লগইন করুন
চতুর্থ শতাব্দীর প্রসিদ্ধ খ্রিষ্টান ধর্মগুরু ইউসিবিয়াস (মৃত্যু ৪৩০ খ্রিস্টাব্দ) তৃতীয় শতাব্দীর প্রসিদ্ধ ধর্মগুরু অরিগন (Origen: 254 CE) থেকে উদ্ধৃত করেছেন যে, তিনি পুরাতন নিয়মের মধ্যে ২২টা পুস্তক বিদ্যমান বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি সেগুলোর নামও উল্লেখ করেছেন। নামের বর্ণনায় তিনি প্রচলিত কিছু পুস্তককে একত্রিত করে উল্লেখ করেছেন। তাঁর বর্ণনামতে মোশির পাঁচটা পুস্তক ছাড়া অবশিষ্ট ১৭টা পুস্তক নিম্নরূপ: (১) যিহোশূয়ের পুস্তক, (২) বিচারকর্ত্তৃগণের বিবরণ ও রূতের বিবরণ একত্রে, (৩) শমূয়েলের প্রথম ও দ্বিতীয় পুস্তক একত্রে, (৪) রাজাবলির প্রথম ও দ্বিতীয় খন্ড একত্রে, (৫) বংশাবলির প্রথম ও দ্বিতীয় খন্ড একত্রে, (৬) ইয্রার প্রথম ও দ্বিতীয় (নহিমিয়ের) পুস্তক একত্রে, (৭) গীতসংহিতা, (৮) হিতোপদেশ, (৯) উপদেশক, (১০) পরমগীত, (১১) যিশাইয় ভাববাদীর পুস্তক, (১২) যিরমিয় ভাববাদীর পুস্তক, যিরমিয়ের বিলাপ ও যিরমিয়ের পত্র একত্রে, (১৩) দানিয়েলের পুস্তক, (১৪) যিহিষ্কেল ভাববাদীর পুস্তক, (১৫) ইয়োবের বিবরণ, (১৬) ইষ্টেরের বিবরণ ও (১৭) মাকাবিজের পুস্তক।[1]
এ বিবরণ থেকে আমরা কয়েকটা বিষয় জানতে পারছি:
প্রথমত: এ বিবরণ অনুসারে ১২ জন গৌণ ভাববাদীর পুস্তক বাইবেলের অন্তর্ভুক্ত নয়: হোশেয় (Hosea), যোয়েল (Joel), আমোষ (Amos), ওবাদিয় (Obadiah), যোনা (Jonah), মীখা (Micah), নহূম (Nahum), হবক্কূক (Habakkuk), সফনিয় (Zephaniah), হগয় (Haggai), সখরিয় (Zechariah) ও মালাখি (Malachi)।
দ্বিতীয়ত: আমরা দেখছি যে, ওরিগন মাকাবীয় (Maccabees) পুস্তককে পুরাতন নিয়মের অংশ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। বর্তমান ইহুদি বাইবেল এবং প্রটেস্ট্যান্ট বাইবেলে মাকাবীয় পুস্তকের কোনো খণ্ডই নেই। তারা এ বইটাকে জাল বলে গণ্য করেন। ক্যাথলিক বাইবেলে মাকাবীয় পুস্তকের দুটো খণ্ড বিদ্যমান। এছাড়া বিভিন্ন অর্থোডক্স বাইবেলে মাকাবীয় পুস্তকের আরো দুটো খণ্ড বিদ্যমান।
তৃতীয়ত: ওরিগনের বক্তব্য অনুসারে ক্যাথলিক বাইবেলের মাকাবীয় পুস্তকদ্বয় প্রামাণ্য বলে গণ্য। তবে তাদের বাইবেলের অন্য ৫টা পুস্তক জাল বলে প্রমাণিত।
চতুর্থত: ওরিগন বাইবেলের পুস্তকগুলোর মধ্যে ১২ নং পুস্তক হিসেবে যিরমিয় ভাববাদীর পুস্তক, যিরমিয়ের বিলাপ ও যিরমিয়ের পত্র তিনটা পুস্তকের উল্লেখ করেছেন। বর্তমান ইহুদি ও খ্রিষ্টান বাইবেলের মধ্যে প্রথম দুটো পুস্তক বিদ্যমান কিন্তু যিরমিয়র পত্র (Epistle/ Letter of Jeremiah) ক্যাথলিক বা প্রটেস্ট্যান্ট বাইবেলে নেই। তবে সেপ্টুআজিন্ট বা গ্রিক বাইবেল ও অর্থোডক্স বাইবেলে তা বিদ্যমান। ক্যাথলিক বাইবেলের বারুকের পুস্তক নামক গ্রন্থটার ৬ষ্ঠ অধ্যায়ে যিরমিয়ের পত্র বিদ্যমান।[2]
[2] মাইক্রোসফট এনকার্টা, আর্টিকেল: Baruch.