَءُوهُمْ بِالسَّلاَمِ وَإِذَا لَقِيتُمُوهُمْ فِى الطَّرِيقِ فَاضْطَرُّوهُمْ إِلَى أَضْيَقِ الطَّرِيقِ
‘‘তোমরা ইহুদী-খৃষ্টানদেরকে আগে সালাম দিওনা। আর তোমরা যখন তাদের সাথে রাস্তায় সাক্ষাত করবে তখন তাদেরকে সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত রাস্তার দিকে যেতে বাধ্য কর’’।[1] কিন্তু বলা হয় যে, এই হাদীসটি একটি বিশেষ ঘটনার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। সেটি হচ্ছে, নাবী (ﷺ) যখন বনী কুরায়যায় গেলেন তখন তিনি বললেন- তোমরা তাদেরকে প্রথমে সালাম দিওনা। এখন প্রশণ হল এই হুকুম কি সকল যিম্মী তথা মুসলিম রাষ্ট্রে বসবাসকারী সকল অমুসলিমদের জন্য? না যাদের অবস্থা চুক্তি ভঙ্গকারী বনী কুরায়যার ন্যায় শুধু তাদের জন্যেই? এ ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে। তবে সহীহ মুসলিম শরীফে রয়েছে, নাবী (ﷺ) বলেছেন- তোমরা ইহুদী-খৃষ্টানদেরকে আগে সালাম দিওনা। আর যখন তাদের সাথে রাস্তায় সাক্ষাত করবে তখন তাদেরকে রাস্তার সংকীর্ণতম স্থান দিয়ে যেতে বাধ্য কর। সুতরাং প্রাধান্যপ্রাপ্ত কথা হচ্ছে সকল ইহুদী-খৃষ্টানদের জন্য এই হুকুম। অর্থাৎ তাদেরকে আগে সালাম দেয়া যাবেনা।
তাদের সালামের জবাব দেয়ার ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে সঠিক মত হচ্ছে তাদের সালামের জবাব দেয়া ওয়াজিব। ইহুদী-খৃষ্টান ও বিদআতীদের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে, আমাদেরকে বিদআতীদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতে বলা হয়েছে। যাতে তারা বিদআত পরিত্যাগ করতে বাধ্য হয়। নাবী (ﷺ) থেকে সহীহ সূত্রে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি একবার একটি মজলিসের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। সেখানে মুসলিম-অমুসলিম সকল শ্রেণীর লোকই ছিল। তিনি তাদের সকলকে সালাম দিলেন।
তিনি রোমের সম্রাট হিরাক্লিয়াস এবং অন্যান্য অমুসলিম সম্রাটদের নিকট প্রেরিত চিঠির শুরুতে লিখতেনঃ السلام على من اتبع الهدى ‘‘হিদায়াতপ্রাপ্ত লোকদের উপরই আল্লাহর পক্ষ হতে শান্তি বর্ষিত হোক’’। নাবী (ﷺ) থেকে বর্ণনা করা হয় যে, চলন্ত কাফেলার একজন যদি সালাম দেয় তাতেই যথেষ্ঠ হবে। মজলিসে উপস্থিত একজন সালামের জবাব দিলেই যথেষ্ট হবে। যারা সালামের জবাব দেয়াকে ফরযে কেফায়া মনে করেন তারা এ মতই পোষণ করেছেন। এই মতটি খুবই সুন্দর। কিন্তু এই মর্মে বর্ণিত হাদীসটি সহীহ নয়। কেননা এই বর্ণনার সনদে সাঈদ বিন খালেদ নামক একজন রাবী আছেন। আবু যুরআ ও আবু হাতেম (রহঃ) তাকে যঈফ বলেছেন।
তাঁর পবিত্র সুন্নাত এই ছিল যে, কেউ যদি তাঁকে অন্যের পক্ষ হতে সালাম পৌঁছিয়ে দিত, তিনি তার জবাব দিতেন এবং যে সালাম পৌঁছিয়ে দিত তারও জবাব দিতেন। শরীয়ত বিরোধী এবং কোন পাপ কাজের সাথে জড়িত ব্যক্তিকে তাওবা না করা পর্যন্ত তিনি আগে সালাম দিতেন না। সে সালাম দিলে তিনি তার জবাবও দিতেন না।