পবিত্র বাইবেল পরিচিতি ও পর্যালোচনা তৃতীয় অধ্যায় - বৈপরীত্য ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ.)
৩. ৫. ২৪. শতপতির দাসকে সুস্থ করার বর্ণনায় বৈপরীত্য

মথি লেখেছেন, যে রোমান অ-ইহুদি শতপতি (centurion) বা একশ সৈন্যের সেনাপতির অসুস্থ দাসকে যীশু সুস্থ করেন তিনি নিজে স্বশরীরে যীশুর নিকট আগমন করেন: ‘‘আর তিনি কফরনাহূমে প্রবেশ করলে এক জন শতপতি তাঁর কাছে এসে বিনতি পূর্বক বলেন, হে প্রভু, আমার গোলাম বাড়িতে পক্ষাঘাতে পড়ে আছে, ভীষণ যন্ত্রণা পাচ্ছে। তিনি তাকে বললেন, আমি গিয়ে তাকে সুস্থ করবো।  শতপতি জবাবে বললেন, হে প্রভু, আমি এমন যোগ্য নই যে, আপনি আমার ছাদের নিচে আসেন; কেবল মুখে বলুন, তাতেই আমার গোলাম সুস্থ হবে।... (যীশু শতপতির ঈমানের প্রশংসা করলেন)। পরে ঈসা সেই শতপতিকে বললেন, চলে যাও, যেমন ঈমান আনলে তেমনি তোমার প্রতি হোক। আর সেই দণ্ডই তার গোলাম সুস্থ হল।’’ (মথি ৮/৫-১৩, মো.-১৩)

লূকের বর্ণনা থেকে জানা যায় যে, উক্ত শতপতি কখনোই নিজে স্বশরীরে যীশুর নিকট আগমন করেননি, সাক্ষাৎ করেননি এবং কোনো কথাও তাঁর সাথে বলেননি; উপরন্তু সাক্ষাত করার যোগ্য তিনি নন তাও নিশ্চিত করেছেন। ‘‘তখন এক জন শতপতির এক জন গোলাম অসুস্থ হয়ে মৃতপ্রায় হয়েছিল; সে তার প্রিয়পাত্র ছিল। তিনি ঈসার সংবাদ শুনে ইহুদীদের কয়েক জন প্রাচীনকে দিয়ে তাঁর কাছে নিবেদন করে পাঠালেন, যেন তিনি এসে তার গোলামকে বাঁচান। ... ঈসা তাদের সঙ্গে গমন করলেন, আর তিনি বাড়ির অনতিদূরে থাকতেই শতপতি কয়েক জন বন্ধুর মধ্য দিয়ে তাঁকে বলে পাঠালেন, প্রভু, নিজেকে কষ্ট দেবেন না; কেননা আমি এমন যোগ্য নই যে, আপনি আমার ছাদের নিচে আসেন; সেজন্য আমি নিজেকেও আপনার কাছে আসার যোগ্য মনে করি না; আপনি মুখে বলুন, তাতেই আমার গোলাম সুস্থ হবে।... (যীশু শতপতির ঈমানের প্রশংসা করলেন)। পরে যাদেরকে পাঠান হয়েছিল, তারা বাড়িতে ফিরে গিয়ে সেই গোলামকে সুস্থ দেখতে পেলেন।’’ (লূক ৭/২-১০, মো.-১৩)