লগইন করুন
১। হারানো জিনিস খোঁজা; মহানবী (ﷺ) বলেন, “যে ব্যক্তি কাউকে মসজিদে তার হারানো বস্তু খোঁজ করতে দেখবে, সে ব্যক্তি যেন তাকে বলে, ‘আল্লাহ তোমার জিনিস ফিরিয়ে না দিক।’ কারণ, মসজিদসমূহ এ উদ্দেশ্যে বানানো হয়নি।” (মুসলিম, সহীহ ৫৬৮নং)
২। বেচা-কেনা; মহানবী (ﷺ) বলেন, “যখন তোমরা দেখবে যে, মসজিদে কেউ কিছু বেচা-কেনা করছে, তখন তাকে বলবে যে, ‘আল্লাহ তোমার বেচা-কেনায় লাভ না দিক।” (তিরমিযী, সুনান, নাসাঈ, সুনান, দারেমী, সুনান, মিশকাত ৭৩৩নং)
৩। অসার, বাজে ও অশ্লীল কবিতা, গজল বা ছড়া পাঠ। আম্র বিন শুআইবের পিতামহ্ বলেন, ‘আল্লাহর রসূল (ﷺ) মসজিদে আপোসে কবিতা আবৃতি ও বেচা-কেনা করতে, জুমআর দিন (জুমআর) নামাযের পূর্বে গোল হয়ে বসতে নিষেধ করেছেন। (আবূদাঊদ, সুনান, তিরমিযী, সুনান, মিশকাত ৭৩২নং)
অবশ্য বৈধ শ্রেণীর ইসলামী গজল পাঠ নিষিদ্ধ নয়। একদা হাসসান (রাঃ) মসজিদে কবিতা পাঠ করছিলেন। হযরত উমার (রাঃ) প্রতিবাদের দৃষ্টিতে তাঁর প্রতি তাকালে তিনি বললেন, ‘আমি কবিতা পাঠ করতাম, আর তখন মসজিদে আপনার থেকে শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি [নবী (ﷺ)] উপস্থিত থাকতেন।’ অতঃপর তিনি আবূ হুরাইরার দিকে লক্ষ্য করে বললেন, ‘আল্লাহর ওয়াস্তে বলুন, আপনি কি আল্লাহর রসূল (ﷺ) কে বলতে শুনেছেন, “(হে হাসসান! মুশরিকদেরকে) আমার তরফ থেকে (ওদের কবিতার) জবাব দাও। হে আল্লাহ! জিবরীল দ্বারা ওকে সাহায্য কর?” আবূ হুরাইরা বললেন, ‘জী হ্যাঁ, (আমি এ কথা শুনেছি)। (বুখারী ৪৫৩, মুসলিম, সহীহ ২৪৮৫ নং)
৪। হৈ-হাল্লা করা ও উচ্চস্বরে কথা বলা। (বুখারী, মিশকাত ৭৪৪নং) এমন কি কেউ নামায বা কুরআন পড়লে সেখানে সশব্দে কুরআন পাঠও করা যাবে না। একদা মহানবী (ﷺ) দেখলেন, লোকেরা নামাযে জোরে-শোরে কুরআন পাঠ করছে। তিনি বললেন, “মুসল্লী (নামাযী) তো আল্লাহর সাথে চুপিসারে কথা বলে। সুতরাং কি নিয়ে তাঁর সাথে কথা বলছে তা লক্ষ্য করা দরকার। আর তোমরা এমন উচ্চস্বরে কুরআন পড়ো না, যাতে অপরের নামাযে ব্যাঘাত ঘটে।” (আহমাদ, মুসনাদ, মিশকাত ৮৫৬নং)
বলাই বাহুল্য যে, মসজিদের যে প্রতিবেশী অথবা অন্য লোক যে (মাইক, টেপ, রেডিও প্রভৃতির) শব্দ বা গান-বাজনা দ্বারা অথবা কোন রঙ-তামাশা দ্বারা মসজিদের পবিত্রতা-হানি করে এবং মসজিদে অবস্থিত নামাযীদের নামাযে, তেলাঅতে ও আল্লাহর যিক্রে ব্যাঘাত ও বাধা সৃষ্টি করে তার ভয় হওয়া উচিৎ। কারণ, মহান আল্লাহর সাধারণ উক্তি এই যে,
ومَنْ أَظْلَمُ مِمَّنْ مَنَعَ مَسَاجِدَ اللهِ أَنْ يُّذْكَرَ فِيْهَا اسْمُهُ وَسَعى فِيْ خَرَابِهَا أُولئِكَ مَا كَانَ لَهُمْ أَنْ يَّدْخُلُوْهَا إِلاَّ خَائِفِيْنَ، لَهُمْ فِي الدُّنْيَا خِزْيٌ وَّلَهُمْ فِي الآخِرَةِ عَذَابٌ عَظِيْمٌ
অর্থাৎ, যে ব্যক্তি আল্লাহর মসজিদে তাঁর নাম স্মরণ (যিক্র) করতে বাধা দেয় ও তার ধ্বংস-সাধনে প্রয়াসী হয়, তার চেয়ে বড় যালেম আর কে হতে পারে?” (কুরআন মাজীদ ২/১১৪)
৫। হদ্দ্ (ইসলামী দন্ডবিধি; যেমন মদখোরকে চাবুক মারা, চোরের হাত কাটা, ব্যভিচারীকে কোড়া মারা প্রভৃতি) কায়েম করা। মহানবী (ﷺ) মসজিদে হদ্দ্ কায়েম করতে নিষেধ করেছেন। (হাকেম, মুস্তাদরাক ৪/৩৬৯, আহমাদ, মুসনাদ ৩/৪৩৪, আবূদাঊদ, সুনান ৪৪৯০, মিশকাত ৭৩৪ নং)
উল্লেখ্য যে, আধুনিক যুগের মোবাইল টেলিফোন বা ব্লিফার সঙ্গে নিয়ে মসজিদে প্রবেশ করার পূর্বে তা বন্ধ করে দেওয়া জরুরী। কারণ, এ সবে যে রিং বা মিউজিকের শব্দ আছে তাতে মসজিদবাসীর ডিষ্টার্ব হয়ে থাকে।