লগইন করুন
আমাদের দেশে তুহিন নামটি ছেলেদের নাম হিসেবে যথেষ্ট জনপ্রিয়। তাই আমাদের জানা দরকার এ নামটি মুসলিমদের নামের ক্ষেত্রে ব্যবহারে কোনও সমস্যা আছে কি না বা অর্থগত ভাবে তাতে কোনও আপত্তি আছে কি না।
তুহিন tuhin শব্দের ব্যাপারে বাংলা অভিধানে বলা হয়েছে, এটি মূলত: সংস্কৃত শব্দ [তুহ্+ইন]। সংস্কৃত থেকে বাংলায় প্রবেশ করেছেন। অর্থাৎ এটি এখন তৎসম শব্দ।
এই শব্দের অর্থ হলো: (বিশেষ্য পদ) বরফ; তুষার; হিম। (বিশেষণ পদ) অত্যন্ত শীতল; তুষারের ন্যায় অতিশয় শীতল বা বরফের মত অত্যন্ত ঠাণ্ডা। যেমন: শীতের তুহিন রাত্রি, তিব্বতের তুহিন প্রান্তরে। এখান থেকে হিমালয় পর্বতকে বলা হয়, তুহিনাদ্রি বা তুহিনাচল ।
[দেখুন: বাংলা একাডেমী ব্যবহারিক বাংলা অভিধান (পরিমার্জিত সংস্করণ), উইকি সংকলন-বিশ্বকোষ দ্বাদশ খণ্ড, পৃষ্ঠা: ১১১ (অনলাইন সংস্করণ), Bengali definition, English & Bengali Online Dictionary & Grammar ইত্যাদি]
এটি আরবি ‘তাওহীন’ (توهين) শব্দের পরিবর্তিত রূপ নয়। অর্থাৎ এর সাথে আরবির কোনও সম্পর্ক নেই। আরবিতে লিখলে তার বানান হবে, ْتُهِيْن
সুতরাং শরিয়তের দৃষ্টিতে তুহিন নাম রাখতে কোনও সমস্যা নেই। কারণ অর্থগতভাবে এতে শরিয়ত বিরোধী কিছু নেই। যারা বলে যে, এটি আরবি তাওহীন (توهين) শব্দের পরিবর্তিত রূপ তাদের বক্তব্য সঠিক নয়। বাস্তবতা হচ্ছে, কিছু মানুষ বাংলা ও আরবি ভাষা এবং ইসলাম বিষয়ে খুব সামান্য জ্ঞান নিয়ে অযথা মানুষের মাঝে সংশয় ও বিতর্ক সৃষ্টি করে-যা দুঃখ জনক। আল্লাহ আমাদেরকে ক্ষমা করুন। আমিন।
তবে আমরা বলব, মুসলিমদের নামের ক্ষেত্রে শুধু বাংলা শব্দ ব্যবহারের পরিবর্তে সুন্দর অর্থবোধক আরবি নাম হওয়া উত্তম। যেন নাম শুনেই মুসলিম হিসেবে প্রাথমিক পরিচয় পাওয়া যায়। একজন মুসলিম শিশুর নাম শুধু বাংলা শব্দ দ্বারা রাখা উচিৎ নয়। (যেটা বর্তমানে অনেকেই করছে)। কারণ বাংলা নাম থেকে কারও ব্যাপারে অনুমান করা যায় না, সে কি মুসলিম নাকি অমুসলিম। অথচ এই প্রাথমিক পরিচয়টুকু জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অতি গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহ আলাম।