নফসের গোলামী ও মুক্তির উপায় নফসের গোলামী বিষয়ে বিস্তারিত আবু আহমাদ সাইফুদ্দীন বেলাল
নফসের গোলামীর কিছু কিসসা ও গোলামী ত্যাগকারীদের কিছু চিত্র

নফসের গোলামীর কিছু কিসসা

১. কাবীল তার ছোট ভাই হাবীলকে হত্যার ঘটনা। [সূরা মায়েদা: ২৭-৩১]

২. ভাতিজা তার চাচার সম্পদ ও মেয়েকে বিবাহের জন্য হত্যার ঘটনা। সূরা বাকারা: ৬৭-৭৩]

৩. মুসা [আঃ]-এর যুগে বনি ইসলাঈলদের সামিরীর বানানো বাছুর পূজার ঘটনা। [সূরা ত্বহা ৮৫-৯৮]

৪. তওরাতের হাফেজ বাল'আম ইবনে বা বাউ'রের অর্থের বিনিময়ে মূসা [আঃ]-এর প্রতি বন্দোয়া করার ঘটনা। [সূরা আ'রাফ: ১৭৫-১৭৬/

৫. সন্তান হিসাবে পালিত ইউসুফ কে জুলায়খার ভালবাসার ঘটনা। [সূরা ইউসুফ]

৬. আসিয়া ও জাদুকরদের আল্লাহ ও মূসার প্রতি ঈমান আনার জন্য তাদেরকে নির্মমভাবে ফেরাউনের হত্যার ঘটনা। [সূরা শু'আরা : ৪৬-৫১)

৭. কারুনের মুসা এর বিরধিতার ঘটনা। [সূরা কোসাস: ৭৬-৮২]

৮. নূহ (আঃ) ও লুত (আঃ) এর স্ত্রীদ্বয়ের ঈমান না আনার ঘটনা। [সূরা তাহরীম : ১০/

৯. রূমের রাজা কায়সারের রসূলূল্লাহ -এর পত্র ছিড়ে ফেলার ঘটনা।

 ১০. আবু লাহাব, আবু জাহল ও আবু তালিবের ঈমান না আনার ঘটনা।

নফসের গোলামী ত্যাগকারীদের কিছু চিত্র

 ১. মুসআব ইবনে উমাইর [রাঃ] এর দুনিয়ার আরাম আয়েশ ত্যাগ।

২. আবু তালহা (রাঃ) এর মদিনার সবচেয়ে উত্তম বাগান ও দাসী আজদ করা। [সূরা আল ইমরান:৯২।

৩. সোহাইব রুমি ।-এর হিজরতের সময় তাঁর সমস্ত অর্জিত সম্পদ মক্কায় ছেড়ে আসা। (সূরা বাকারা: ২০৭।

৪. ফেরাউনের স্ত্রী আসিয়া বিন্তে মুজাহেম (রা:) এর রাণীর মূকুট ত্যাগ । [সূরা তাহরীম: ১১]

প্রবৃত্তির সৃষ্টি পরীক্ষার জন্য

ইমাম ইবনুল কারোম (রহ:) বলেন: প্রতিটি শরিয়তের আড্ডাপ্রাপ্ত ব্যক্তির জন্য প্রবৃত্তিতে রয়েছে পরীক্ষা। প্রতিটি মুহূর্তে মানুষের জীবনে ঘটতেছে বিভিন্ন ধরণের ঘটনা। তাই তার মাঝে দু'টি বিচারক নিযুক্ত করা হয়েছে। একটি বিবেকের বিচারক আর দ্বিতীয়টি দ্বীনের বিচারক। আর সর্বদা প্রবৃত্তির আবর্তন-বিবর্তনে যাকিছু ঘটবে তা এই দু'টি বিচারকের নিকট পেশ এবং তাদের নির্দেশ মানতে বলা হয়েছে।

উচিত হলো: প্রবৃত্তিকে নিরাপদ পরিণতি বিষয়াদির উপর অনুশীলন করা, যাতে করে ক্ষতিকর পরিণতি বিষয়গুলো ত্যাগের অনুশীলন করতে পারে। আর বিজ্ঞজন স্মরণ রাখে যে, প্রবৃত্তির আসক্ত ব্যক্তিরা এমন অবস্থায় পৌঁছে যে, ভোগের বস্তু দ্বারা উপভোগ করতে পারে না অথচ ত্যাগও করতে পারে না। কারণ তাদের নিকটে ভোগবস্তু জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়ে পড়ে, যা ছাড়া তাদের চলেই না।

তাই দেখবে। মদ ও সহবাসে অসক্তরা এক দশমাংশও মজা পাইনা যা মজা পাই মাঝে মধ্যে যারা করে থাকে। কিন্তু তার বদভ্যাস তাকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়। আর এ দ্বারা সে বুঝতে পারে যে সুখের মোকাবেলায় তার দুঃখ কতটুকু। সে ধোঁকায় পড়া পাখীর মত শিকারীর পাতানো ফাঁদের দানা খেতে গিয়ে না দানা খেতে পারে আর না ফাঁদ হতে অব্যাহতি পায়।[1]

[1] রাওয়াতুল মুহিব্বীন-ইবনুল কায়োম। ৪৭