লগইন করুন
ক্ষমতার বিষয়টি মুশরিকদের মধ্যে এমনভাবে আসন গেড়েছিল যে, সবকিছুর পরেও তারা দাবি করত আমাদের উপাস্যদের কিছু ক্ষমতা আল্লাহ দিয়েছেন। এজন্য মহান আল্লাহ সৃষ্টির একত্বের বিষয়টি উল্লেখ করে বারংবার বলেছেন যে, যারা কিছু সৃষ্টি করতে পারে না তাদের তো কোনো ইবাদত পাওয়ার যোগ্যতা থাকতে পারে না। তাদের কোনো ক্ষমতা থাকুক আর নাই থাকুক সর্বাবস্থায় কোনো ভাবেই তারা মহান আল্লাহর সমকক্ষ হতে পারে না। কাজেই কেন আল্লাহকে বাদ দিয়ে তাদেরকে ডাকতে হবে? কুরআন কারীমে বিভিন্ন স্থানে বিষয়টি আলোচনা করা হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন:
أَفَمَنْ يَخْلُقُ كَمَنْ لا يَخْلُقُ أَفَلا تَذَكَّرُونَ
‘‘সুতরাং যিনি সৃষ্টি করেন, তিনি কি তারই মত যে সৃষ্টি করে না? তবুও কি তোমরা শিক্ষা গ্রহণ করবে না?’’[1]
ফিরিশতাগণ, জিন্নগণ, নবীগণ, ওলীগণ, মূতি-প্রতিমা, বৃক্ষ, জড় পদার্থ ইত্যাদি যা কিছু মুশরিকগণ উপাসনা করত সকল উপাস্যের ক্ষেত্রেই এ কথা সমভাবে প্রযোজ্য। তারা সকলেই স্বীকার করত যে, এ সকল উপাস্যের কেউই কোনো কিছুর স্রষ্টা নন। অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন:
وَالَّذِينَ يَدْعُونَ مِنْ دُونِ اللَّهِ لا يَخْلُقُونَ شَيْئًا وَهُمْ يُخْلَقُونَ أَمْوَاتٌ غَيْرُ أَحْيَاءٍ وَمَا يَشْعُرُونَ أَيَّانَ يُبْعَثُونَ
‘‘তারা আল্লাহ ব্যতীত অপর যাদেরকে ডাকে তারা কিছুই সৃষ্টি করে না, তাদেরকেই সৃষ্টি করা হয়। তারা মৃত জীবন-বিহীন এবং পুনরুত্থান কখন হবে সে বিষয়ে তাদের কোনো চেতনা নেই।’’[2]
প্রথম যুক্তিটি মুশরিকদের সকল উপাস্যের বিষয়েই প্রযোজ্য। দ্বিতীয় আয়াতটি ফিরিশত, ঈসা (আঃ), জিন্নগণ বা অনুরূপ জীবিত উপাস্য ছাড়া মুশরিকদের অধিকাংশ উপাস্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন:
أَمْ مَنْ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضَ وَأَنْزَلَ لَكُمْ مِنَ السَّمَاءِ مَاءً فَأَنْبَتْنَا بِهِ حَدَائِقَ ذَاتَ بَهْجَةٍ مَا كَانَ لَكُمْ أَنْ تُنْبِتُوا شَجَرَهَا أَئِلَهٌ مَعَ اللَّهِ بَلْ هُمْ قَوْمٌ يَعْدِلُونَ
‘‘বরং তিনি, যিনি সৃষ্টি করেছেন আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী এবং আকাশ হতে তোমাদের জন্য বর্ষণ করেন বৃষ্টি; অতঃপর আমি তদ্বারা মনোরম উদ্যান সৃষ্টি করি, তার বৃক্ষাদি উদ্গত করার ক্ষমতা তোমাদের নেই। আল্লাহর সাথে অন্য কোনো ইলাহ আছে কি? তবুও তারা এমন এক সম্প্রদায় যারা সত্য বিচ্যুত হয়।’’[3]
এ বিষয়টিও মুশরিকদের জীবিত, মৃত ও জড় সকল উপাস্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এভাবে কুরআন কারীমে বারংবার সৃষ্টির একত্ব উল্লেখ করে শিরকের অযৌক্তিকতা প্রমাণ করা হয়েছে।
[2] সূরা (১৬) নাহল: ২০-২১ আয়াত।
[3] সূরা (২৭) নামল: ৬০ আয়াত। আরো দেখুন ৬১-৬৪ আয়াত।