লগইন করুন
তিনি কারও বাড়িতে দাওয়াত খেতে গেলে বাড়ি ওয়ালার জন্য দু’আ না করে ফেরত আসতেন না। ইমাম আবু দাউদ (রহঃ) আবুল হাইছাম (রাঃ) এর ঘটনায় উল্লেখ করেছেন যে, আবুল হাইছাম তাঁকে এবং তাঁর সাহাবীদেরকে দাওয়াত করলেন। খাওয়া শেষে তিনি বললেন- তোমাদের ভাইকে ছাওয়াব দান কর। তারা বললেন- কিভাবে আমরা তাকে ছাওয়াব প্রদান করব? তিনি বললেন- কাউকে যখন কোন ঘরে খাওয়ার জন্য ডাকা হবে তখন পানাহার করার পর সে যদি মেজবানের জন্য (নিমন্ত্রণকারীর জন্য) দু’আ করে তাহলে এটিই হবে ঘর ওয়ালাকে ছাওয়াব দেয়ার নামান্তর।
বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি একবার সাদ বিন উবাদার ঘরে দাওয়াত খেয়ে এই দু’আ করেছেনঃ
أَفْطَرَ عِنْدَكُم الصَّائِمُونَ وَأَكَلَ طَعَامَكُمْ الْأَبْرَارُ وَصَلَّتْ عَلَيْكُمْ الْمَلَائِكَةُ
‘‘রোযাদারগণ তোমাদের নিকট ইফতার করেছে, সৎ লোকেরা তোমাদের খাবার গ্রহণ করেছেন এবং ফিরিস্তাগণ তোমাদের জন্য দু’আ করেছে’’।[1]
সহীহ সূত্রে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি একবার রাত্রিতে স্বীয় ঘরে প্রবেশ করলেন এবং খানা তালাশ করলেন। কিন্তু কিছুই পেলেন না। তখন তিনি এই দু’আ পাঠ করলেন-
اللّٰهُمَّ أَطْعِمْ مَنْ أَطْعَمَنِى وَاسْقِ مَنْ سَقَانِى
‘‘হে আল্লাহ্ যে আমাকে খাওয়াবে, তুমি তার খাদ্যে বরকত দান কর আর যে আমাকে পান করাবে, তুমি তাকেও পান করাও’’।[2] যারা ফকীর-মিসকীনদেরকে খাদ্য খাওয়াত তিনি তাদের জন্য দু’আ করতেন এবং তাদের প্রশংসা করতেন। তিনি ছোট-বড়, স্বাধীন-ক্রীতদাস সকলের সাথেই বসে খাবার খেতে পছন্দ করতেন। সুনান গ্রন্থকারগণ বর্ণনা করেছেন যে, একবার তিনি কুষ্ঠরোগীর হাত ধরে তাঁর সাথে একই থালায় খেতে বসিয়ে বলেছেন- বিসমিল্লাহ্ বলে খাও। আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস কর এবং তাঁরই উপর ভরসা কর।
তিনি ডান হাতে খেতে আদেশ করেছেন এবং বাম হাতে খেতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলতেন- শয়তান বাম হাতে খায় এবং বাম হাতে পান করে। এই হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, বাম হাতে খাওয়া হারাম। এটিই সঠিক মত। কিছু লোক তাঁর কাছে অভিযোগ করল যে, তারা খায়, কিন্তু পরিতৃপ্ত হয়না। তিনি তাদেরকে একত্রিত হয়ে খাওয়ার আদেশ দিলেন এবং বললেন- তারা যেন পৃথক হয়ে না খায়। আর তিনি তাদেরকে খাওয়ার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করতে তথা বিসমিল্লাহ্ বলতে আদেশ করেছেন।
নাবী (ﷺ) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন- ‘‘তোমরা আল্লাহর যিকির এবং সলাতের মাধ্যমে খাবার হজম কর। খেয়েই ঘুমিয়ে যেওনা’’। এতে তোমাদের অন্তরসমূহ কঠিন হয়ে যাবে। হাদীসটি সহীহ হওয়ার সম্ভাবনা বেশী। বিষয়টি অভিজ্ঞতা দ্বারা সত্যায়িত ও প্রমাণিত।[3]
[2]. মুসলিম, হাএ. হা/৫২৫৭ ইফা.৫১৮৯, ইসে. হা/৫২০, মুসনাদে আহমাদ, মাশা. হা/২৩৮০৯
[3]. এই হাদীসটি সহীহ নয়। ইবনুস সুন্নী দিবা-রাত্রির আমলে হাদীসটি উল্লেখ করেছেন। ইবনে হিববানও যুআফাতে (১/১৯৯) উল্লেখ করেছেন। বাস্তব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম হাদীসের বক্তব্য সঠিক সাব্যস্ত করার ইচ্ছা পোষণে উপরোক্ত মন্তব্য করে থাকবেন বলে মনে করি। নচেৎ অভিজ্ঞতা দ্বারা হাদীসের সনদ যাচাই করা নির্ভরযোগ্য সকল হাদীছ বিশারদগণের নিকট অগ্রায্য। ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী রহঃ) হাদীসটিকে দুর্বল বলেছেন। তবে অর্থটি শক্তিশালী। (দেখুনঃ তালখীসুল আযকার)