লগইন করুন
ঈমানের অন্যতম রুকন আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত গ্রন্থসমূহে বিশ্বাস করা। আমরা দেখেছি যে, কুরআন ও হাদীসে বিভিন্ন স্থানে ‘আল্লাহর গ্রন্থসমূহে’ বিশ্বাস করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং যারা তাতে বিশ্বাস করে না তাদের ভয়ঙ্কর বিভ্রান্তির কথা বলা হয়েছে।
আল্লাহর কিতাবসমূহে বিশ্বাস করার সাধারণ প্রকাশ এই যে, মুমিন সুদৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে বিশ্বাস করেন যে, আল্লাহ যুগে যুগে নবী-রাসূলদের নিকট ওহীর মাধ্যমে ‘কিতাব’ প্রেরণ করেছেন, যেগুলি সন্দেহাতীতভাবে আল্লাহর বাণী, আল্লাহর পক্ষ থেকে সত্য হেদায়াত, মানবজাতির পথনির্দেশক নূর। তবে সেগুলি বিকৃত বা বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। তাই আল্লাহ সর্বশেষ কিতাব ‘আল-কুরআন’ নাযিল করেছেন পূর্ববর্তী সকল গ্রন্থের সত্যতা ঘোষণা করতে, সেগুলির স্থান পূরণ করতে এবং পূর্ববতী সকল কিতাবকে রহিত করতে। এই সর্বশেষ কিতাব কুরআনের মধ্যেই সকল কিতাবের নির্যাস ও মানব জাতির মুক্তির পথ রয়েছে।
আল্লাহর কিতাবসমূহের ঈমানের বিস্তারিত দিকগুলি নিম্নরূপ:
৪. ৩. ১. আল্লাহ যুগে যুগে নবী-রাসূলগণকে কিতাব দিয়েছেন
মানব জাতির ইহলৌকিক ও পরলৌকিক মঙ্গলের পথ প্রদর্শনের জন্য মহান আল্লাহ যুগে-যুগে তাঁর নবী রাসূলদের কাছে ওহী বা প্রত্যাদেশের মাধ্যমে কিতাব নাযিল করেছেন। আল্লাহর প্রেরিত গ্রন্থসমূহে ছিল সংশ্লিষ্ট জাতি বা সমাজের জন্য সত্য ও সৎ পথের দিশা। আমরা তাই সাধারণভাবে বিশ্বাস করি যে, যুগে-যুগে নবী রাসূলগণের কাছে আল্লাহ তাঁর বাণী গ্রন্থ আকারে প্রেরণ করেছেন, যার মধ্যে তিনি তৎকালীন মানব সমাজের জন্য সত্য, সৎ কল্যাণ ও মঙ্গলের পথের নির্দেশনা দান করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন:
كَانَ النَّاسُ أُمَّةً وَاحِدَةً فَبَعَثَ اللَّهُ النَّبِيِّينَ مُبَشِّرِينَ وَمُنْذِرِينَ وَأَنْزَلَ مَعَهُمُ الْكِتَابَ بِالْحَقِّ لِيَحْكُمَ بَيْنَ النَّاسِ فِيمَا اخْتَلَفُوا فِيهِ
‘‘সকল মানুষ ছিল একই উম্মতভূক্ত। অত:পর আল্লাহ সুসংবাদাতা ও সতর্ককারীরূপে নবীগণকে প্রেরণ করেন এবং মানুষের মাঝে যে সকল বিষয়ে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়েছিল সে সকল বিষয়ে বিধান দানের জন্য তাদের সাথে সত্যসহ গ্রন্থ অবতীর্ণ করেন।’’[1]
এ থেকে আমরা জানতে পারি যে, আল্লাহ যুগে-যুগে মানব জাতির পথ প্রদর্শনের জন্য নবীদেরকে প্রেরণ করেছেন এবং তাঁদের সাথে সত্যসহ গ্রন্থ নাযিল করেছেন, যে সকল গ্রন্থে মানব সমাজের সকল সমস্যার সমাধান দিয়েছেন। এ সকল গ্রন্থের নাম ও বিবরণ বিস্তারিতভাবে আমরা জানতে পারি না। অন্যত্র আল্লাহ কতিপয় নবীর (আঃ) নাম উল্লেখ করে তাঁদের উপর অবতীর্ণ গ্রন্থসমূহে বিশ্বাস করার নির্দেশ দিয়েছেন। এক আয়াতে আল্লাহ বলেন:
قُولُوا آَمَنَّا بِاللَّهِ وَمَا أُنْزِلَ إِلَيْنَا وَمَا أُنْزِلَ إِلَى إِبْرَاهِيمَ وَإِسْمَاعِيلَ وَإِسْحَاقَ وَيَعْقُوبَ وَالأسْبَاطِ وَمَا أُوتِيَ مُوسَى وَعِيسَى وَمَا أُوتِيَ النَّبِيُّونَ مِنْ رَبِّهِمْ لا نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِنْهُمْ وَنَحْنُ لَهُ مُسْلِمُونَ
‘‘তোমরা বল আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহতে, এবং আমাদের প্রতি যা অবতীর্ণ করা হয়েছে এবং ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকূব ও তাঁর বংশধরগণের উপররে যা অবতীর্ণ করা হয়েছে, এবং মূসা, ঈসা ও অন্যান্য নবীগণকে তাঁদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে যা দেওয়া হয়েছে, সবকিছুর উপরে আমরা বিশ্বাস আনয়ন করেছি। আমরা তাঁদের মধ্যে কোনো পার্থক্য করিনা এবং আমরা তাঁর (আল্লাহ) নিকট আত্মসমর্পণকারী (মুসলিম)।’’[2]
অন্যত্র আল্লাহ বলেন:
إِنَّ هَذَا لَفِي الصُّحُفِ الأُولَى صُحُفِ إِبْرَاهِيمَ وَمُوسَى
‘‘এ তো আছে পূর্ববর্তী ‘সাহীফা’গুলিতে; ইবরাহীম ও মূসার ‘সহীফা’গুলিতে।[3]
‘সাহীফা’ অর্থ ‘লিখিত পৃষ্ঠাসমূহ’, ‘পুস্তিকা’ বা গ্রন্থ। এ সকল আয়াত থেকে আমরা জানতে পারি যে, ইবরাহীম ও মূসাকেও সাহীফা বা গ্রন্থ প্রদান করা হয়েছিল।
৪. ৩. ২. জানা ও অজানা কিতাব
এভাবে আমরা বিশ্বাস করি যে, নবীগণের প্রতি প্রদত্ত আল্লাহর সকল গ্রন্থই ছিল সত্য ও কল্যাণের পথের দিশারী। কিন্তু আমরা এ সকল গ্রন্থের অধিকাংশেরই কোনো নাম বা বিষয়বস্ত্ত জানি না। আমরা কেবল আল্লাহর অপার করুণা, মানব জাতির হেদায়াতের জন্য গ্রন্থ নাযিলের ধারায় বিশ্বাস করি। এবং বিশ্বাস করি যে, তিনি যে যুগে যা কিছু নাযিল করেছেন সব কিছুই সংশ্লিষ্ট মানুষদের জন্য সুনিশ্চিত সত্য ও কল্যাণের দিশারী ছিল।
৪. ৩. ৩. প্রসিদ্ধ তিন কিতাব
কুরআন ও হাদীসে পূর্ববর্তী গ্রন্থসমূহের মধ্য থেকে ‘তাওরাত’, ‘যাবূর’ ও ‘ইনজীল’- এই তিনটি পুস্তকের কথা বারংবার উল্লেখ করা হয়েছে। এ তিনটি গ্রন্থ সম্পর্কে কুরআন ও হাদীসের আলোকে আমরা নিম্নের বিষয়গুলি জানতে পারি:
প্রথমত: আল্লাহ তিনজন প্রসিদ্ধ নবীকে গ্রন্থত্রয় প্রদান করেছিলেন।
(১) তাওরাত: কুরআন ও হাদীস থেকে আমরা জানতে পারি যে, আল্লাহ তাঁর নবী মূসা (আঃ)-এর কাছে তাওরাত নামক গ্রন্থ ওহীর মাধ্যমে প্রেরণ করেন। কুরআনে এ বিষয়ে অনেক আয়াত রয়েছে। আল্লাহ বলেন:
ثُمَّ آَتَيْنَا مُوسَى الْكِتَابَ تَمَامًا عَلَى الَّذِي أَحْسَنَ وَتَفْصِيلا لِكُلِّ شَيْءٍ وَهُدًى وَرَحْمَةً لَعَلَّهُمْ بِلِقَاءِ رَبِّهِمْ يُؤْمِنُونَ
‘‘এবং মূসাকে দিয়েছিলাম কিতাব যা সৎকর্মপরায়ণের জন্য সম্পূর্ণ, যা সমস্ত কিছুর বিশদ বিবরণ, পথ-নির্দেশ এবং দয়া-স্বরূপ, যাতে তারা তাদের প্রতিপালকের সাক্ষাৎ সম্বন্ধে বিশ্বাস করে।’’[4]
অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন:
إِنَّا أَنْزَلْنَا التَّوْرَاةَ فِيهَا هُدًى وَنُورٌ يَحْكُمُ بِهَا النَّبِيُّونَ الَّذِينَ أَسْلَمُوا لِلَّذِينَ هَادُوا وَالرَّبَّانِيُّونَ وَالأَحْبَارُ بِمَا اسْتُحْفِظُوا مِنْ كِتَابِ اللَّهِ وَكَانُوا عَلَيْهِ شُهَدَاءَ فَلا تَخْشَوُا النَّاسَ وَاخْشَوْنِ وَلا تَشْتَرُوا بِآَيَاتِي ثَمَنًا قَلِيلا وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ
‘‘নিশ্চয় আমি তাওরাত নাযিল করেছিলাম, তাতে ছিল পথ-নির্দেশ ও নূর (আলো)। নবীগণ যারা আল্লাহ অনুগত ছিল তারা ইয়াহূদীদেরকে তদনুসারে বিধান দিত, আরও বিধান দিত রাববানীগণ (আল্লাহওয়ালাগণ) এবং বিদ্ব্যানগণ, কারণ তাদেরকে আল্লাহর কিতাবের রক্ষক করা হয়েছিল এবং তারা ছিল তার সাক্ষী। সতরাং মানুষকে ভয় করো না, আমাকেই ভয় কর এবং আমার আয়াত তুচ্ছ মূল্যে বিক্রয় করো না। আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তদনুসারে যারা বিধান দেয় না তারাই কাফির।’’[5]
(২) যাবুর : মহান আল্লাহ তাঁর নবী দাউদ (আঃ)-কে যাবূর গ্রন্থ প্রদান করেন। মহান আল্লাহ বলেন:
وَلَقَدْ فَضَّلْنَا بَعْضَ النَّبِيِّينَ عَلَى بَعْضٍ وَآَتَيْنَا دَاوُودَ زَبُورًا
‘‘আমি নবীগণকে কারো উপরে কারো অতিরিক্ত মর্যাদা দিয়েছি; এবং দাউদকে আমি যাবূর প্রদান করি।’’[6]
(৩) ইনজীল : কুরআন ও হাদীসের বর্ণনা থেকে আমরা জানতে পারি যে, আল্লাহ তাঁর নবী ঈসা (আঃ)-কে যে গ্রন্থ প্রদান করেন তার নাম ছিল ‘‘ইনজীল’’। আল্লাহ বলেন:
وَقَفَّيْنَا عَلَى آَثَارِهِمْ بِعِيسَى ابْنِ مَرْيَمَ مُصَدِّقًا لِمَا بَيْنَ يَدَيْهِ مِنَ التَّوْرَاةِ وَآَتَيْنَاهُ الإِنْجِيلَ فِيهِ هُدًى وَنُورٌ وَمُصَدِّقًا لِمَا بَيْنَ يَدَيْهِ مِنَ التَّوْرَاةِ وَهُدًى وَمَوْعِظَةً لِلْمُتَّقِينَ
‘‘মারয়াম-তনয় ঈসাকে তার পূর্বে অবতীর্ণ তাওরাতের সমর্থকরূপে তাদের পশ্চাতে প্রেরণ করেছিলাম এবং তাকে ইনজীল দিয়েছিলাম তার পূর্বে অবতীর্ণ তাওরাতের সমর্থকরূপে এবং মুত্তাকীদের জন্য পথের নির্দেশ ও উপদেশরূপে; তাতে ছিল পথের নির্দেশ ও নূর (আলো)।’’[7]
দ্বিতীয়ত: তাঁদের অনুসারীগণ গ্রন্থগুলি বিকৃত করেছে।
কুরআন ও হাদীসের নির্দেশনা অনুসারে আমরা সুদৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে বিশ্বাস করি যে, উপর্যুক্ত তিনটি গ্রন্থকেই তাদের অনুসারীগণ বিকৃত করেছে। ‘বনী ইসরাঈল’ বা ‘আহলু কিতাব’ তাদের উপর অবতীর্ণ কিতাবগুলি সংযোজন, বিয়োজন, পরিবর্তন, ইচ্ছাকৃত গোপন করা, ভুলে যাওয়া, হারিয়ে ফেলা ইত্যাদি কর্মের মাধ্যমে বিকৃত করে বলে কুরআন ও হাদীসে বারংবার উল্লেখ করা হয়েছে। এক স্থানে মহান আল্লাহ বলেন:
أَفَتَطْمَعُونَ أَنْ يُؤْمِنُوا لَكُمْ وَقَدْ كَانَ فَرِيقٌ مِنْهُمْ يَسْمَعُونَ كَلامَ اللَّهِ ثُمَّ يُحَرِّفُونَهُ مِنْ بَعْدِ مَا عَقَلُوهُ وَهُمْ يَعْلَمُونَ
‘‘তোমরা কি এ আশা কর যে, তারা তোমাদের কথায় ঈমান আনবে? অথচ তাদের অবস্থা তো এই যে, তাদের একদল আল্লাহর বাণী শ্রবন করত এবং বুঝার পর জেনে শুনে তা বিকৃত করত।’’[8]
মহান আল্লাহ আরো বলেন:
فَوَيْلٌ لِلَّذِينَ يَكْتُبُونَ الْكِتَابَ بِأَيْدِيهِمْ ثُمَّ يَقُولُونَ هَذَا مِنْ عِنْدِ اللَّهِ لِيَشْتَرُوا بِهِ ثَمَنًا قَلِيلا فَوَيْلٌ لَهُمْ مِمَّا كَتَبَتْ أَيْدِيهِمْ وَوَيْلٌ لَهُمْ مِمَّا يَكْسِبُونَ
‘‘সুতরাং দুর্ভোগ তাদের জন্য যারা নিজ হাতে কিতাব রচনা করে এবং তুচ্ছ মূল্য প্রাপ্তির জন্য বলে, ‘এ আল্লাহর নিকট হতে’। তাদের হাত যা রচনা করেছে তার জন্য দুর্ভোগ তাদের এবং যা তারা উপার্জন করে তার জন্য দুর্ভোগ তাদের।’’[9]
অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন:
فَبِمَا نَقْضِهِمْ مِيثَاقَهُمْ لَعَنَّاهُمْ وَجَعَلْنَا قُلُوبَهُمْ قَاسِيَةً يُحَرِّفُونَ الْكَلِمَ عَنْ مَوَاضِعِهِ وَنَسُوا حَظًّا مِمَّا ذُكِّرُوا بِهِ
‘‘তাদের অঙ্গীকার ভঙ্গের জন্য তাদেরকে লানত করেছি এবং তাদের হৃদয় কঠিন করেছি, তারা শব্দগুলিকে স্বস্থান থেকে বিকৃত করে এবং তাদেরকে যা শিক্ষা দেওয়া হয়েছিল তার এক অংশ ভুলে গিয়েছে।’’[10]
মহান আল্লাহ আরো বলেন:
وَمِنَ الَّذِينَ قَالُوا إِنَّا نَصَارَى أَخَذْنَا مِيثَاقَهُمْ فَنَسُوا حَظًّا مِمَّا ذُكِّرُوا بِهِ فَأَغْرَيْنَا بَيْنَهُمُ الْعَدَاوَةَ وَالْبَغْضَاءَ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ وَسَوْفَ يُنَبِّئُهُمُ اللَّهُ بِمَا كَانُوا يَصْنَعُونَ يَا أَهْلَ الْكِتَابِ قَدْ جَاءَكُمْ رَسُولُنَا يُبَيِّنُ لَكُمْ كَثِيرًا مِمَّا كُنْتُمْ تُخْفُونَ مِنَ الْكِتَابِ وَيَعْفُو عَنْ كَثِيرٍ قَدْ جَاءَكُمْ مِنَ اللَّهِ نُورٌ وَكِتَابٌ مُبِينٌ
‘‘যারা বলে ‘আমরা খৃস্টান’ তাদেরও অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলাম; কিন্তু তাদেরকে যা শিক্ষা দেওয়া হয়েছিল তার এক অংশ তার ভুলে গিয়েছে।’’[11]
ইহূদী-খৃস্টানগণ কোনো কোনো নবীর ক্ষেত্রে ‘ঈশ্বরত্ব’ দাবি করে এবং তাদের ইবাদত করে। বিশেষত খৃস্টানগণ দবি করে যে, ঈসা (আঃ) নিজেকে ‘আল্লাহ’ বলে দাবি করেছেন। মহান আল্লাহ এ বিষয়ে জানিয়েছেন যে, এ সকল বক্তব্য যা কিছু তাদের কিতাবে রয়েছে সবই বিকৃতি ও সংযোজন। কোনো নবী কখনোই আল্লাহকে ছাড়া অন্য কাউকে ইবাদত করতে বলতে পারেন না। মহান আল্লাহ বলেন:
وَإِنَّ مِنْهُمْ لَفَرِيقًا يَلْوُونَ أَلْسِنَتَهُمْ بِالْكِتَابِ لِتَحْسَبُوهُ مِنَ الْكِتَابِ وَمَا هُوَ مِنَ الْكِتَابِ وَيَقُولُونَ هُوَ مِنْ عِنْدِ اللَّهِ وَمَا هُوَ مِنْ عِنْدِ اللَّهِ وَيَقُولُونَ عَلَى اللَّهِ الْكَذِبَ وَهُمْ يَعْلَمُونَ مَا كَانَ لِبَشَرٍ أَنْ يُؤْتِيَهُ اللَّهُ الْكِتَابَ وَالْحُكْمَ وَالنُّبُوَّةَ ثُمَّ يَقُولَ لِلنَّاسِ كُونُوا عِبَادًا لِي مِنْ دُونِ اللَّهِ وَلَكِنْ كُونُوا رَبَّانِيِّينَ بِمَا كُنْتُمْ تُعَلِّمُونَ الْكِتَابَ وَبِمَا كُنْتُمْ تَدْرُسُونَ
‘‘তাদের মধ্যে একদল লোক আছেই যারা কিতাবকে জিহবা দ্বারা বিকৃত করে, যাতে তোমরা তাকে আল্লাহর কিতাবের অংশ মনে কর; কিন্তু তা কিতাবের অংশ নয়, এবং তারা বলে: ‘তা আল্লাহর পক্ষ হতে’, কিন্তু তা আল্লাহর পক্ষ হতে প্রেরিত নয়। তারা জেনে শুনে আল্লাহর সম্পর্কে মিথ্যা বলে। কোনো ব্যক্তিকে আল্লাহ কিতাব্, হিক্মত ও নুবুওয়াত দান করার পর সে মানুষকে বলবে, ‘আল্লাহর পরিবর্তে তোমার আমার বান্দা হয়ে যাও’- তা তার জন্য শোভন নয়; বরং সে বলবে, তোমরা রাববানী (আল্লাহওয়ালা) হয়ে যাও, যেহেতু তোমরা কিতাব শিক্ষা দান কর এবং যেহেতু তোমরা অধ্যয়ন কর।’’[12]
তৃতীয়ত: বিকৃত অবস্থায় সেগুলির অস্তিত্ব আছে এবং সেগুলির মধ্যে আল্লাহর বাণী ও শরীয়তের অনেক বিধান রয়েছে।
কুরআন-হাদীসের আলোকে আমরা জানতে পারি যে, মূল তাওরাত, যাবূর ও ইনজীলের অনেক অংশ তারা ভুলে, অবহেলায় ও ইচ্ছাকৃত বিকৃতি, সংযোজন বা বিয়োজনের মাধ্যমে বিলুপ্ত করেছে। আবার কিছু পুস্তক তারা নিজেরা লিখে ওহী বলে চালিয়েছে। তবে অন্যান্য গ্রন্থের মত তা একেবারে হারিয়ে যায় নি। বিকৃতি, সংযোজন, বিয়োজন, বিলুপ্তি, ভুয়ে যাওয়া, গোপন করা ইত্যাদির পরেও ‘আহলু কিতাব’ বা ইহূদী-খৃস্টানগণের নিকট তাওরাত, যাবূর ও ইনজীল নামে কিছু কিতাব রয়েছে, যেগুলির মধ্যে আল্লাহর বাণী ও মানবীয় বিকৃতি সংমিশ্রিত হয়ে রয়েছে। এগুলির মধ্যে পূর্ববর্তী নবীগণের বিষয়ে, তাওহীদ ও রিসালাতের বিষয়ে, শরীয়ত বা ব্যবস্থার বিষয়ে এবং শেষ নবী মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর আগমন ও তার উপর বিশ্বাস স্থাপনের বিষয়ে অনেক সঠিক শিক্ষা এখনো বিদ্যমান। এ সব বিষয় থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে আল্লাহ ‘আহলু কিতাব’-দেরকে আহবান করেছেন। কখনো কখনো তাদের বিকৃত বিশ্বাস বা কর্মের ভিত্তিহীনতা প্রমাণ করতে তাদের কিতাব থেকে প্রমাণ পেশ করতে আহবান করেছেন; কারণ অনেক বিকৃতি তারা তাওরাত, যাবূর বা ইনজীলের মূল পাঠে সংযোগ করেছিল এবং কিছু বিষয় তার অর্থ ও তাফসীরের নামে বিকৃতি করলে মূল পাঠের মধ্যে তা ছিল না। মহান আল্লাহ বলেন:
وَقَالَتِ الْيَهُودُ لَيْسَتِ النَّصَارَى عَلَى شَيْءٍ وَقَالَتِ النَّصَارَى لَيْسَتِ الْيَهُودُ عَلَى شَيْءٍ وَهُمْ يَتْلُونَ الْكِتَابَ كَذَلِكَ قَالَ الَّذِينَ لا يَعْلَمُونَ مِثْلَ قَوْلِهِمْ فَاللَّهُ يَحْكُمُ بَيْنَهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فِيمَا كَانُوا فِيهِ يَخْتَلِفُونَ
‘‘ইহূদীরা বলে, ‘খৃস্টানদের কোনো ভিত্তি নেই’, এবং খৃস্টানগণ বলে, ‘ইহূদীদের কোনো ভিত্তি নেই’; অথচ তারা কিতাব পাঠ করে! এভাবে যারা কিছুই জানে না তারাও অনুরূপ কথা বলে। সুতরাং যে বিষয়ে তাদের মতভেদ আছে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তার মিমাংসা করবেন।’’[13]
অর্থাৎ তাদের গ্রন্থাবলি বিকৃত করার পরেও যা তাদের কাছে অবশিষ্ট রয়েছে তাও সুস্পষ্ট বা আক্ষরিকভাবে তাদের এই দাবি প্রমাণ করে না। বরং তাদের নিকট বিদ্যমান কিতাব প্রমাণ করে যে, উভয় ধর্মেরই ভিত্তি আছে এবং উভয় সম্প্রদায়ই বিভিন্ন বিভ্রান্তি ও সীমালঙ্ঘনে লিপ্ত। যাদের কোনোই কিতাব নেই তারা যেমন আন্দাযে বিভিন্ন যুক্তি দিয়ে কথা বলে এরাও তেমনি কথা বলে।
ইহূদীগণ রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে বিব্রত করার জন্য তাঁর কাছে বিচার প্রার্থনা করে। এ বিষয়ে আল্লাহ বলেন:
وَكَيْفَ يُحَكِّمُونَكَ وَعِنْدَهُمُ التَّوْرَاةُ فِيهَا حُكْمُ اللَّهِ ثُمَّ يَتَوَلَّوْنَ مِنْ بَعْدِ ذَلِكَ وَمَا أُولَئِكَ بِالْمُؤْمِنِينَ
‘‘তারা কিভাবে তোমার উপর বিচারভার ন্যস্ত করবে যখন তাদের নিকট রয়েছে তাওরাত, যার মধ্যে আল্লাহর আদেশ বিদ্যমান? তার পরও তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং তারা মুমিন নয়।’’[14]
অর্থাৎ যে বিষয়ে তারা বিচার প্রার্থনা করছে সে বিষয়ক বিধান তাওরাতেই বিদ্যমান। অথচ তদানুসারে বিচার না করে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নিকট বিচার চাওয়া প্রমাণ করে যে, তারা অবিশ্বাস ও প্রতারণার জন্যই এরূপ করেছে।
ইহূদীরা দাবি করত যে, উটের মাংস হারাম। বিষয়টি তাদের বানোয়াট ব্যাখ্যা মাত্র, তাওরাতে তা ছিল না। এ বিষয়ে আল্লাহ বলেন:
كُلُّ الطَّعَامِ كَانَ حِلا لِبَنِي إِسْرَائِيلَ إِلا مَا حَرَّمَ إِسْرَائِيلُ عَلَى نَفْسِهِ مِنْ قَبْلِ أَنْ تُنَزَّلَ التَّوْرَاةُ قُلْ فَأْتُوا بِالتَّوْرَاةِ فَاتْلُوهَا إِنْ كُنْتُمْ صَادِقِينَ
‘‘তাওরাত অবতীর্ণ হওয়ার ইসরাঈল (ইয়াকূব) নিজের জন্য যা হারাম করেছিলেন তা ব্যতীয় বনী ইসরাঈলের জন্য যাবতীয় খাদ্যই হালাল ছিল। বল: ‘যদি তোমরা সত্যবাদী হও তবে তওরাত আন এবং পাঠ কর।’’[15]
মহান আল্লাহ আরো বলেন:
قُلْ يَا أَهْلَ الْكِتَابِ لَسْتُمْ عَلَى شَيْءٍ حَتَّى تُقِيمُوا التَّوْرَاةَ وَالإِنْجِيلَ وَمَا أُنْزِلَ إِلَيْكُمْ مِنْ رَبِّكُمْ
‘‘বলুন, হে কিতাবীগণ, তাওরাত, ইন্জীল ও যা তোমাদের প্রতিপালকের নিকট হতে তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে (আল-কুরআন) তোমরা তা প্রতিষ্ঠা না করা পর্যন্ত তোমাদের কোনো ভিত্তিই নেই।’’[16]
অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন:
وَلْيَحْكُمْ أَهْلُ الإِنْجِيلِ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فِيهِ وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الْفَاسِقُونَ
‘‘ইনজীল অনুসারিগণ যেন আল্লাহ তাতে যা অবতীর্ণ করেছেন তদনুসারে বিধান দেয়। আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তদনুসারে যারা বিধান দেয় না তারা ফাসিক (সত্যত্যাগী)।’’[17]
চতুর্থত: ওহী ও বিকৃতির মধ্যে পার্থক্যের মাপাকাঠি কুরআন।
এভাবে আমরা দেখছি যে, মহান আল্লাহ তাঁর তিন নবীকে তাওরাত, যাবূর ও ইনজীল নামে তিনটি আসামানী গ্রন্থ প্রদান করেন, যেগুলিতে নূর ও হেদায়াত ছিল। রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর আগমনের পূর্বেই তাঁদের অনুসারীগণ বিভিন্নভাবে পুস্তকগুলির কিছু অংশ ভুলে যায় ও বিলুপ্ত করে এবং বিদ্যমান অংশ বিকৃত ও পরিবর্তিত করে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর যুগে এবং বর্তমানে এ নামে যে পুস্তকগুলি বিদ্যমান সেগুলির মধ্যে কিছু ওহী এবং কিছু ওহীর নামে মানবীয় সংযোজন, পরিবর্তন বা বিকৃতি বিদ্যমান। এগুলির মধ্যে ঠিক কোন্ কথাটি সঠিক ওহী এবং কোন্ কথাটি বিকৃতি তা বুঝার বা যাচাই করার কোনো নিরপেক্ষ উপায় নেই। এজন্য আল-কুরআনই সত্যাসত্য যাচাইয়ের একমাত্র মাপকাঠি। মহান আল্লাহ বলেন:
وَأَنْزَلْنَا إِلَيْكَ الْكِتَابَ بِالْحَقِّ مُصَدِّقًا لِمَا بَيْنَ يَدَيْهِ مِنَ الْكِتَابِ وَمُهَيْمِنًا عَلَيْهِ فَاحْكُمْ بَيْنَهُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ وَلا تَتَّبِعْ أَهْوَاءَهُمْ عَمَّا جَاءَكَ مِنَ الْحَقِّ
‘‘এবং আপনার উপর সত্যসহ গ্রন্থ অবতীর্ণ করেছি, তার পূর্বে অবতীর্ণ গ্রন্থসমূহের সমর্থক (confirmer) ও পর্যবেক্ষক-নিয়ন্ত্রক (watcher) রূপে।’’[18]
এভাবে আমরা জানছি যে, আল-কুরআন পূর্ববর্তী সকল গ্রন্থের নিয়ন্ত্রক, পর্যবেক্ষক ও পরীক্ষক। এ সকল গ্রন্থের মধ্যে বিদ্যমান কোনো তথ্য যদি কুরআনের সাক্ষ্যে সত্য বলে প্রমাণিত হয় তবে আমরা তা সত্য বলে বিশ্বাস করি। আর যে তথ্য কুরআনের সাক্ষ্যে মিথ্য বলে প্রমাণিত তাকে আমরা মিথ্যা বলে বিশ্বাস করি। আর কুরআন যদি সে বিষয়ে নীরব থাকে, তবে আমরাও সে বিষয়ে নীরব থাকি; কারণ তা সত্যও হতে পারে আবার মিথ্যাও হতে পারে।
এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর উম্মাতকে সহজ মূলনীতি শিখিয়েছেন। ইহূদী-খৃস্টানদের কিতাবে যা কিছু রয়েছে তা কুরআনের আলোকে বিচার করা সাধারণভাবে সকলের জন্য হয়ত সহজ নয়। কাজেই এ সকল পুস্তকের কিছুই সঠিক বলে গ্রহণ করার বা মিথ্যা বলে ঘোষণা দেওয়া যাবে না। বরং বলতে হবে, আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তা সঠিক। তোমাদের গ্রন্থে কোন্ কথাটি সঠিক এবং কোন্টি বিকৃতি তা তিনিই ভাল জানেন। আবূ হুরাইরা (রা) বলেন,
كَانَ أَهْلُ الْكِتَابِ يَقْرَءُونَ التَّوْرَاةَ بِالْعِبْرَانِيَّةِ وَيُفَسِّرُونَهَا بِالْعَرَبِيَّةِ لأَهْلِ الإِسْلامِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ (ﷺ): لا تُصَدِّقُوا أَهْلَ الْكِتَابِ وَلا تُكَذِّبُوهُمْ وَقُولُوا آمَنَّا بِاللَّهِ وَمَا أُنْزِلَ إِلَيْنَا وَمَا أُنْزِلَ... الآية.
কিতাবীগণ হিব্রু ভাষায় তাওরাত পাঠ করে তা আররীতে অনুবাদ করে মুসলিমদের শুনাতো। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন: ‘‘তোমরা কিতাবীদেরকে সত্য বলেও বিশ্বাস করবে না এবং মিথ্যা বলেও ঘোষণা দিবে না। বরং বলবে: ‘‘আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহতে, এবং আমাদের প্রতি যা অবতীর্ণ করা হয়েছে এবং ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকূব ও তাঁর বংশধরগণের উপরে[19]...... আয়াত।’’[20]
এখানে উল্লেখ্য যে, কুরআন নাযিলের সময় এবং পরবর্তী প্রায় হাজার বৎসর যাবত ইহূদী-খৃস্টানগণ দাবি করত যে, তাদের নিকট বিদ্যমান তাওরাত, যাবূর, ইনজীল ইত্যাদি গ্রন্থ সবই আক্ষরিকভাবে বিশুদ্ধ। এর মধ্যে কোনোরূপ বিকৃতি হয় নি। কিন্তু গত কয়েকশত বৎসরের গবেষণার মাধ্যমে পাশ্চাত্যের ইহূদী খৃস্টানগণই প্রমাণ করেছেন যে, বাইবেলের অনেক পুস্তিকা হারিয়ে গিয়েছে, হাজার হাজার স্থানে পরিবর্তন, সংযোজন বা বিয়োজনের মাধ্যমে বিকৃতি সাধন করা হয়েছে। তাদের এ আবিষ্কার কুরআন কারীমের অলৌকিক সত্যতার আরেকটি প্রমাণ। ইহূদী-খৃস্টান পন্ডিতগণের গবেষণার আলোকে তাওরাত, যাবূর ও ইনজীল নামক গ্রন্থগুলির বা বর্তমানে ‘বাইবেল’ নামে পরিচিত গ্রন্থটির মধ্যে বিদ্যমান ব্যাপক বিকৃতি, পরিবর্তন, সংযোজন, বিয়োজন, অসঙ্গতি, পরস্পর বিরোধিতার অসংখ্য নমুনা, ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও প্রমাণাদি জানার জন্য আমি পাঠককে আল্লামা রাহমাতুল্লাহ কিরানবী (১৮৯১ খৃ) রচিত ‘ইযহারুল হক্ক’ নামক কালজয়ী গ্রন্থটি পাঠ করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করছি। মহান আল্লাহর তাওফীকে আমি পুস্তকটি অনুবাদ করেছি এবং ইসলামিক ফাইন্ডেশন বাংলাদেশ তা প্রকাশ করেছে।
[2] সূরা (২) বাকারা: ১৩৬ আয়াত। আরো দেখুন: সূরা (৩) আল ইমরান: ৮৪ আয়াত।
[3] সূরা (৮৭) আ’লা: ১৮-১৯ আয়াত। আরো দেখুন: সূরা (৫৩) নাজম: ৩৬-৩৭।
[4] সূরা (৬) আন‘আম: ১৫৪ আয়াত।
[5] সূরা (৫) মায়িদা: ৪৪ আয়াত। তাওরাত বিষয়ে আরো দেখুন: সূরা বাকারা : ৫৩, ৮৭; আল ইমরান: ৩, ৪৮, ৬৫, ৯৩; নিসা: ১৫৩; মায়িদা: ৪৩, ৬৮, ১১০; আন’আম: ৯১, ১৫৪; আ’রাফ: ১৫৪, ১৫৭; তাওবা ১১১; হুদ: ১৭, ১১০; সূরা বনী ইসরাঈল: ২; আম্বিয়া: ৪৮; মুমিনুন: ৪৯; কাসাস: ৪৩; সাজদা: ২৩; গাফির/মুমিন: ৫৩; ফুস্সিলাত: ৪৫; আহকাফ: ১২; ফা্তহ: ২৯; সাফ্ফ: ৬; জুম’আ: ৫ আয়াত।
[6] সূরা (১৭) ইসরা/ বনী ইসরাঈল: ৫৫ আয়াত। আরো দেখুন: সূরা নিসা: ১৬৩ আয়াত।
[7] সূরা (৫) মায়িদা: ৪৬ আয়াত। আরো দেখুন: সূরা আল-ইমরান ৩, ৪৮, ৬৫; মায়িদা: ৬৬, ৪৭, ৬৬, ৬৮, ১১০; আ’রাফ: ১৫৭; তাওবা: ১১১; ফাতহ: ২৯; হাদীদ: ২৭ আয়াত।
[8] সূরা (২) বাকারা ৭৫ আয়াত।
[9] সূরা (২) বাকারা ৭৯ আয়াত।
[10] সূরা (৫) মায়িদা: ১৩ আয়াত। আরো দেখুন: সূরা মায়িদা ৪১ আয়াত।
[11] সূরা (৫) মায়িদা: ১৪-১৫ আয়াত।
[12] সূরা (৩) আল-ইমরান ৭৮-৭৯ আয়াত।
[13] সূরা (২) বাকারা: ১১৩ আয়াত।
[14] সূরা (৫) মায়িদা: ৪৩ আয়াত।
[15] সূরা (৩) আল-ইমরান: ৯৩ আয়াত।
[16] সূরা (৫) মায়িদা: ৬৮ আয়াত।
[17] সূরা (৫) মায়িদা: ৪৭ আয়াত।
[18] সূরা (৫) মায়েদা: ৪৮ আয়াত ।
[19] সূরা (২) বাকারা: ১৩৬ আয়াত। আরো দেখুন: সূরা (৩) আল ইমরান: ৮৪ আয়াত।
[20] বুখারী, আস-সহীহ ৪/১৬৩০।