লগইন করুন
উপরের আলোচনা থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, আল্লাহর প্রেরিত গ্রন্থসমূহে বিশ্বাস করা আমাদের জীবনের জন্য অফুন্ত কল্যাণের উৎস। প্রথমত: এই বিশ্বাস আমাদের প্রতিপালক স্রষ্টার সাথে আমাদের মনের সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় করে এবং তাঁর প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতায় আমাদের মন ভরে উঠে। আমরা মানুষের জন্য আল্লাহর অনন্ত ভালবাসা ও করুণা অনুভব করতে পারি। আমরা দেখতে পাই যে, তিনি আমাদেরকে সৃষ্টি করে এবং বিবেক ও বিচার জ্ঞান দান করেই ছেড়ে দেনননি। উপরন্তু আমাদেরকে কল্যাণ ও মঙ্গলের পথের দিশা দানের জন্য তাঁর মনোনীত নবী-রাসূলগণের মাধ্যমে তাঁর গ্রন্থ প্রেরণ করেছেন। বিশেষত মানবীয় জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার কারণে মানুষ যে সকল বিষয় বুঝতে পারে না বা শুধু মানবীয় জ্ঞানের উপর নির্ভর করে বুঝতে গেলে বিভ্রান্তির মধ্যে নিপতিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং যে সকল বিষয়ে মানুষ ভালমন্দ বুঝলেও পার্থিব স্বার্থ বা কামনা-বাসনার বশবর্তী হয়ে ভুল সিদ্ধান্ত বা ভুল মত দান করতে পারে সেসকল বিষয়ে সঠিক পথের ও সঠিক মতের জ্ঞান দানের জন্য আল্লাহর তাঁর বাণী প্রেরণ করেছেন, যেন মানুষ সর্বদা কল্যাণ ও মঙ্গলের পথে থাকতে পারে। মানুষের প্রতি স্রষ্টার এ এক অপরীসীম করুণা। এ করুণার উপলব্ধি তাঁর প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতার অনুভূতি গভীর করে। আমরা জানি যে, স্রষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ভালবাসার অনুভব আমাদের মনের সকল প্রশান্তি ও শক্তির উৎস। এই অনুভব যত গভীর হবে, আমাদের মনের প্রশান্তি এবং শক্তিও তত প্রগাঢ় হবে।
উপরন্তু এই বিশ্বাস আমাদেরকে আল্লাহর প্রেরিত গ্রন্থের অনুসরণ এবং তাঁর শিক্ষা অনুযায়ী জীবণ পরিচালনায় উদ্ধুদ্ধ করে। আর আমরা দেখেছি যে, আল্লাহর বাণীর অনুসরণের মধ্যেই রয়েছে আমাদের জীবনের সকল কল্যাণ, মঙ্গল, উন্নতি ও সফলতা।
এছাড়া আল্লাহর প্রেরিত গ্রন্থে বিশ্বাসের মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন যুগে বিভিন্ন সমাজে বিরাজিত ধর্মীয় আচার আচরণে বিভিন্নতার কারণ জানতে পারি। আমরা বুঝতে পারি যে, আল্লাহ বিভিন্ন যুগে বিভিন্ন সমাজের মানুষদেরকে বিভিন্ন ধরণের বিধান দান করেছেন। এসকল ধর্মের বিশ্বাস ও নৈতিক বিধান মূলত এক। তবে ব্যবহারিক বিধানবলী সংশ্লি্ষ্ট জনগোষ্ঠীর চাহিদা ও প্রয়োজন অনুযায়ী ভিন্ন ছিল। সর্বশেষ গ্রন্থ আল-কুরআন প্রেরণ করে আল্লাহর সকল বিধানের সমন্বয় সাধন করেছেন।