লগইন করুন
প্রাপ্ত বয়স্ক নারীর মাসিক ঋতুস্রাব বা পরিয়ড হওয়া খুব স্বাভাবিক বিষয়। এটি তার শারীরিক সুস্থতা এবং গর্ভধারণে সক্ষমতার আলামত। পিরিয়ডের দিনগুলো অন্য স্বাভাবিক দিনগুলোর চেয়ে একটু ভিন্ন রকম থাকে। হরমোনের কারণে কিছু শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন ঘটে৷ এই সময় মেয়েদের শরীর অন্য সময়ের তুলনায় একটু বেশি দুর্বল থাকে। অনেকের জরায়ু নিচের দিকে নেমে আসে, তলপেট স্ফীত হয়! ব্যথা করে৷এমনকি বমিও হয়।
তাই এ অবস্থায় তাদের কষ্ট লাঘবে দয়াময় আল্লাহ নামাজ-রোজার বিধান রহিত করেছেন। সুতরাং এ সময় তাদের জন্য নামাজ-রোজা করা জায়েজ নাই।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
أليس إذا حاضت المرأة لم تصل ولم تصم؟
“এমন কি নয় যে, ঋতু কালীন সময়ে একজন নারী সালাত পড়ে না ও রোজা রাখে না”? [সহীহ বুখারী, হা/২৯৮; সহীহ মুসলিম, হা/৮০]
তবে ঋতুমতী নারী পবিত্র হলে শুধু রোজাগুলো কাজ করবে; নামাজগুলো কাজা করবে না।
মা-জননী আয়েশা রা. বলেন,
كنا نحيض على عهد رسول الله صلى الله عليه وسلم فكنا نؤمر بقضاء الصوم، ولا نؤمر بقضاء الصلاة
“আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে ঋতুমতী হতাম। আমাদেরকে তখন রোজাগুলো কাজা করার নির্দেশ প্রদান করা হত; কিন্তু নামাজ গুলো কাজা করার নির্দেশ দেওয়া হত না”।[সহীহ বুখারী, হা/৩১৫, সহীহ মুসলিম, হা/৩৩৫]
সুতরাং নারীদের জন্য ঋতুস্রাব অবস্থায় নামাজ-রোজা করা জায়েজ নাই। আর লোকলজ্জার কারণে ঋতুস্রাব অবস্থায় নামাজ-রোজা অব্যাহত রাখলে সেগুলো শুধু বাতিল বলেই গণ্য হবে না বরং এ জন্য গুনাহগারও হতে হবে।
তবে কোন মেয়ে যদি তার ঋতুস্রাব হওয়ার বিষয়টি কোন পুরুষের নিকট প্রকাশিত হওয়াতে লজ্জাবোধ করে বা শরিয়ত সম্মত কোনও কারণে তা প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকতে চায় আর এ কারণে সে তাদের সামনে রোজার ভান ধরে বা সেহেরি বা ইফতারের সময় পরিবারের সবার সাথে খাওয়া-দাওয়া করে তাহলে তাতে কোন গুনাহ নেই। তবে রোজার নিয়ত করবে না। অন্যথায় তা গুনাহের কারণ হবে।
শাইখ বিন বায রাহ. কে প্রশ্ন করা হয়, কোনও মহিলা যদি মাসিক ঋতুস্রাবের কারণে লজ্জাবশত রমজানের রোজা রাখার ভান করে তাহলে তার গুনাহ হবে কি?
তিনি বলেন,
ليس عليها إثم إذا ما بينت أنها حائض، لكن لا تصم لا تنو الصيام، أما إذا سكتت ولم تقل: إني حائض ولم تقل: إني مفطرة ما يضرها ذلك، لكن إذا كانت تنوي الصوم هذا لا يجوز هذا منكر الصوم باطل
“এতে তার কোন গুনাহ নেই যদি সে প্রকাশ না করে যে, সে ঋতুমতী। কিন্তু সে রোজা রাখবে রাখবে না বা রোজার নিয়ত করবে না। কিন্তু যদি সে চুপ থাকে- বলেনা যে, আমি ঋতুমতী আবার এও বলেন না যে, আমি রোজা ভঙ্গকারী। এতে তার কোনও ক্ষতি নেই। তবে যদি সে রোজা রাখার নিয়ত করে করে তবে তা জায়েজ হবে না। এটা গর্হিত কাজ আর এই রোজাও বাতিল।” [binbaz]
আল্লাহু আলাম।