লগইন করুন
যোহন বাপ্তাইজক বিষয়ে মথি লেখেছেন: ‘‘ইনি সেই ব্যক্তি যাঁর বিষয়ে লেখা আছে: ‘দেখ, আমি আপন দূতকে তোমার সম্মুখে প্রেরণ করি; সে তোমার আগে তোমার পথ প্রস্তুত করবে।’’ (মথি ১১/১০)। লূকও একই কথা লেখেছেন (লূক ৭/২৭)
মার্ক লেখেছেন: ‘‘যিশাইয় ভাববাদীর গ্রন্থে যেমন লেখা আছে: ‘‘দেখ, আমি আপন দূতকে তোমার অগ্রে প্রেরণ করি; সে তোমার অগ্রে তোমার পথ প্রস্তুত করিবে।’’ এটা কেরির অনুবাদ। কিতাবুল মোকাদ্দস-২০১৩ নিম্নরূপ: ‘‘ইশাইয়া নবীর কিতাবে যেমন লেখা আছে, ‘দেখ, আমি আমার সংবাদদাতাকে তোমার আগে প্রেরণ করবো; সে তোমার পথ প্রস্তুত করবে।’’ (মার্ক ১/২)
বাইবেল বিশেষজ্ঞরা একমত যে, এ বক্তব্যটা মালাখির পুস্তকের তৃতীয় অধ্যায়ের ১ম শ্লোক থেকে উদ্ধৃত। মালাখির শ্লোকটা নিম্নরূপ: ‘‘দেখ, আমি আমার দূতকে প্রেরণ করবো, সে আমার আগে পথ প্রস্তুত করবে।’’ (মো.-১৩)
আমরা দেখছি যে, মূল পাঠ ও উদ্ধৃত পাঠের মধ্যে বহুবিধ বৈপরীত্য রয়েছে:
প্রথমত: প্রথম বাক্যে ‘আমি আপন দূতকে তোমার সম্মুখে প্রেরণ করি’ এ কথাটার মধ্যে ‘তোমার সম্মুখে’ বাক্যাংশ মালাখিতে নেই, ইঞ্জিল লেখকরা বাড়িয়েছেন।
দ্বিতীয়ত: মালাখির বক্তব্যে দ্বিতীয় বাক্যে বলা হয়েছে: ‘আমার আগে’; অথচ তিন সুসমাচার লেখকই মধ্যম পুরুষের সর্বনাম দিয়ে লেখেছেন ‘তোমার আগে’।
তৃতীয়ত: বাইবেল গবেষকরা একমত যে এ বক্তব্যটা মালাখি থেকে উদ্ধৃত। কিন্তু মার্ক লেখেছেন যে, বক্তব্যটা যিশাইয়/ ইশাইয়া নবীর গ্রন্থে বিদ্যমান।
আমাদেরকে দু’টা সম্ভাবনার একটা মানতে হবে। যিশাইয়র পুস্তকে বাক্যগুলো ছিল, কিন্তু পরে বিকৃতির মাধ্যমে তা মুছে দেওয়া হয়েছে। অথবা মার্কের লেখক ভুল করে মালাখির বক্তব্যকে যিশাইয়র বক্তব্য বলে চালিয়ে দিয়েছেন।
জাগতিক যে কোনো গবেষণায় তথ্যসূত্র প্রদানে এরূপ ভুল করলে এবং উদ্ধৃতির মধ্যে সংযোজন, বিয়োজন বা পরিবর্তন করলে গবেষক নিন্দিত হবেন এবং তিনি প্রাপ্য নম্বর বা ডিগ্রি থেকে বঞ্চিত হবেন। কিন্তু পবিত্র আত্মা কি এরূপ ভুল করতে পারেন? আর যে ‘পবিত্র আত্মা’ এরূপ ভুল করেন তার প্রেরণায় রচিত কোনো গ্রন্থের উপর কি নির্ভর করা যায়?