লগইন করুন
উত্তর:
بسم الله الرحمن الرحيم و الحمد لله رب العالمين و الصلاة و السلام على نبينا محمد و على آله و أصحابه أجمعين .
(রহমান, রহীম আল্লাহর নামে; আর সকল প্রশংসা জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য; আর সালাত ও সালাম আমাদের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি এবং তাঁর পরিবার-পরিজন ও সকল সাহাবীর প্রতি)।
নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদিস বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেছেন:
« الذَّهَبُ بِالذَّهَبِ وَالْفِضَّةُ بِالْفِضَّةِ وَالْبُرُّ بِالْبُرِّ وَالشَّعِيرُ بِالشَّعِيرِ وَالتَّمْرُ بِالتَّمْرِ وَالْمِلْحُ بِالْمِلْحِ مِثْلاً بِمِثْلٍ سَوَاءً بِسَوَاءٍ يَدًا بِيَدٍ » . ( رواه مسلم ) .
“স্বর্ণ স্বর্ণের বিনিময়ে, রৌপ্য রৌপ্যের বিনিময়ে, গম গমের বিনিময়ে, যব যবের বিনিময়ে, খেজুর খেজুরের বিনিময়ে এবং লবন লবনের বিনিময়ে লেনদেন সমান সমান ও নগদ নগদ হতে হবে।”[1] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আরও বর্ণিত আছে, তিনি বলেন:
« مَنْ زَادَ أَوِ اسْتَزَادَ فَقَدْ أَرْبَى » . ( رواه مسلم ) .
“যে ব্যক্তি তার অতিরিক্ত কিছু দিবে অথবা অতিরিক্ত কিছু গ্রহণ করবে, তবে তা সুদ হবে।”[2] নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও হাদিস বর্ণিত আছে যে, তাঁর নিকট উৎকৃষ্ট মানের খেজুর নিয়ে আসা হলে তিনি সেই ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেন, তখন জবাবে সাহাবীগণ বলেন: “আমরা দুই সা‘ খেজুরের বিনিময়ে এ উৎকৃষ্ট মানের এক সা‘ এবং তিন সা‘য়ের বিনিময়ে দুই সা‘ খেজুর ক্রয় করে থাকি।” তখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ধরেনের কেনাবেচাকে পরিহার করার নির্দেশ দিলেন এবং বললেন এ ধরনের ক্রয়-বিক্রয় নির্ভেজাল সুদ। অতঃপর তিনি তাঁদেরকে নির্দেশনা প্রদান করে বলেন, তাঁরা যেন নিম্ন মানের খেজুর বিক্রয় করে দেয়, তারপর সেই বিক্রয়লব্ধ দিরহাম দিয়ে উৎকৃষ্ট মানের খেজুর ক্রয় করে।”[3]
এসব হাদিস থেকে আমরা এটা গ্রহণ করতে পারি যে, স্বর্ণের বিনিময়ে স্বর্ণ পরিবর্তনের পর যে কোনো একটির সাথে (গহনা বানানো বাবদ) অতিরিক্ত মজুরি ধার্য করার ব্যাপারে প্রশ্নকর্তা যা উল্লেখ করেছেন, তা একটি হারাম লেনদেন তথা অবৈধ এবং সুদের অন্তর্ভুক্ত, যা থেকে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন।
তাই এ ব্যাপারে সঠিক পদ্ধতি হল: কোনো প্রকার পূর্ব চুক্তি ব্যতীত ভিন্ন জাতের কোনো মুদ্রার মূল্যের বিনিময়ে ভাঙ্গাচুরা পুরাতন স্বর্ণ বিক্রয় করা এবং স্বর্ণের মালিক কর্তৃক মূল্য গ্রহণ করার পর নতুন জিনিস ক্রয় করা। আর সবচেয়ে উত্তম হল অন্য দোকানে গিয়ে নতুন জিনিস অনুসন্ধান করা; তারপর যদি তা না পাওয়া যায়, তাহলে যার নিকট সে স্বর্ণ বিক্রয় করেছিল তার নিকট ফিরে আসবে এবং দিরহাম তথা প্রচলিত মুদ্রার মাধ্যমে তা ক্রয় করবে; আর এ অবস্থায় যদি দিরহামের পরিমাণ বেশি হয়, তাহলে স্বর্ণের বিনিময়ে স্বর্ণের লেনদেন না হওয়ার কারণে তাতে কোনও প্রকার সমস্যা নেই; আর যদি দোকানদার নিজেই স্বর্ণকার হয়, তাহলে তার (বিক্রেতার) জন্য এ কথা বলার সুযোগ রয়েছে যে, তুমি এ স্বর্ণ গ্রহণ কর এবং তা দিয়ে আমার জন্য পছন্দসই অলংকার তৈরি করে দাও; আর যখন অলংকার তৈরির কাজ শেষ হবে, তখন আমি তোমাকে তার পারিশ্রমিক দিয়ে দেব; আর তাতেও কোনো প্রকার অসুবিধা নেই।
[2] ইমাম মুসলিম র. আবূ সা‘ঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে হাদিসটি বর্ণনা করেছেন, হাদিস নং- ৪১৪৮
[3] বুখারী, অধ্যায়: ক্রয়-বিক্রয় ( كتاب البيوع ), পরিচ্ছেদ: উৎকৃষ্ট মানের খেজুরের বিনিময়ে তার চেয়ে নিম্ন মানের খেজুর ক্রয়-বিক্রয় প্রত্যয় প্রসঙ্গে ( باب إذا أراد بيع التمر بتمر خير منه ), হাদিস নং- ২০৮৯; মুসলিম, অধ্যায়: বাগান বর্গাচাষ বা পানি সিঞ্চন ( كتاب المساقاة ), পরিচ্ছেদ: সমান সমানভাবে খাদ্যদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় প্রসঙ্গে ( باب بَيْعِ الطَّعَامِ مِثْلاً بِمِثْلٍ ), হাদিস নং- ৪১৬৬