লগইন করুন
সম্মানিত পাঠক সম্ভবত অনুভব করছেন যে, এ সকল কথার পরে তো আর কারো মধ্যেই শিরক থাকার কথা নয়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে যুক্তি বা বিবেক নয়, অন্ধ আবেগ ও মোহ হেদায়াতের পথে বড় বাধা। সকল যুক্তি এখানে শেষ হয়ে যায়। আগের কথাগুলিই ঘুরে ফিরে চলে আসে। এরা আল্লাহর প্রিয়পাত্র কাজেই এদের ইবাদতের মাধ্যমেই মহান আল্লাহর নৈকট্য পেতে হবে। এদের সুপারিশ আল্লাহ ফেলেন না, কাজেই এদেরকে ডাকতে হবে। আল্লাহ সর্বশক্তিমান, তার ইচ্ছার বাইরে এরা কেউ কিছু করতে পারে না ইত্যাদি সবই ঠিক। তিনি কাউকে ক্ষমতা দিয়েছেন বলে সুস্পষ্ট বলেন নি তাও ঠিক। অন্য কাউকে তিনি ডাকতে বলেন নি একথাও ঠিক। একমাত্র তাকেই ডাকতে বলেছেন এ কথাও ঠিক। তবুও এরা আল্লাহর প্রিয়পাত্র। এদেরকে আল্লাহ ভালবেসে কিছু ক্ষমতা দিয়েছেন। তিনি ওহীর মাধ্যমে সরাসরি জানান নি। তবে যুক্তিতে তো বুঝা যায়। যুগযুগ ধরে সকলেই বলছে। নবী-রাসূলগণ থেকে পিতা-পিতামহের মাধ্যমে প্রাপ্ত এ নিয়ম ভুল হতে পারে না। ... এভাবেই সকল যুক্তি ও বিবেকের বাণীকে তারা অস্বীকার করেছে। সকল যুক্তি অন্ধ আবেগ এবং দীর্ঘদিনের কর্মের ও বিশ্বাসের প্রতি অন্ধ ভালবাসার কাছে হেরে গিয়েছে। মুশরিকদের এরূপ অন্ধ আবেগ ও অযৌক্তিক বিবেকবিরোধী আচরণে কষ্ট পেতেন রাসূলুল্লাহ (ﷺ)। এ বিষয়ে মহান আল্লাহ বলেন:
أَفَمَنْ زُيِّنَ لَهُ سُوءُ عَمَلِهِ فَرَآَهُ حَسَنًا فَإِنَّ اللَّهَ يُضِلُّ مَنْ يَشَاءُ وَيَهْدِي مَنْ يَشَاءُ فَلا تَذْهَبْ نَفْسُكَ عَلَيْهِمْ حَسَرَاتٍ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ بِمَا يَصْنَعُونَ
‘‘যার অপকর্মকে তার জন্য সৌন্দর্যময় করে দেখানো হয়েছে ফলে সে তা ভাল বলে মনে করেছে, আর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা বিভ্রান্ত করেন এবং যাকে ইচ্ছা সৎপথে পরিচালিত করেন। অতএব তাদের জন্য আক্ষেপ করে তোমার প্রাণ যেন ধ্বংস না হয়। তারা যা করে আল্লাহ তা জানেন।’’[1]
অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন:
أَفَمَنْ كَانَ عَلَى بَيِّنَةٍ مِنْ رَبِّهِ كَمَنْ زُيِّنَ لَهُ سُوءُ عَمَلِهِ وَاتَّبَعُوا أَهْوَاءَهُمْ
‘‘যে ব্যক্তি তার প্রতিপালকের প্রেরিত সুস্পষ্ট প্রমাণের উপর প্রতিষ্ঠিত সে কি তার ন্যায় যার নিকট নিজের অপকর্মগুলি শোভন প্রতীয়মান হয় এবং যারা নিজ খেয়াল-খুশির অনুসরণ করে?’’[2]
অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন:
قُلْ هَلْ نُنَبِّئُكُمْ بِالأَخْسَرِينَ أَعْمَالا الَّذِينَ ضَلَّ سَعْيُهُمْ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَهُمْ يَحْسَبُونَ أَنَّهُمْ يُحْسِنُونَ صُنْعًا
‘‘বল, ‘আমি কি তোমাদেরকে তাদের সংবাদ দিব যারা কর্মে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত? তারা তো সে সকল মানুষ, দুনিয়ার জীবনে যাদের কর্ম বিভ্রান্ত হয়েছে কিন্তু তারা মনে করে যে, তারা সৎকর্ম করছে।’’[3]
[2] সূরা (৪৭) মুহাম্মাদ: ১৪ আয়াত।
[3] সূরা (১৮) কাহাফ: ১০৩-১০৪ আয়াত। আরো দেখুন: সুরা (৭) আ’রাফ: ৩০ আয়াত।