লগইন করুন
বাইবেল সকল স্বৈরশাসকের ঢাল; কারণ বাইবেল শাসকদের নিরঙ্কুশ ও প্রশ্নাতীত আনুগত্যের নির্দেশ দেয়। শাসক বা সরকার মানেই ঈশ্বরের প্রতিনিধি এবং ঈশ্বরের সেবক। বিশ্বের যেখানে যে ব্যক্তি শাসনব্যবস্থার যে স্তরে রয়েছেন সেখানে তিনি ঈশ্বরের নিয়োগ পেয়েই বসেছেন। যে ব্যক্তি সরকারের ভাল-মন্দ কোনো আদেশ অমান্য করে সে মূলত ঈশ্বরের বিরুদ্ধেই বিদ্রোহ করে।
১ পিতর ২/১৩-১৫ বলছে: ‘‘Submit yourselves to every ordinance of man for the Lord’s sake: whether it be to the king, as supreme; Or unto governors, as unto them that are sent by him for the punishment of evildoers, and for the praise of them that do well: প্রভুর জন্য তোমরা নিজেদেরকে মানুষের সকল নির্দেশের অধীন-বশীভূত করে রাখবে। এটা রাজার হোক বা গভর্নরের হোক। রাজা সর্বোচ্চ। গভর্নররা অন্যায়কারীদের শাস্তি দেওয়ার জন্য ও ন্যায়কারীদের প্রশংসা করার জন্য রাজার দ্বারা প্রেরিত’’।
কেরি: ‘‘তোমরা প্রভুর নিমিত্ত মানব-সৃষ্ট সমস্ত নিয়োগের বশীভূত হও। রাজার বশীভূত হও, তিনি প্রধান; দেশাধ্যক্ষদের বশীভূত হও, তাহারা দূরাচারদের প্রতিফল দিবার নিমিত্ত ও সদাচারদের প্রশংসার নিমিত্ত তাঁহার দ্বারা প্রেরিত।’’
মো.-০৬: ‘‘তোমরা প্রভুর প্রতি বাধ্য হয়ে মানুষের নিযুক্ত শাসনকর্তাদের অধীনতা স্বীকার কর। সম্রাট সকলের প্রধান বলে তাঁর অধীনে থাক; অন্যায়কারীদের শাস্তি দেবার জন্য এবং যারা ভাল কাজ করে তাদের প্রশংসা করার জন্য সম্রাট যে শাসনকর্তাদের পাঠান তাদেরও অধীনে থাক।’’
এ থেকে আমরা নিশ্চিত হই যে, যত খারাপ, অমানবিক বা বাইবেল বিরোধী হোক না কেন, মানব-রচিত সকল বিধান যেমন মানতে হবে তেমনি রাজা ও গভর্নরদের সকল নির্দেশ প্রশ্নাতীত ভাবে মানতে হবে। এটা ঈশ্বরের জন্যই করতে হবে।
পল লেখেছেন, প্রত্যেক শাসনকর্তাই ঈশ্বরের মিনিস্টার, অর্থাৎ মন্ত্রী, প্রতিনিধি বা যাজক এবং শাসনকর্তার বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর অর্থই ঈশ্বরের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো: ‘‘প্রত্যেকেই দেশের শাসনকর্তাদের মেনে চলুক, কারণ আল্লাহ যাঁকে শাসনকর্তা করেন তিনি ছাড়া আর কেউই শাসনকর্তা হতে পারেন না। আল্লাহ শাসনকর্তাদের নিযুক্ত করেছেন; এই জন্য শাসনকর্তাদের বিরুদ্ধে যে দাঁড়ায় সে আল্লাহর শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধেই দাঁড়ায়। ... তোমাদের ভালোর জন্যই তিনি আল্লাহর সেবাকারী হিসাবে কাজ করেন (he is the minister of God: তিনিই ঈশ্বরের মন্ত্রী/ প্রতিনিধি বা যাজক)। তোমরা যদি অন্যায় কর তাহলে ভয় কর, কারণ অন্যায়কারীদের শাস্তি দেবার অধিকার তাঁর আছে। তিনি তো আল্লাহর সেবাকারী (the minister of God: ঈশ্বরের মন্ত্রী/ প্রতিনিধি বা যাজক); যারা অন্যায় কাজ করে তাদের তিনি আল্লাহর হয়ে শাস্তি দেন। এজন্য তোমরা শাসনকর্তাদের অধীনতা স্বীকার করতে বাধ্য। আল্লাহর শাস্তির ভয়েই যে কেবল তাঁদের অধীনতা স্বীকার করবে তা নয়, তোমাদের বিবেক পরিস্কার রাখার জন্যও তা করবে।’’ (রোমীয় ১৩/১-৫)
প্রসিদ্ধ আমেরিকান খ্রিষ্টান ধর্মগুরু রেভারেন্ড রেমন্ড ডাবাক (Rev. Raymond Dubuque) liberalslikechrist.org’ ওয়েবসাইটে এ প্রসঙ্গে বলেছেন:
“If this teaching of Paul's is true, then any Christian who has founds fault with any ruler, including Hitler, Stalin, Mao, Ho Chi Min, Castro, Milosovich, or more recently, Saddam Hussein, has gone against God's Word. And far from being heroes, those who fought and died to remove these dictators and mass-murderers, are sinners that we be ashamed of. Paul doesn't allow for the slightest bit of "interpretation". He makes the same point over and over again, that we should treat any and all rulers as God's very own appointees to whatever office they hold, be it governor, king, emperor, president, prime minister, secretary general, or Führer.”
‘‘যদি পলের এ শিক্ষা সত্য হয় তবে হিটলার, স্ট্যালিন, মাও, হোচিমিন, ক্যাস্ট্রো, মিলোসোভিক অথবা আরো পরবর্তীকালের সাদ্দাম হোসেন বা যে কোনো শাসকের বিষয়ে কোনো খ্রিষ্টান যদি কোনো অন্যায় কিছু দেখতে পায় তবে সে ঈশ্বরের বাক্যের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। যারা এ সকল স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে তারা কখনোই বীর নয়, বরং তারা সকলেই পাপী। তাদের জন্য আমাদের লজ্জিত হওয়া উচিত। পল তাঁর বক্তব্যের কোনোরূপ ব্যাখ্যার সুযোগ রাখেননি। তিনি একই কথা বারবার ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বলছেন, যেন আমরা প্রত্যেক ও সকল শাসক বা সরকারকে স্বয়ং ঈশ্বরের নিয়োজিত বলে গণ্য করি। শাসকবর্গ যে যে পর্যায়ের দায়িত্বেই থাকুন না কেন, প্রত্যেকেই ঈশ্বরের নিয়োজিত। গভর্নর, রাজা, সম্রাট, প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী, মহাসচিব অথবা ফুয়েরার প্রত্যেকেই এ মর্যাদার।’’[1]