লগইন করুন
তিনি যখন খাবারে হাত রাখতেন তখন (بِسْمِ اللهِ) বিসমিল্লাহ্ বলতেন। তিনি তা বলারও আদেশ দিতেন। বিসমিল্লাহ্ বলতে ভুলে গেলে- بِسْمِ اللهِ فِىْ أَوَّلِهِ أَوْ آخِرِهِ
‘‘বিসমিল্লাহ বলে শুরু করছি এবং শেষেও আল্লাহর নাম উচ্চারণ করছি’’।[1] এই হাদীসটি সহীহ। সুতরাং খাওয়ার শুরুতে বিসমিল্লাহ্ বলা উচিৎ। যে ব্যক্তি পানাহার করার সময় বিসমিল্লাহ্ বলবেনা, শয়তান তার পানাহারে অংশীদার হবে। খাওয়ার শুরুতে বিসমিল্লাহ্ ওয়াজিব হওয়ার হাদীসগুলো সহীহ এবং সুস্পষ্ট। এর বিপরীতে কোন হাদীস বা ইজমায়ে উম্মাত বর্ণিত হয়নি।
একসাথে একাধিক ব্যক্তি খাদ্য গ্রহণ করার সময় একজনের বিসমিল্লাহ্ বলাই কি যথেষ্ট হবে এবং শয়তান অংশ গ্রহণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে কি? এ ব্যাপারে ইমাম শাফেঈ (রহঃ) এর বক্তব্য হচ্ছে, এমতাবস্থায় একজনের বিসমিল্লাহ বলাই যথেষ্ট। এও বলা হয় যে, সম্মিলিতভাবে খাদ্য গ্রহণ করার সময় সকলকেই বিসমিল্লাহ্ বলতে হবে। যে ব্যক্তি বিসমিল্লাহ বলবে শয়তান কেবল তার সাথে অংশ গ্রহণ করা থেকেই বঞ্চিত হবে। অন্যদের সাথে অংশ গ্রহণ করা থেকে বঞ্চিত হবেনা।
ইমাম তিরমিযী (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) হতে সহীহ সাব্যস্ত করে বর্ণনা করেন যে, একদা নাবী (ﷺ) তাঁর ছয়জন সাহাবীকে নিয়ে খাদ্য গ্রহণ করছিলেন। এমন সময় একজন গ্রাম্য লোক এসে দুই লুকমায় সমস্ত খানা সাবার করে ফেলল। নাবী (ﷺ) তখন বললেন- এই লোকটি যদি খাবার সময় বিসমিল্লাহ্ বলত তাহলে এই খানা সকলের জন্য যথেষ্ট হত। ইহা জানা কথা যে, নাবী (ﷺ) ও তাঁর সাহাবীগণ বিসমিল্লাহ্ বলেছিলেন। হুযায়ফা (রাঃ) থেকে এক হাদীছে এসেছে, তিনি বলেন- আমরা একবার খাদ্য গ্রহণ করার জন্য রসূল (ﷺ)-এর সাথে উপস্থিত হলাম। তখন হঠাৎ একটি বালিকা এসে খাদ্যে হাত প্রবেশ করাতে লাগল। মনে হচ্ছিল কে যেন তাকে খানার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। রসূল (ﷺ) তার হাত ধরে ফেললেন। অতঃপর একটি গ্রাম্য লোক আসলে তিনি তার হাতও ধরে ফেললেন। অতঃপর তিনি বললেন- যে খাদ্যে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা হয়না (বিসমিল্লাহ বলা হয়না) শয়তান সেই খাদ্যকে নিজের জন্য হালাল মনে করে। খাদ্যকে নিজের জন্য হালাল করতে (খাওয়ার জন্যে) শয়তান এই বালিকাটিকে সাথে নিয়ে এসেছে। আমি তার হাত ধরে ফেলেছি। একই উদ্দেশ্যে সে এই গ্রাম্য লোকটিকেও নিয়ে এসেছে। আমি তার হাতও ধরে ফেলেছি। ঐ আল্লাহর শপথ! যার হাতে আমার প্রাণ রয়েছে, তখন বালিকা ও গ্রাম্য লোকটির হাতের সাথে শয়তানের হাতও আমার হাতেই ছিল। অতঃপর তিনি বিসমিল্লাহ্ বলে খাদ্য গ্রহণ শুরু করলেন।
এই হাদীস থেকে প্রমাণিত হল যে, সম্মিলিত হয়ে খাদ্য গ্রহণ করার সময় সকলকেই বিসমিল্লাহ্ বলতে হবে। একজনের বিসমিল্লাহ যথেষ্ট হলে শয়তান খাদ্যে হাত রাখার সুযোগ পেতনা। তবে এর উত্তরে বলা যেতে পারে যে, নাবী (ﷺ) তখনও খাদ্য গ্রহণ শুরু করেন নি। বালিকাটি প্রথমেই বিসমিল্লাহ্ না বলেই শুরু করে দিয়েছিল। গ্রাম্য লোকটিও তাই করেছিল। তাই উভয়ের সাথেই শয়তান যোগ দিয়েছিল।