লগইন করুন
আত্মীয়-স্বজনদের সাথে ভাল ব্যবহার করার উপর ইসলাম ধর্ম বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করেছে এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছে। যারা এ সম্পর্ক নষ্ট করবে তারা জান্নাতে প্রবেশ থেকে বঞ্চিত হবে। আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ
)فَهَلْ عَسَيْتُمْ إِنْ تَوَلَّيْتُمْ أَنْ تُفْسِدُوا فِي الْأَرْضِ وَتُقَطِّعُوا أَرْحَامَكُمْ أُوْلَئِكَ الَّذِينَ لَعَنَهُمْ اللَّهُ فَأَصَمَّهُمْ وَأَعْمَى أَبْصَارَهُمْ(
‘‘ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে সম্ভবতঃ তোমরা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করবে এবং তোমাদের আতমীয়তার বন্ধন ছিন্ন করবে। আল্লাহ এদেরকেই করেন অভিশপ্ত আর করেন বধির ও দৃষ্টিশক্তিহীন’’। (সূরা মুহাম্মাদঃ ২২-২৩) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আত্মীয়তার সম্পর্ক ঠিক রাখতে উৎসাহ দিয়েছেন এবং তা ছিন্ন করা থেকে সাবধান করেছেন। তিনি বলেনঃ আল্লাহ তাআলা মাখলূকাত সৃষ্টি শেষ করলে রক্ত সম্পর্কীয় আত্মীয়তার বন্ধন উঠে দাঁড়ালো এবং আল্লাহর দরবারে আরজ করে বললোঃ হে আল্লাহ! আপনার কাছে আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করা হতে আশ্রয় চাই। আল্লাহ বললেনঃ ঠিক আছে; যে ব্যক্তি তোমার সাথে সম্পর্ক মিলিত রাখবে আমিও তার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখবো। আর যে ব্যক্তি তোমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবে আমিও তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবো। এতে কি তুমি সন্তুষ্ট নও? জবাবে আত্মীয়তার বন্ধন বললঃ হ্যাঁ, আমি সন্তুষ্ট আছি’’।[1] নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেনঃ
لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَاطِعُ رَحِمٍ
‘‘আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবেনা’’।[2] তিনি আরো বলেনঃ
مَنْ سَرَّهُ أَنْ يُبْسَطَ عَلَيْهِ رِزْقُهُ أَوْ يُنْسَأَ فِي أَثَرِهِ فَلْيَصِلْ رَحِمَهُ
‘‘যে ব্যক্তি চায় তার রিজিক বৃদ্ধি হোক এবং বয়স বৃদ্ধি হোক সে যেন আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখে’’।[3]
আখেরী যামানায় কিয়ামতের পূর্বে ইসলামের এই সুন্দর নিদর্শনটির প্রতি অবহেলা করা হবে। লোকেরা কারণে অকারণে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করবে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
وَلَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يَظْهَرَ الْفُحْشُ وَقَطِيعَةُ الرَّحِمِ
‘‘অশ্লীল কর্ম বিস্তার এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক নষ্ট না করা পর্যন্ত কিয়ামত প্রতিষ্ঠিত হবেনা’’।[4]
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর বাণী সত্যে পরিণত হয়েছে। এমন কোন ইসলামী সমাজ পাওয়া যাবেনা যেখানে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা হচ্ছেনা। মাসের পর মাস, বছরের পর বছর চলে যায়, অথচ লোকেরা তাদের আত্মীয়-স্বজনের খোঁজ-খবর রাখেনা। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় একই গ্রাম কিংবা শহরে বসবাস করা সত্ত্বেও একে অপরের বাড়ীতে যাতায়াত করেনা। বিশেষ করে ধনীরা তাদের অসহায় আত্মীয়দের পরিচয় পর্যন্ত ভুলে যায়। কোন কোন ক্ষেত্রে হঠাৎ দেখা হয়ে গেলে চিনেও না চেনার ভান করে থাকে। (আল্লাহুল মুস্তাআন)
[2] - মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল আদাব।
[3] - বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুল আদাব।
[4] - মুসনাদে আহমাদ। আহমাদ শাকের সহীহ বলেছেন।