লগইন করুন
বাইবেলের বর্ণনায় হাওয়া সাপের প্ররোচনায় নিষিদ্ধ ফল খান এবং তা আদমকে খাওয়ান। এ জন্য ঈশ্বর হাওয়াকে নির্ধারিত শাস্তি দেন: ‘‘তিনি নারীকে বললেন, আমি তোমার গর্ভবেদনা অতিশয় বৃদ্ধি করব, তুমি বেদনাতে সন্তান প্রসব করবে। স্বামীর প্রতি তোমার বাসনা থাকবে এবং সে তোমার উপরে কর্ত্তৃত্ব করবে।’’ (আদিপুস্তক/ পয়দায়েশ ৩/১৬-১৯, মো.-১৩)
বাইবেলে অন্যত্র সাধু পল বলেন: ‘‘সম্পূর্ণ বাধ্য থেকে মৌনভাবে (in silence with all subjection/ all submissiveness) স্ত্রীলোকেরা শিক্ষা গ্রহণ করুক। আমি উপদেশ দেবার কিম্বা পুরুষের উপরে কর্তৃত্ব করার অনুমতি স্ত্রীলোককে দেই না, কিন্তু মৌনভাবে থাকতে বলি। কারণ প্রথমে আদমকে, পরে হাওয়াকে নির্মাণ করা হয়েছিল। আর আদম যে ছলনায় ভুলেছিলেন তা নয়, কিন্তু স্ত্রীলোক ছলনায় ভুলে আল্লাহর হুকুম অমান্য করেছিলেন। তবুও যদি আত্মসংযমের সঙ্গে ঈমান, মহববত ও পবিত্রতায় স্থির থাকে, তবে স্ত্রীলোক সন্তান প্রসবের মধ্য দিয়ে উদ্ধার পাবে।’’ (১ তীমথিয় ২/১১-১৪, মো.-১৩)
প্রথম উদ্ধৃতিতে স্পষ্ট যে, নারীর অপরাধের শাস্তি সন্তান প্রসবের কষ্ট লাভ। এটার মাধ্যমেই সে পাপমুক্ত হবে। কিন্তু দ্বিতীয় উদ্ধৃতিতে বলা হয়েছে যে, সন্তান প্রসবের কষ্ট বহন ছাড়াও নারীকে আত্মসংযম, ঈমান, মহবব ও পবিত্রতায় স্থির থাকতে হবে। তবেই শুধু সে মুক্তি পাবে। কিন্তু অন্যত্র সাধু পল নারীদেরকে কুমারী থাকতে উৎসাহ দিয়েছেন। কুমারী নারী যেহেতু সন্তান প্রসবের যন্ত্রণা সহ্য করেন না সেহেতু কুমারী নারীর মুক্তি বাইবেলের এ দুটো বক্তব্য অনুসারে অসম্ভব।
বর্তমানে প্রসব বেদনা হালকা করার জন্য ‘এনাসথেসিয়া’ (anesthesia) বা অবশীকরণ ঔষধাদি ব্যবহার করা হয়। স্বভাবতই কোনো নারী এ জাতীয় ঔষধ ব্যবহার করলে তিনিও মুক্তি পাবেন না; কারণ তিনি প্রসব বেদনার প্রচণ্ড কষ্ট ভোগ করেননি। এজন্যই পাশ্চাত্য দেশগুলোতে অনেক যাজক ও ধার্মিক প্রসবের সময় এনাসথেসিয়া ব্যবহারে আপত্তি করেন। কারণ তাতে সে নারীর মুক্তির পথ রুদ্ধ হয়ে যায়!