পবিত্র বাইবেল পরিচিতি ও পর্যালোচনা দ্বিতীয় অধ্যায় - পাণ্ডুলিপি, প্রামাণ্যতা ও অভ্রান্ততা ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ.)
২. ৮. ২. সিনাইয়ের পাণ্ডুলিপি (Codex Sinaiticus)

খ্রিষ্টান ধর্মগুরু ও পণ্ডিতদের মতে কডেক্স সিনাটিকাস বা সিনাই বাইবেল (Sinai Bible) গ্রিক বাইবেলের প্রাচীনতম একটা পাণ্ডুলিপি। ভ্যাটিকান পাণ্ডুলিপির সমসাময়িক বা তার পরপরই এটা লেখা বলে তারা ধারণা করেন। খ্রিষ্টীয় চতুর্থ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে পাণ্ডুলিপিটা লেখা হয় বলে তারা দাবি করেন।

এ পাণ্ডুলিপির মধ্যে ৩৪০ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুবরণকারী প্রসিদ্ধ খ্রিষ্টান ধর্মগুরু ইউসিবিয়াসের (Eusebius of Caesarea) বাইবলেীয় পদ্ধতি অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। ফলে গবেষকরা নিশ্চিত যে পাণ্ডুলিপিটা ৩২৫/৩৩০ খ্রিষ্টাব্দের পরে লিখিত। অনেকেই মনে করেন পাণ্ডুলিপিটা ৩৬০ খ্রিষ্টাব্দে লিখিত। তারা মনে করেন যে, এ পাণ্ডুলিপিতে পুরাতন ও নতুন নিয়ম পূর্ণাঙ্গ লেখা ছিল। তবে বর্তমানে বিদ্যমান পাণ্ডুলিপির মধ্যে পুরাতন নিয়মের প্রায় অর্ধেক রয়েছে। নতুন নিয়ম পুর্ণাঙ্গই বিদ্যমান। এ পাণ্ডুলিপিতে নতুন নিয়মের পুস্তক সংখ্যা ২৯। প্রচলিত ২৭টা পুস্তকের সাথে অতিরিক্ত দুটো পুস্তক এতে বিদ্যমান: (১) বার্নাবাসের পত্র (Epistle of Barnabas) এবং (২) হারমাসের রাখাল (The Shepherd of Hermas)।

পুস্তকসংখ্যার এ পার্থক্য ছাড়াও এ পাণ্ডুলিপির বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে: (১) বাইবেলীয় পুস্তকগুলোর ক্রমবিন্যাস প্রচলিত বিন্যাস থেকে ভিন্ন, (২) নতুন নিয়মের অনেক পুস্তকের অনেক শ্লোক (verses) ও বাক্যাংশ (phrases) এ পাণ্ডুলিপিতে বাদ দেওয়া হয়েছে, (৩) বেশ কিছু শ্লোক পরবর্তী সংশোধনকারীরা বাদ দিয়েছেন এবং (৪) অনেক পুস্তকের অনেকগুলো শ্লোক এ পাণ্ডুলিপিতে ভিন্নরূপে লেখা।[1]

[1] উইপিডিয়া: Codex Sinaiticus.