লগইন করুন
শাইখ আব্দুল আযীয ইবন বায রহ. বলেন: পর-পুরুষের সাথে নারীদের মুসাফা করা কোনো অবস্থাতেই বৈধ নয়। হোক তারা যুবতী কিংবা বুড়ো, যুবক কিংবা বৃদ্ধ। কারণ, এতে উভয়ের অনিষ্টের আশঙ্কা রয়েছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বিশুদ্ধ সনদে প্রমাণিত, তিনি বলেছেন:
»إني لا أصافح النساء«
“আমি নারীদের সাথে মুসাফাহা করি না”।[1]
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বলেন:
»ما مست يد رسول الله صلى الله عليه وسلم يد امرأة قط، ما كان يبايعهن إلا بالكلام«
“রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাত কখনো কোনো নারীর হাত স্পর্শ করে নি, তিনি তাদেরকে শুধু কথার দ্বারাই বায়‘আত করতেন”।[2]
পর্দার আড়াল কিংবা পর্দা ছাড়া মুসাফাহার মাঝে কোনো পার্থক্য নেই। কারণ, দলীল কাউকে বাদ দেয় নি। ফিতনার সুড়ঙ্গ পথ বন্ধ করার স্বার্থে সবাইকে নিষেধ করাই শ্রেয়”। সমাপ্ত।
শাইখ মুহাম্মাদ আমীন শানকিতী রহ. স্বীয় তাফসীর ‘আদ-ওয়াউল বায়ান’: (৬/৬০২) গ্রন্থে বলেন: জেনে রাখ যে, পুরুষের পর-নারীর সাথে মুসাফাহা করা বৈধ নয়। নারীর কোনো অঙ্গ পুরুষের কোনো অঙ্গকে স্পর্শ করা বৈধ নয়। দলীল:
এক. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে প্রমাণিত, তিনি বলেছেন:
» إني لا أصافح النساء«
“আমি নারীদের সাথে মুসাফাহা করি না”।[3]
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿لَّقَدۡ كَانَ لَكُمۡ فِي رَسُولِ ٱللَّهِ أُسۡوَةٌ حَسَنَة﴾ [الاحزاب: ٢١]
“অবশ্যই তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ”। [সূরা আল- আহযাব, আয়াত: ২১]
অতএব, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অনুসরণ করে নারীদের সাথে মুসাফা না করাই আমাদের কর্তব্য। (পূর্বে আমরা “ইহরাম ও গায়রে ইহরাম কোনো অবস্থায় পুরুষের জন্য জাফরানি রঙ দ্বারা রঙিন করা কাপড় পরিধান করা যাবে না” আলোচনার অধীন সূরা হজে উল্লিখিত হাদীসের ব্যাখ্যা প্রদান করেছি এবং সূরা আহযাবের পর্দা সংক্রান্ত আয়াতের ব্যাখ্যায়ও বিস্তারিত আলোচনা করেছি।[4]) বায়‘আতের সময় নারীদের সাথে মুসাফাহা না করা স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, পুরুষ কখনো নারীর সাথে মুসাফাহা করবে না। পুরুষের শরীরের কোনো অংশ নারীর শরীরকে স্পর্শ করবে না। মুসাফাহা অপেক্ষাকৃত হালকা স্পর্শ। বায়‘আতের মুহূর্তেও যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নারীদের সাথে মুসাফাহা করেন নি, এটিই প্রমাণ করে যে, তাদের সাথে মুসাফাহা করা বৈধ নয়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অবাধ্য হওয়ার সুযোগ নেই, তিনি স্বীয় কথা, কাজ ও সমর্থন দ্বারা উম্মতকে করণীয় বাতলে দিয়েছেন।
দুই. আমরা পূর্বে বলেছি যে, নারী পুরোটাই সতর, তাই পর্দা করা তার জন্য জরুরি। ফিতনার আশঙ্কায় চোখ অবনত রাখার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। এতে সন্দেহ নেই যে, শরীরের সাথে শরীরের স্পর্শ প্রবৃত্তিকে জাগিয়ে তোলে, যা চোখের দৃষ্টির চেয়েও অধিক ক্ষতিকর। এ বিষয়গুলো কম-বেশি সবাই জানে।
তিন. তাকওয়ার অনুপস্থিতি, আমানতদারী না থাকা ও সন্দেহপূর্ণ স্থান পরিহার না করার দরুন পর-নারীর শরীরের স্পর্শই এক প্রকার ভোগ। আমাদের কানে একাধিকবার এসেছে যে, কতক পুরুষ স্বীয় স্ত্রীর বোনের মুখের উপর মুখ রেখে চুমু খায়, যা তাদের নিকট সালামের চুমু হিসেবে খ্যাত। তারা বলে: সালাম করেছে অর্থাৎ চুমু খেয়েছে। সত্যি কথা, যাতে কোনো সন্দেহ নেই, সকল প্রকার ফিতনা, সন্দেহ ও তার উপকরণের পথ বন্ধ করা জরুরি, যার অন্যতম হচ্ছে নারীর শরীরের কোনো অংশকে পুরুষের স্পর্শ করা। হারামের পথ বন্ধ করা ওয়াজিব...”। সমাপ্ত।
[2] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪৬০৯; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৮৬৬; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ২৮৭৫; আহমদ: (৬/২৭০)
[3] তিরমিযী, হাদীস নং ১৫৯৭; নাসাঈ, হাদীস নং ৪১৮১; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ২৮৭৪; আহমদ: (৬/৩৫৭) মালিক, হাদীস নং ১৮৪২
[4] অর্থাৎ শাইখ শানকীতী রহ. তার তাফসীরে তা আলোচনা করেছেন। এ কিতাবে নয়।