লগইন করুন
লূক ৭/৩১ KJV “And the Lord said, Whereunto then shall I liken the men of this generation? and to what are they like? এবং প্রভু বললেন, অতএব আমি কহার সাথে এ কালের লোকদের তুলনা দেব? তারা কিসের তুল্য?’’।
১৯৯২ সালে মধ্যপ্রাচ্য বাইবেল সোসাইটি প্রকাশিত আরবি বাইবেলেও (ثم قال الرب) ‘অতঃপর প্রভু বলিলেন’ কথাটুকু বিদ্যমান। কিন্তু RSV ভাষ্যে ‘এবং প্রভু বলিলেন’ কথাটুকু পুরোই ফেলে দেওয়া হয়েছে। কারণ এ বাক্যগুলো বাইবেলের প্রাচীন পাণ্ডুলিপিগুলোতে নেই। এগুলো পরবর্তী লিপিকারদের সংযোজন মাত্র।
কেরির বাইবেলে এ বাক্যটা ফেলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ বাইবেল সোসাইটি কর্তৃক ২০০০ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত পবিত্র বাইবেলে কথাটা সংযোজন করে লেখা হয়েছে: ‘‘যীশু আরও বললেন’’। বাংলাদেশ বাইবেল সোসাইটি কর্তৃক ২০০৬ সালে প্রকাশিত কিতাবুল মোকাদ্দসে বলা হয়েছে: ‘‘ঈসা আরও বললেন’’। বাংলাদেশ ক্যাথলিক বিশপ সম্মিলনী কর্তৃক ২০০৬ সালে প্রকাশিত জুবিলী বাইবেল থেকে এ বাক্যটা ফেলে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ২০১৩ সালে বাচিব (Biblical Aids for Churches and Institutions in Bangladesh) প্রকাশিত ‘কিতাবুল মোকাদ্দসে এ বাক্যটা এ শ্লোক থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
আমরা প্রথমেই এ নমুনাটা উল্লেখ করলাম, যেন পাঠক বুঝতে পারেন যে, স্বীকৃত বিকৃতিগুলোর ক্ষেত্রেও বাইবেল প্রকাশকরা এভাবে পরিবর্তন, বিয়োজন ও পুন-সংযোজনের ধারা অব্যাহত রেখেছেন।
পাঠক হয়ত বলবেন, এ সামান্য একটা বাক্য তো তেমন কোনো সমস্যা সৃষ্টি করছে না। কাজেই একে সংযোজন বা বিয়োজন করলে সমস্যা কী?
অর্থ পরিবর্তনের চেয়েও অনেক বড় বিষয় গ্রন্থটা ধর্মগ্রন্থ কি না? যদি তা ধর্মগ্রন্থ হয় তবে কিভাবে এর মধ্যে ইচ্ছামত বাক্য বা শব্দ সংযোজন বা বিয়োজন করা যায়? ধর্মগ্রন্থের ব্যাখ্যা লেখা যায়, তবে ব্যাখ্যাকে কি মূল কথার মধ্যে সংযোজন করা যায়?
আর যদি তা ধর্মগ্রন্থ না হয় তবে প্রশ্ন হল, মূল লেখক কী লেখেছিলেন? কোনো লেখকের গ্রন্থে কি ইচ্ছামত শব্দ বা বাক্য পরিবর্তন, সংযোজন বা বিয়োজন করা যায়? এরূপ পরিবর্তিত, সংযোজিত বা বিয়োজিত বক্তব্যকে কি মূল লেখকের বক্তব্য বলে দাবি করা যায়? জাগতিক কোনো দলিল, সংবিধান বা পুস্তকের মূল ভাষ্যের মধ্যে এরূপ সংযোজন, বিয়োজন বা পরিবর্তন কি অন্যায় বলে গণ্য নয়?