লগইন করুন
মহান আল্লাহ বলেন,
وأَنَّ الْمَسَاجِدَ للهِ فَلاَ تَدْعُوْا مَعَ اللهِ أَحَداً
অর্থাৎ, আর অবশ্যই মসজিদসমূহ আল্লাহর। সুতরাং আল্লাহর সঙ্গে আর কাউকে আহবান করো না। (কুরআন মাজীদ ৭২/১৮)
তিনি আরো বলেন, “নিজেদের উপর কুফরের সাক্ষ্য দিয়ে মুশরিকদের জন্য আল্লাহর মসজিদ আবাদ করা শুদ্ধ ও শোভনীয় নয়। ওরা তো এমন, যাদের সকল আমল ব্যর্থ এবং ওরা দোযখে স্থায়ীভাবে অবস্থান করবে।” (কুরআন মাজীদ ৯/১৭)
মসজিদে কবর থাকা শির্কের এক অসীলা। তাই তো মসজিদে কোন মাইয়্যেত দাফন করা বৈধ নয়। বৈধ নয় কবর-ওয়ালা মসজিদে নামায পড়া। এ জন্য মসজিদে কবর থাকলে তা তুলে কবরস্থানে পুনর্দাফন করা ওয়াজেব। (মাজাল্লাতুল বুহূসিল ইসলামিয়্যাহ্ ১০/৭৭)
কা’বার মসজিদে বিবি হা-জার (হাজেরা) বা অন্য কারো কবর নেই। এ ব্যাপারে কোন কোন ঐতিহাসিকদের কথা মান্য নয়। কারণ, তাঁদের নিকট কোন দলীল ও প্রমাণ নেই। অনুরুপ মহানবী (ﷺ) এর কবর হযরত আয়েশার হুজরায় হয়েছে, মসজিদে নয়। (মাজাল্লাতুল বুহূসিল ইসলামিয়্যাহ্ ১০/৮০, ২৬/৮৬)
মৃত্যু-শয্যায় শায়িত থেকে মহানবী (ﷺ) উম্মতকে অসিয়ত করে বলেছেন, “আল্লাহ ইয়াহুদ ও খ্রীষ্টানদেরকে অভিশাপ করুন; তারা তাদের আম্বিয়ার কবরসমূহকে মসজিদ বানিয়ে নিয়েছে।” (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত ৭১২নং)
তিনি আরো বলেছেন, “সাবধান! তোমাদের পূর্ববর্তী লোকেরা তাদের আম্বিয়া ও নেক লোকেদের কবরকে মসজিদ বানিয়ে নিত। শোন! তোমরা যেন কবরসমূহকে মসজিদ বানিয়ে নিও না। আমি তোমাদেরকে এ ব্যাপারে নিষেধ করছি।” (মুসলিম, মিশকাত ৭১৩ নং)
তিনি বলেন, “তোমাদের নিজ নিজ ঘরে কিছু (নফল বা সুন্নত) নামায পড়; আর তা (ঘর) কে কবর করে নিওনা।” (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত ৭১৪নং) অর্থাৎ কবরস্থানে যেমন নামায পড়া হয় না, ঠিক তেমনি নামায না পড়ে ঘরকে কবরের মত করে রেখো না।
তিনি আরো বলেন, “তোমরা কবরের উপর বসো না এবং কবরের দিকে মুখ করে নামায পড়ো না।” (মুসলিম, সহীহ ৯২৭ নং, প্রমুখ)
ঈদগাহ্ বা মসজিদের সীমানার বাইরে কবর হলে এবং মাঝে দেওয়াল বা প্রাচীর থাকলে ঐ ঈদগাহ্ বা মসজিদে নামায দূষণীয় নয়। তবে যদি ঐ কবরবাসীর তা’যীমের উদ্দেশ্যে তার পাশে মসজিদ বানানো হয়ে থাকে, তাহলে তাতে নামায বৈধ নয়। (মাজাল্লাতুল বুহূসিল ইসলামিয়্যাহ্ ১৫/৭৮-৭৯)
রমযান, ঈদ, শবে কদর, শবেবরাত(?) প্রভৃতির দিবারাত্রে মসজিদকে ফুল বা অতিরিক্ত আলোকমালা দিয়ে সুসজ্বিত করা বিদআত। পরন্তু এমন কাজ কাফেরদের অনুরুপ। আর কাফেরদের অনুকরণ মুসলিমদের জন্য বৈধ নয়। (ঐ ২৫/৬৮-৬৯)
কোন মসজিদে বিদআত কর্ম হতে থাকলে তা দূর করার চেষ্টা করতে হবে। সম্ভব না হলে সে মসজিদ ত্যাগ করে বিদআতশূন্য মসজিদে নামায পড়া কর্তব্য। (ঐ ১৮/৮৯) মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, একদা আমি ইবনে উমার (রাঃ) এর সঙ্গে ছিলাম। নামায পড়ার জন্য তিনি এক মসজিদে প্রবেশ করলেন। সেখানকার মুআযযিন যোহ্র বা আসরের আযানের পর পুনরায় নামাযের জন্য ডাক-হাঁক শুরু করলে তিনি বললেন, ‘এখান হতে বের হয়ে চল। কারণ এখানে বিদআত রয়েছে।’ অন্য এক বর্ণনায় তিনি বললেন, ‘(এই মসজিদ থেকে) বিদআতে আমাকে বের করে দিল।’ (আবূদাঊদ, সুনান ৫৩৮, বায়হাকী ১/৪২৪, ত্বাব)
বিদআতের বিরুদ্ধে লড়ে সফল না হয়ে বিদআতশূন্য সালাফী জামাআত পৃথক মসজিদ করলে, সে মসজিদকে ‘মাসজিদে যিরার’ বলা যাবে না। বরং বিদআত কর্মে সহমত প্রকাশ না করে ফিতনা দূর করার মানসে পৃথক মসজিদ করাই যুক্তিযুক্ত। (মাজাল্লাতুল বুহূসিল ইসলামিয়্যাহ্ ৩৫/৮২) যে মসজিদ সৎপথের পথিক হকপন্থী মুসলিমদের কোন ক্ষতি সাধনের উদ্দেশ্যে, জামাআতের প্রতি বিদ্রোহ করে, মুসলিমদের মাঝে বিভেদ সৃষ্টির ইচ্ছায় এবং আল্লাহ ও তদীয় রসূলের বিরুদ্ধে যারা সংগ্রাম করে তাদের গোপন ঘাঁটি স্বরুপ নির্মাণ করা হয়, তাই হল কুরআন মাজীদে উল্লেখিত ‘মাসজিদে যিরার।’ (কুরআন মাজীদ ৯/১০৭ দ্র:)