লগইন করুন
বাইবেলে ঈশ্বরকে সর্বগ্রাসী আগুন ও নাক দিয়ে ধোঁয়া উদ্গীরণকারী বলে চিত্রিত করা হয়েছে। ‘‘তাঁহার নাসারন্ধ্র হইতে ধূম উদ্গত হইল, তাঁহার মুখনির্গত অগ্নি গ্রাস করিল; তদ্বারা অঙ্গার সকল প্রজ্বলিত হইল।’’ (২ শমূয়েল ২২/৯) কিতাবুল মোকাদ্দস-২০০৬: ‘‘তাঁর নাক থেকে ধোঁয়া উপরে উঠল, তাঁর মুখ থেকে ধ্বংসকারী আগুন বেরিয়ে আসল। তাঁর মুখের আগুনে কয়লা জ্বলে উঠল।’’
সুপ্রিয় পাঠক, আপনার মনের মধ্যে কেমন চিত্র ভেসে উঠছে? ভয়ঙ্কর কোনো আগ্নেয়গিরি? ভয়ঙ্কর ড্রাগন? অথবা একজন ধুমপায়ীর ধোঁয়া উদ্গীরণ? ঈশ্বরের ক্রোধ বুঝাতে এর চেয়ে পবিত্র ও শালীন কোনো ভাষা কি ঈশ্বরের জানা ছিল না?
বাইবেল এখানে বলছে যে, ঈশ্বর সর্বগ্রাসী আগুন উদ্গীরণ করেন। বাইবেলে অন্যত্র নিশ্চিত করা হয়েছে যে, ঈশ্বর নিজেই একটা সর্বগ্রাসী আগুন (a consuming fire)। দ্বিতীয় বিবরণ ৪/২৪ বলছে: (For the LORD thy God is a consuming fire, even a jealous God) অর্থাৎ ‘‘তোমার প্রভু ঈশ্বর একটা গ্রাসকারী আগুন; উপরন্তু একজন ঈর্শবান্বিত ঈশ্বর।’’ কেরির অনুবাদ: ‘‘কেননা তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু গ্রাসকারী অগ্নিস্বরূপ’’। দ্বিতীয় বিবরণ ৯/৩ একই কথা বলেছে।
ইব্রীয় ১২/২৯ KJV & RSV নিম্নরূপ: ‘For our God is a consuming fire’: ‘‘আমাদের ঈশ্বর একটি সর্বগ্রাসী আগুন।’’ কেরি: ‘‘কেননা আমাদের ঈশ্বর গ্রাসকারী অগ্নিস্বরূপ’’। জুবিলী বাইবেল: ‘‘কেননা আমাদের ঈশ্বর সর্বগ্রাসী আগুনের মত।’’ কিতাবুল মোকাদ্দস-০৬: ‘‘আমাদের আল্লাহ ধ্বংসকারী আগুনের মত।’’
এভাবে বাংলা অনুবাদে ‘মত’ বা ‘স্বরূপ’ শব্দ সংযোজন করে এ কথাটির অশোভনীয়তা হালকা করার চেষ্টা করা হয়েছে। এরূপ সংযোজন বাইবেল নিষিদ্ধ মহাপাপ (প্রকাশিত বাক্য ২২/১৮)। আর এতে পাঠকের লাভ হয়নি। কারণ ঈশ্বর ‘সর্বগ্রাসী আগুন’ হোন বা ‘সর্বগ্রাসী আগুনের মত’ হোন উভয় ক্ষেত্রেই কোনো মানুষ ঈশ্বরের প্রেম ও নৈকট্যের চেষ্টা করবেন না। ‘সর্বগ্রাসী আগুন’ অথবা ‘সর্বগ্রাসী আগুনের মত’ কোনো কিছুর খপ্পরে পড়া থেকে যে কোনো বুদ্ধিমান মানুষ দূরে থাকবেন।