লগইন করুন
নতুন নিয়মের অনেক স্থানে বলা হয়েছে যে, শাস্ত্রে বা পাক-কিতাবে আছে অথবা লিখিত আছে বা নবীরা বলেছেন যে খ্রিষ্ট বা মসীহকে দুঃখভোগ করতে হবে, নিহত হতে হবে এবং তৃতীয় দিনে উঠতে হবে। বাইবেল গবেষকরা বলেন, এগুলো সবই সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন দাবি। ইহুদি জাতি কখনোই কোনো দুঃখভোগকারী মসীহের কথা কল্পনা করেনি। তাঁরা একজন বিজয়ী মাসীহের জন্য অপেক্ষা করছিল এবং করছে। পুরাতন নিয়মের কোথাও দুঃখভোগকারী মসীহের কথা নেই। কখনো কখনো পুরাতন নিয়মের বিভিন্ন স্থানের বিভিন্ন অপ্রাসঙ্গিক বক্তব্য একত্রিত করে খ্রিষ্টান ধর্মগুরুরা যীশুর দুঃখভোগের পূর্বাভাস বলে দাবি করেন। আর কিছু কিছু উদ্ধৃতি সম্পূর্ণই ভিত্তিহীন।
যেমন, লূক লেখেছেন, পুনরুত্থানের পর যীশু শিষ্যদেরকে বলেন: ‘‘এরকম লেখা আছে যে, মসীহ দুঃখভোগ করবেন এবং তৃতীয় দিনে মৃতগণের মধ্য থেকে উঠবেন; আর তাঁর নামে গুনাহ মাফের মন পরিবর্তনের কথা সর্বজাতির কাছে প্রচারিত তবলিগ হবে।’’ (লূক ২৪/৪৫-৪৭, মো.-১৩)
বাইবেল বিশেষজ্ঞরা একমত যে, পাক-কিতাব বা পুরাতন নিয়মের কোথাও এ কথাগুলো লেখা নেই। এ কথাগুলো শতভাগ ভিত্তিহীন ও পাক-কিতাবের অসত্য কথন।
উপরের ১৯টা অনুচ্ছেদে আমরা দেখলাম যে, নতুন নিয়মের লেখকরা পুরাতন নিয়মের অনেক বক্তব্য বিকৃত করেছেন। অনেক সময় তাঁরা পাক-কিতাব বা শাস্ত্রের নামে এমন উদ্ধৃতি প্রদান করেছেন যা পুরাতন নিয়মের কোথাও নেই। এ সকল ক্ষেত্রে সাধারণত ইহুদি ধর্মগুরুরা অভিযোগ করেন যে, নতুন নিয়মের লেখকরা নিজেদের ধর্মবিশ্বাস প্রমাণ করার জন্য ইহুদি ধর্মগ্রন্থের অপব্যবহার করেছেন, ধর্মগ্রন্থের উদ্ধৃতি বিকৃত করেছেন বা ধর্মগ্রন্থের নামে মিথ্যা কথা বলেছেন। এর বিপরীতে খ্রিষ্টান ধর্মগুরুরা অভিযোগ করেন যে, ইহুদিরা দ্বিতীয় ও তৃতীয় খ্রিষ্টীয় শতকে খ্রিষ্টানদেরকে মিথ্যাবাদী প্রমাণ করার অসৎ উদ্দেশ্যে পুরাতন নিয়মের মধ্যে অনেক বিকৃতি সাধন করেন ও পুরাতন নিয়মের অনেক বক্তব্য বা পুস্তক গায়েব করে দেন।
উভয় অভিযোগ প্রমাণ করে যে, ‘বাইবেল’ নামক এ পুস্তকের মধ্যে অনেক বিকৃতি সাধিত হয়েছে। এরূপ বিকৃতি খুবই সহজ ছিল। দ্বিতীয় বা তৃতীয় খ্রিষ্টীয় শতকেও ইহুদিরা ইচ্ছা করলেই ধর্মগ্রন্থের মধ্যে বিকৃতি সাধন করতে পারতেন। কেউ বিরোধিতা করতেন না বা ভিন্ন কোনো সঠিক পাণ্ডুলিপিও পাওয়া যেত না!!
অনেক আধুনিক বাইবেল বিশেষজ্ঞ এ সকল বিকৃতি দ্বারা প্রমাণ করেন যে, নতুন নিয়মের লেখকরা পবিত্র আত্মার সহায়তায় এ সকল পুস্তক বা পত্র লেখেননি। তাঁরা সাধারণ ধর্ম প্রচারক হিসেবেই বইগুলো লেখেছেন। আর এ সকল বিকৃতি নিশ্চিতরূপে প্রমাণ করে যে, তাঁরা যীশু বিষয়ক তথ্যগুলোও ঐতিহাসিক বিশবস্ততার সাথে লেখেননি। বরং তাঁদের বিশ্বাস প্রমাণের জন্য বাছাই করে বা প্রয়োজনীয় সম্পাদনা করে লেখেছেন।