লগইন করুন
ইনশা আল্লাহ, পরবর্তী অধ্যায়ে আমরা শীয়া মতবাদের বিভিন্ন দিক নিয়ে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব। তবে শিরক প্রসারের অন্যতম কারণ ছিল এ মতবাদে আকীদার উৎস সম্পর্কে বিভ্রান্তি এবং ইমামগণ ও ওলীগণের বিষয়ে অতিভক্তি।
তারা বিশ্বাসের উৎস ওহীর মধ্যে বা কুরআন ও হাদীসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখে নি। বরং ওহীর তাফসীরে তাদের ‘আলিম’ বা ইমামদের ব্যাখ্যাকেই ওহীর মর্যাদা দিয়েছে। এ ছাড়া রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর পরে ইমাম, ইমামগণের খলীফা বা ফকীহ নামে বিভিন্ন মানুষের মতামতকেও বিশ্বাসের ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করেছে। এভাবে মূলত তারা কুরআন বা ওহীর কার্যকরিতাই অস্বীকার করেছে। তাদের মতে কুরআনের অর্থ বুঝা সাধারণ মানুষের কাজ নয়। কুরআনের সরল যে অর্থ বুঝা যায় তাও কোনো গুরুত্ব বহন করে না। বরং কুরআনের তাফসীরে ইমামগণ বা তাদের প্রতিনিধি বুজুর্গগণ যা বলেছেন সেটাই চূড়ান্ত। এছাড়া তারা প্রচার করে যে, ইমামগন ও তাদের প্রতিনিধিগণ কাশফ, ইলহাম ও বিশেষ সম্পর্কের মাধ্যমে যে বিশেষ জ্ঞান অর্জন করেন। এ জ্ঞানই মূলত দীনের মূল। তাদের কথা ও ব্যাখ্যার আলোকেই কুরআনের নির্দেশাবিল গ্রহণ বা বর্জন করতে হবে।
পাশাপাশি তারা দাবি করে যে, আলী (রাঃ) ও তাঁর বংশের ইমামগণ ও তাদের বরপ্রাপ্ত ওলীআল্লাহগণ গাইবী বিষয়ের জ্ঞান ও ক্ষমতা রাখেন। বিশ্ব পরিচালনা ও মঙ্গল-অমঙ্গলের ক্ষমতা তাদেরই হাতে দিয়ে দিয়েছেন মহান আল্লাহ। কাজেই তাদের কাছে প্রার্থনা করা, গাইবী বা অলৌকিক সাহায্য চাওয়া প্রয়োজন। তাদের মধ্যস্থতা ছাড়া আল্লাহর কাছে সরাসারি চাওয়া উচিত নয় ...।
স্বভাবতই তারা এ সকল শিরকী বিশ্বাসের পক্ষে কুরআন থেকে কোনো দলীল পেশ করতে পারে না। সহীহ হাদীস তো দূরের কথা তাদের মধ্যে প্রচলিত হাদীস থেকেও তারা কোনো দলীল পেশ করতে পারে না। কিন্তু বিভিন্ন ইমামের নামে প্রচলিত জাল কথা, কুরআনের তাফসীর নামে প্রচলিত বিভিন্ন আলিমের মতামত, বিভিন্ন আলিমের কাশফ, ইলহাম, ইলকা ইত্যাদিকে তারা প্রমাণ হিসেবে পেশ করে। বস্ত্তত, ঈমানের উৎস থেকে একবার মুমিনকে বিচ্যুত করতে পারলে তাকে সবই গেলানো সম্ভব।
শীয়াগণের প্রভাবাধীন সমাজগুলিতে বসবাসরত ‘সুন্নী’ মুসলিমও তাদের এ সকল আকীদা দ্বারা প্রভাবিত হতে থাকে। বিশেষত ক্রুসেড যুদ্ধ ও তাতার আক্রমনের পরে ছিন্নভিন্ন মুসলিম সমাজে ইলম ও আলিমগণের কমতির কারণে এ সকল শিরকী আকীদা প্রসার লাভ করতে থাকে।